ঢাকা, ১৯ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ:

অনিরুদ্ধ অপহৃত নাকি আত্মগোপনে!

নিউজওয়ান ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:০৫, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭  

আরআরএম লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশে বেলারুশের অনারারি কনসাল অনিরুদ্ধ কুমার রায় গত ২৭ আগস্ট (রবিবার) নিখোঁজ হন। গুলশান-১ থেকে তিনি যখন নিজের গাড়িতে উঠছিলেন তখন তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠে পরিবারের পক্ষ থেকে। পরে তিনি নিখোঁজ হয়েছেন দাবি করে তার ভাগনে কল্লোল রায় গুলশান থানায় একটি জিডি করেন (জিডি নাম্বার-১৭৭৩)।

এ ঘটনা ব্যাপক চাঞ্চল্য ও রহস্যের সৃষ্টি করেছে। একদিকে যখন বলাবলি হচ্ছে তাকে অপহরণ করা হয়েছে, অপরপক্ষে কেউ কেউ ধারণা করছে- তিনি নিজেই আত্মগোপনে রয়েছেন কোনো কারণে।

তার অন্তর্ধান বিষয়ে পারিবারিক সূত্র প্রথমে জানায়, ঘটনার দিন বিকেল ৪টার দিকে গুলশান এক নম্বর এলাকা থেকে একটি গোয়েন্দা সংস্থার পরিচয়ধারী লোকজন তাকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়।

পরে আরএমএম গ্রুপের কর্মকর্তা এডিসন বলেন, ঘটনার সময়ে গুলশানের ইউনিয়ন ব্যাংকের সিঁড়িতে একদল যুবক তাকে ঘিরে ধরে। এসময় অপহরণকারীদের একজন অনিরুদ্ধ রায়কে বলেন, ‘আমাদের বস আপনার সাথে কথা বলবেন, জরুরি। চলুন।’ তারা নিজেদের একটি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য বলে পরিচয় দেয়।

এরপর তাদের সাথে অনিরুদ্ধ নিচে নামলে তার গাড়িচালক অপহরণকারীদের কাছে জানতে চান, তারা কারা এবং স্যারকে (অনিরুদ্ধ কুমার রায়) কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে? এর জবাবে অপহরণকারীরা ওই গাড়ীচালককে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে অনিরুদ্ধকে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে চলে যায়।

এ প্রসঙ্গে গুলশান থানার ওসি আবু বক্কর জানান, ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। ড্রাইভারের কাছ থেকেও তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। ডিবি পুলিশও বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।

এমনি আবহে গত বুধবার অনিরুদ্ধের পারিবারিক সূত্র পরিচয় গোপন রাখার শর্তে সংবাদ মাধ্যমকে জানান, গত ১১ সেপ্টেম্বর তারিখে অনিরুদ্ধ কুমার রায় কোনো অজ্ঞাত স্থান থেকে পরিবারের সদস্যদের ফোন করেন। ফোনে তিনি জানান, তাকে অপহরন করা হয়নি, তিনি কোনো একটি বিশেষ প্রয়োজনে স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে আছেন এবং তিনি নিরাপদে আছেন।

এছাড়া তিনি তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টস অফিসার অনির্বাণ, কানাডায় অবস্থানরত তার ভাই অচিন্ত্য কুমার রায়, হংকংয়ে তার ব্যবসায়িক পার্টনার ক্যারোলিন, তার স্ত্রী এবং মাকে ফোন করেন এবং বিভিন্ন দাপ্তরিক নির্দেশনা দেন। এমনকি তার প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বেতনের চেক সাইন করেও তিনি পাঠান। তার ফোনের পরপরই তার অ্যাকাউন্টস অফিসার অনির্বাণ এবং তার স্ত্রী বাংলামোটরে কনকর্ড টাওয়ারে অবস্থিত তার অফিসে আসেন এবং তার নির্দেশনা অনুযায়ী দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন করেন।

একই সময়ে হংকংয়ের প্রতিষ্ঠানে তার ব্যবসায়িক পার্টনার ক্যারোলিন তার নির্দেশনা অনুযায়ী সেখানকারও প্রয়োজনীয় দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন করেন।

একটি সূত্র জানায়, বেশ কিছুদিন থেকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পার্টনারদের সাথে তার ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব চলছিল। আরএমএম গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ভাগাভাগি নিয়ে পার্টনারদের দ্বন্দ্ব বিভিন্ন সময়েই প্রকাশ্যে চলে আসছিল। তিনি নিখোঁজ হওয়ার পর প্রাথমিকভাবে তিনি অপহৃত হয়েছেন বলে পরিবারের সদস্যরা ধারণা করলেও এখন তারা অনিরুদ্ধের ব্যাপারে অনেকটাই নিশ্চিন্ত বলে জানা যায়। তারা ধারণা করছেন, কোনো একটি বিশেষ ব্যবসায়িক কারণে তিনি এখন স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে আছেন।

আরও বিস্তারিত জানার জন্য ওসি`র সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

আরও পড়ুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত