ঢাকা, ১৯ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ:

পিলখানা হত্যাকাণ্ড: বিজিবির সব ইউনিট শাহাদাত বার্ষিকী পালন করবে

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৯:০৪, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬   আপডেট: ১১:৫৩, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

ঢাকা: ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তর, পিলখানায় সংঘটিত বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডে শহীদদের স্মরণে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬) শাহাদাত বার্ষিকী পালন করবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

এ প্রসঙ্গে বিজিবি সদর দফতর থেকে পাঠানো সিংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দিনের কর্মসূচি অনুযায়ী শহীদদের রুহের মাগফিরাতের উদ্দেশ্যে পিলখানাসহ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সকল রিজিয়ন, সেক্টর, প্রতিষ্ঠান ও ইউনিটের ব্যবস্থাপনায় বাদ ফজর খতমে কোরআন এবং বিজিবির সকল মসজিদে এবং বিওপি পর্যায়ে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে।

বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহসিন রেজা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সকাল ০৯টায় বনানী সামরিক কবরস্থানে মহামান্য রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি, মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধানগণ (সম্মিলিতভাবে), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং বিজিবি মহাপরিচালক (একত্রে) শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ (শুক্রবার) বাদ আসর বিকাল পৌনে পাঁচটায় পিলখানাস্থ বীর উত্তম ফজলুর রহমান খন্দকার মিলনায়তনে শহীদ ব্যক্তিবর্গের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। ওই দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, বিজিবি মহাপরিচালক, শহীদ ব্যক্তিবর্গের নিকটাত্মীয়গণ, পিলখানায় কর্মরত সকল অফিসার, জেসিও, অন্যান্য পদবীর সৈনিক এবং বেসামরিক কর্মচারীগণ অংশগ্রহণ করবেন।

সেই ভয়াবহ ঘটনা
২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদরদপ্তরে সংঘটিত হয় বর্বরোচিত এক হত্যাযজ্ঞ। সেদিন শহীদ হন বাংলাদেশের ৫৭ জন চৌকস সেনা কর্মকর্তা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধেও এত অধি সংখ্যক সেনা কর্মকর্তা মারা যাননি। কিছু দুর্ঘটনাসহ হানাদার পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধে মোট ৫৫ জন সেনা অফিসার শহীদ হয়েছেন।

২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯ টা ২৭ মিনিটে শুরু হয় সেই কালো অধ্যায়ের। ওই দিন পিলখানার দরবার হলে চলমান বার্ষিক দরবারে একদল বিদ্রোহী বিডিআর সৈনিক ঢুকে পড়ে। এদের মধ্যে একজন বিডিআর মহাপরিচালকের বুকে অস্ত্র তাক করে। এরপরই শুরু হয়ে যায় ইতিহাসের সেই নৃশংস ঘটনা। বিদ্রোহী  সৈনিকরা কর্মকর্তাদের ওপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা শুধু সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, তাদের পরিবারকে জিম্মি করে রাখে। পুরো পিলখানায় তখন এক ভীতিকর বীভৎস পরিবেশের সৃষ্টি হয়। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়ও।

এসময় বিদ্রোহীরা পিলখানার চারটি প্রবেশ গেট নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আশে-পাশের এলাকায় বেপরোয়া গুলি ছুড়তে থাকে। তাদের গুলিতে একে একে লুটিয়ে পড়েন ৫৭জন মেধাবী সেনা কর্মকর্তাসহ অন্যরা।  ঘটনার ৩৬ ঘণ্টা পর এ বিদ্রোহের অবসান হয়। পিলখানা পরিণত হয় যেন এক বধ্যভূমিতে।

৩৬ ঘণ্টার সেই হত্যাযজ্ঞে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা, একজন সৈনিক, দুজন সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী, ৯ জন বিডিআর সদস্য ও পাঁচজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হন।

বিদ্রোহীদের এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ আর চরম বিশৃঙ্খল কর্মকাণ্ডে পুরো বিডিআরের সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে পড়ে। তাই বিদ্রোহ দমনের পর শুরু হয় বিডিআর পুনর্গঠনের কাজ। বিডিআরের নাম, পোশাক, লোগো, সাংগঠনিক কাঠামো, পদোন্নতিসহ সশ্লিষ্ট অন্যন্য বিষয় ও কাঠামো পুনর্গঠন করা হয়। বিডআরের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পরিবর্তন করা হয় বিডিআরের বিদ্রোহ সশ্লিষ্ট আইনও। বর্ডার গার্ড আইনে বিদ্রোহের সর্বোচ্চ সাজা রাখা হয় মৃত্যুদণ্ড।

নিউজওয়ান২৪.কম/এলসি

আরও পড়ুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত