ঢাকা, ০৮ মে, ২০২৪
সর্বশেষ:

শোষণকারী দেশকে ভালোবাসতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৩:৫৮, ১৪ অক্টোবর ২০১৮  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

যারা গরীবের রক্ত চুষে খায়, গরীবকে শোষণ করে, গরীবের কাছ থেকে সুদ খেয়ে বড় হয়, তারা কখনো দেশকে ভালোবাসতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনের সময়ে এক ভাষণে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে ইঙ্গিত করে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ড. ইউনুসের প্ররোচণায় পদ্মা সেতু প্রকল্পের টাকা বন্ধ করে দেয় বিশ্ব ব্যাংক। পদ্মা সেতু প্রকল্প বন্ধ করে দিতে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়। অনেকেরই ধারণা ছিল বিশ্বব্যাংক ছাড়া পদ্মা সেতু হবে না। বিএনপি-জামায়াত জোট এ প্রকল্প বন্ধ করতে চেয়েছিল। পদ্মা সেতুর আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হয়েছে বাংলাদেশের হাতে গোনা কিছু মানুষ।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাই বাংলাদেশের মানুষের কাছে। প্রবাসীরাও সবাই আমাকে আশ্বাস দিয়েছে। বাংলার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করি। তিনি বলেন, আমরা আজ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করেছি। পদ্মা সেতু নিয়ে আমার সরকার ও পরিবারের নামে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। পদ্মা সেতুর জন্য আমাদেরকে জাতীয়-আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে অপমানিত হতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭ই মার্চের ভাষণে জাতির পিতা বলেছিলেন- কেউ দাবায় রাখতে পারবা না। বাঙালিকে কেউ দাবায় রাখতে পারে না।

শেখ হাসিনা বলেন, বহুমুখী পদ্মা সেতু ৭৫০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে। এ সেতুর কাজ করা অনেক কঠিন। পদ্মা খরস্রোতা নদী হওয়ায় সেতু নির্মাণ অনেক কঠিন ছিল। এরইমধ্যে ৬০ ভাগ কাজ শেষে হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, যারা জমি দিয়েছেন তাদের জন্য আমরা প্লট দিয়েছি, তাদের জন্য বাড়তি অর্থ বরাদ্দ দিয়েছি। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। তারা এ সেতুর জন্য ভিটে বাড়িও ছেড়ে দিয়েছেন।

দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে ২০০১ সালের ১২ জুলাই মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের কুমারভোগ এলাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২০১৩ সালের ৪ মে নিজ অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। ১২ ডিসেম্বর ২০১৫ সালে মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতুর বাস্তবায়নের মূল পাইলিং কাজের উদ্বোধন করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, সাহসের সঙ্গে সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে কোটি মানুষের প্রাণের দাবি পূরণ করতে চলেছি। সব চক্রান্ত রুখে দিয়ে বিশ্বের কাছে আমরা প্রমাণ করেছি, আমরাও পারি। কারণ বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। যা আজ প্রমাণিত।

তিনি আরও বলেন, পদ্মা বহুমুখী সেতুর কাজ সন্তোষজনকভাবে এগিয়ে চলছে। পদ্মা সেতু দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের সুবিধা তৈরি করা ছাড়াও তাদের ব্যবসা বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটাবে। পদ্মা সেতু উন্নত করবে এসব এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা।

শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মাসেতু প্রকল্প দেশের সর্ববৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্প। সেতুটির নির্মাণ কাজ টেকনিক্যাল, সময়সাপেক্ষ ও চ্যালেঞ্জিং। গুণগতমান শতভাগ ঠিক রাখার স্বার্থে আমাদের ধৈর্য্য ও সতর্কতার সঙ্গে এর সফল বাস্তবায়নে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

এ রুটে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ব্রডগেজ মালবাহী ও কন্টেইনার ট্রেন চলবে। এটি বাংলাদেশের মধ্যে ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আরেকটি উপ-রুট হবে। ভবিষ্যতে এ রুটে দ্বিতীয় লাইন নির্মাণ এবং বরিশাল ও পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরকে এই রুটের সঙ্গে সংযুক্তকরণের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ২৩ কিলোমিটার এলিভেটেড ভায়াডাক্টে ব্যালাস্টবিহীন রেললাইন নির্মাণ প্রবর্তন করা হচ্ছে, যা একটি নতুন প্রযুক্তি। এলিভেটেড ভায়াডাক্টের ওপর ২টি প্ল্যাটফর্ম, ১টি মেইনলাইন ও ২টি লুপ লাইনসহ রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণ ও তাতে লিফট স্থাপন করা হবে।

প্রায় ১১ মিটার উঁচু রেললাইনের নিচ দিয়ে সড়কের জন্য আন্ডারপাস নির্মাণের মাধ্যমে উভয় পথে নিরবচ্ছিন্ন ও নিরাপদ ট্রেন এবং গাড়ি চলাচল নিশ্চিত করা হবে।

নিউজওয়ান২৪/এমএস

আরও পড়ুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত