ঢাকা, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

ক্যাসিনো খালেদ, ২ ভাই ও ৬ সহযোগীর নামে চার্জশিট দাখিল

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২০:১৭, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

খালেদ মাহমুদ ভূইয়া ওরফে ক্যাসিনো খালেদ                     -ফাইল ফটো

খালেদ মাহমুদ ভূইয়া ওরফে ক্যাসিনো খালেদ -ফাইল ফটো

ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের বহিস্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূইয়া ওরফে ক্যাসিনো খালেদেসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অর্থপাচার মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেছে সিআইডি। আজ (রবিবার) পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এই চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন।

অভিযোগপত্রে খালেদ মাহমুদ ওরফে ক্যাসিনো খালেদের দুই ভাই মাসুদ মাহমুদ ভূইয়া ও হাসান মাহমুদ ভূইয়া এবং খালেদের সহযোগী হারুন অর রশিদ, শাহাদৎ হোসেন ও মোহাম্মদ উল্লাহ খানকে আসামি করা হয়েছে। 

গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বর পরিচালিত অবৈধ জুয়া ও ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার হয় খালেদ। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক, মানি লন্ডারিং ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের বেশ কয়েকটি মামলা হয়। মানি লন্ডারিংয়ের মামলা তদন্ত করতে গিয়ে প্রায় চার শ কোটি টাকারও বেশি অর্থ বিদেশে পাচারের তথ্য পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে। দীর্ঘ তদন্ত শেষে আজ চার্জিশিট দাখিল করা হয় খালেদসহ অভিযুক্ত ৬ জনের বিরুদ্ধে।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, অবৈধ অস্ত্র, মাদক, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, অবৈধ জুয়া তথা ক্যাসিনো তার আয়ের প্রধান উৎস। অবৈধ উৎস থেকে আসা অর্থ অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করেছেন খালেদ, তার ভাই মাসুদ ও হাসান। তাদের সহযোগিতা করেছেন হারুন, শাহাদৎ ও মোহাম্মদ উল্লাহ।

এতে আরও বলা হয়েছে, খালেদের পাসপোর্ট ও ভ্রমণ বৃত্তান্ত পর্যালোচনায় দেখা গেছে, পাসপোর্টে কোনো প্রকার মুদ্রা এনডোর্সমেন্ট ছাড়াই তিনি বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। বিদেশে যাওয়ার সময় তিনি নগদ মুদ্রা সঙ্গে করে নিয়ে তা পাচার করেছেন। তার পাসপোর্টে মালয়েশিয়ার যে ভিসা দেখা যায়, তাতে ‘এমওয়াইএস মাই টু হোম’ উল্লেখ রয়েছে যা মূলত ‘সেকেন্ড হোম ভিসা’ নামে পরিচিত। এই ভিসা গ্রহণের শর্ত পূরণ করতে মালয়েশিয়ার আরএইচবি ব্যাংকে তিন লাখ রিঙ্গিত এফডিআর করা আছে। বেআইনিভাবে এই তিন লাখ রিঙ্গিত (এক রিঙ্গিতে ২০.৫০ টাকা) সেখানে নেওয়া হয়েছে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, সিঙ্গাপুর সিটির জুরং ইস্ট এলাকায় মেসার্স অর্পন ট্রেডার্স  পিটিই লিমিটেড নামে খালেদের একটি কোম্পানি আছে যার মূলধনও বেআইনিভাবে হুন্ডির মাধ্যমে সিঙ্গাপুরে পাচার করেছেন তিনি। খালেদ ও তার কম্পানির নামে ব্যাংক হিসাব থাকার প্রমাণ হিসেবে বিদেশি ব্যাংকের (ইউওবি) ডেবিট কার্ডও জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া তার নামে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্টে ২০ লাখ টাকার সমপরিমাণ থাই বাথ জমা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। একই ব্যাংকের আরও দুটি ডেবিট কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। 

সহযোগী আসামি মোহাম্মদ উল্লাহ ক্যাসিনো খালেদের  নির্দেশে বিদেশি মুদ্রা ক্রয় করেন বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে। তিনি আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে তা স্বীকার করে নেন। 

অভিযোগপত্র থেকে আরও জানা যায়, আসামি মোহাম্মদ উল্লাহ ২০১২ সাল থেকে আসামি খালেদের মালিকানাধীন ভূঁইয়া অ্যান্ড ভূঁইয়া ডেভেলপার লিমিটেড, মেসার্স অর্পণ প্রপার্টিজ ও অর্ক বিল্ডার্স নামে তিনটি ফার্মের জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি খালেদের নির্দেশে তার অপরাধলব্ধ আয় গ্রহণ করে খালেদের ভাই মাসুদের সঙ্গে গিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক যেমন এনসিসি ব্যাংকের মতিঝিল শাখা এবং ব্রাক ব্যাংকের মালিবাগ শাখায় জমা করতেন।

তদন্তে অন্য আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে আসামি খালেদের সকল অপরাধ কার্যের প্রত্যক্ষ সহযোগী ছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ হওয়ায় সকলের বিরুদ্ধে অবিযোগপ্রত দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে সিআইডি।

নিউজওয়ান২৪/আরকে 

আরও পড়ুন
আইন আদালত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত