‘সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলে উন্নয়নও অব্যাহত থাকবে’

সরকারের ধারাবাহিকতা ঠিক থাকলে দেশের সার্বিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড এগিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) সম্প্রসারণ (১ম সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন ভবনের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যে কাজগুলো শুরু করেছি, সেগুলো যেন সমাপ্ত করতে পারি। নইলে ওই কমিউনিটি ক্লিনিকের মতো আবার সবকিছু বন্ধ করে রেখে ওরা। সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলে উন্নয়নের গতিও অব্যাহত থাকবে। দেশের মানুষ সেবা পাবে।

সরকারের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে আবারো নৌকা মার্কায় ভোট দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন এবং মানুষের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাইবেন।

নিটোর প্রকল্পের আওতায় উদ্বোধনকৃত ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের প্রকল্পগুলোর কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কিছু কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলাম। যার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এ সরকারের কাজ দেখে আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ নিশ্চয়ই নৌকায় ভোট দেবে। আবার এসে আপনাদের যে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি, সেগুলো উদ্বোধন করে দিয়ে যাব ইনশাল্লাহ।

‘আমি কিন্তু সেই নিউরো, কিডনি, আই ইনস্টিটিউট থেকে শুরু করে অনেকগুলো প্রথমবার শুরুও করে গিয়েছিলাম, যা বন্ধ হয়ে ছিল। দ্বিতীয়বারে এসে প্রায় আটবছর পর সেগুলো সম্পন্ন করতে হয়েছে আমাদের। আর যেন বাংলার জনগণের ওই রকম দুভার্গ্যবরণ করতে না হয়। সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলে উন্নয়নের গতি অব্যাহত থাকবেই।

তাছাড়া দেশের প্রতিটি বড় জেলাগুলোতে মেডিকেল কলেজসহ হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবার গুণগতমান বৃদ্ধিতে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

চিকিৎসা সেবাটাকে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন করতে হবে উল্লেখ করে চিকিৎসা সেবার যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ট্যাক্স কমিয়ে দেয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা ট্যাক্স কমিয়ে দিয়েছিলাম বলেই আজকে বাংলাদেশে অনেক বড় বড় হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। মানুষ সেবা পাচ্ছে। কাজেই সেবা দেয়াটাই আমাদের কর্তব্য। মানুষকে একটু সুন্দর ও উন্নত চিকিৎসাসেবা দেবো। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উন্নীত হয়েছি। এটাকে ধরে রেখে ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করব। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। সেই সময় ক্ষুধামুক্ত ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ হবে। আর ২০৪১ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ উন্নতদেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। আর ডেলটা প্ল্যান-২১০০ অনুযায়ী বাংলাদেশ হবে জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলা।

‘যে প্রতিষ্ঠানটি করে দিয়ে গেলাম সবাই একটু যত্ন নেবেন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন যেন থাকে।’ সে জন্য সবাইকে নজর দেয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি হাসপাতালে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে আরো উন্নত করতে হবে। সে ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একযোগে বেশকিছু প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন শেষে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে এক আলোচনা সভায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। এতে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

প্রকল্পের আওতায় উদ্ধোধনকৃত ভবনগুলো হলো, মিরপুরে ঢাকা ডেন্টাল কলেজের ২৪৮ আসন বিশিষ্টি ছাত্রী হোস্টেল (১০ তলা ভিত বিশিষ্ট ৯ তলা ভবন); মহাখালীতে ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি’র সম্প্রসারিত (৯ তলা ভিত বিশিষ্ট) তিন তলা ভবন উদ্বোধন করেন। এছাড়াও এক্সপানশন অব ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সস অ্যান্ড হসপিটাল; স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রধান কার্যালয় মহাখালী, ঢাকা’র ৩য় পর্যায়ের উন্নয়নমূলক কাজ (৬-১৫ তলা নির্মাণ) ও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের উত্তর ও দক্ষিণ ব্লকের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কার্যক্রমের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিউজওয়ান২৪/এমএস