নির্বাচনের হালচাল

রাত ফুরালেই শুরু হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। রোববার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কোনো ধরনের বিরতি ছাড়াই সারাদেশে একযোগে চলবে ভোটগ্রহণ। এরইমধ্যে নির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রতিটি জেলার কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে ভোটের সামগ্রী। নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে ব্যাপক তৎপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও।

নির্বাচনে প্রার্থীর সংখ্যা

এবার ৩০০ আসনের পরিবর্তে ২৯৯টি আসনে ভোটগ্রহণ চলবে। গাইবান্ধা-৩ আসনের ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর মৃত্যুজনিত কারণে ভোটগ্রহণ পিছিয়ে ২৭ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৯৯ আসনে ১ হাজার ৮৬১ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এরমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে ১ হাজার ৭৩৩ জন এবং অবশিষ্ট ১২৮ জন স্বতন্ত্র হিসেবে অংশ নিচ্ছেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে ইসিতে নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলের সবগুলো দলই অংশ নিয়েছে।

নির্বাচনে মোট ভোটার ও কেন্দ্র-কক্ষের সংখ্যা

একাদশ সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ কোটি ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৩৬৫ জন, মহিলা ভোটার ৫ কোটি ১৬ লাখ ৬৬ হাজার ৩১২ জন। নতুন প্রায় ১ কোটি ২৩ লাখ ভোটার প্রথমবারের মতো জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেবেন। নির্বাচনে মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৪০ হাজার ১৮৩ টি এবং ভোট কক্ষের সংখ্যা ২ লাখ ৭ হাজার হাজার ৩১২ টি।

যে সব আসনে ইভিএমে ভোট

প্রথমবারের মতো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৬টি সংসদীয় আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহার করে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। আসন ছয়টি হলো : ঢাকা-৬, ঢাকা-১৩, চট্টগ্রাম-৯, রংপুর-৩, খুলনা-২ এবং সাতক্ষীরা-২। এসব আসনে ৪৮ জন প্রার্থী নির্বাচন অংশ নিয়েছেন। আসনগুলোতে মোট ভোটার ২১ লাখ ২৪ হাজার ৫৪৪ জন। পুরুষ ভোটার ১০ লাখ ৮৫ হাজার ৫২জন, মহিলা ভোটার ১০ লাখ ৩৯ হাজার ৫০২ জন। এসব ভোটার ইলেকট্রোনিক ভোটিং মেশিনের মাধ্যমে (ইভিএম) ভোট দেবেন। আসনগুলোর ৮৪৫টি কেন্দ্রের ৫ হাজার ৩৮টি ভোট কক্ষে ইভিএম রয়েছে।

নির্বাচনে ৩৮৯টি উপজেলায় ৪১৪ প্লাটুন সেনাবাহিনী থাকবে। ১৮টি উপজেলায় থাকবে নৌবাহিনীর ৪২ প্লাটুন। ১২ উপজেলায় থাকবে কোস্টগার্ড। বিজিবি থাকবে ৯৮৩ প্লাটুন এবং র‌্যাব থাকবে ৬০০ প্লাটুন। এছাড়াও মোবাইল ও স্টাইকিং ফোর্স থাকবে র‌্যাবসহ আরো ২ হাজার প্লাটুন। প্রতিটি প্লাটুনে থাকবে ৩০ জন।

ভোটে কর্মকর্তার সংখ্যা

নির্বাচনে ঢাকা ও চট্রগ্রামে দুইজন বিভাগীয় কমিশনারসহ ৬৬ জন রিটানিং করমকর্তা থাকবেন। নির্বাচনে এক্সকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট থাকছে ১ হাজার ৩২৮ জন। এর মধ্যে আচরণবিধি প্রতিপালনের জন্য ৬৫২ জন এবং বাকি ৬৭৬ জন থাকবে অইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মোবাইল ও স্টাইকিং ফোর্সের সঙ্গে নিয়োজিত।

এছাড়াও নির্বাচনে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে ৬৪০ জন। ইলেকট্রোরাল ইনকোয়ারি কমিটি রয়েছে ১২২টি (২৪৪ জন)। প্রিজাইডিং অফিসার ৪০ হাজার ১৮৩ জন। সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ২ লাখ ৭ হাজার ৩১২ জন। প্রোলিং অফিসার থাকছে ৪ লাখ ১৪ হাজার ৬২৪ জন।

ভোটে পর্যবেক্ষক (দেশি-বিদেশি)

এবারের সংসদ নির্বাচনে ৮১টি দেশি প্রতিষ্ঠানের ২৫ হাজার ৯০০ জন পর্যবেক্ষক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছন।

অন্যদিকে, বিদেশি ১০২ জন পর্যবেক্ষক নির্বাচন পর্যেবক্ষণ করবেন। এর মধ্যে ওআইসি, ফেম্ভোসা, এএইএ এবং কমনওেয়লথ থেকে ৩৮ জন পর্যবেক্ষক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। বিদেশি কূটনৈতিক ও বিদেশি মিশনের কর্মকর্তা রয়েছেন ৬৪ জন।

অন্যদিকে, বাংলাদেশ দূতাবাস/হাইকমিশন এবং বিদেশি সংস্থায় কর্মরত আরো ৬১ জন প্রতিনিধি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। ফলে এবার সংসদ নির্বাচন দেশি-বিদেশি মোট ২৬ হাজার ৬৩ জন পর্যবেক্ষণ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন।

নিউজওয়ান২৪/জেডএস