ঢাকা, ২৪ জুন, ২০২৫
সর্বশেষ:

বিএনপিকে দর্শক বানিয়ে শপথ নিচ্ছে গণফোরাম!

প্রকাশিত: ১৭:৩৫, ৫ জানুয়ারি ২০১৯  

ঐক্যফ্রন্টের ভরাডুবিতেও টিকে যাওয়া গণফোরামের দুই বিজয়ী এমপি প্রার্থী সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিচ্ছেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। 

এমন অবস্থায় অনেকেই বলছেন- ঐক্যফ্রন্টের ছাতার তলে বিএনপির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে নির্বাচন করেও শেষতক জোটের প্রধান দলটিকে দর্শক বানিয়ে গণফোরাম ঠিকই সংসদে যাচ্ছে তাহলে! 

আজ (শনিবার) বিকালে দলের বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গণফোরামের কর্ণধার কামাল জানান, তারা বিষয়টি ‘ইতিবাচক’ দৃষ্টিতে দেখছেন এবং ‘ইতিবাচক’ সিদ্ধান্ত নেবেন।

প্রসঙ্গত, সদ্য অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে পুনর্নির্বাচনের দাবি তুলেছিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এমন অবস্থায় এই জোট থেকে বিজয়ী গণফোরামের দুই এমপির শপথ নেওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দেয়।

গত ৩ জুন (বৃহস্পতিবার) আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টিসহ মহাজোটীয় রাজনৈতিক মিত্রদের সবাই সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন। তবে সেদিন উপস্থিত ছিলেন না ঐক্যফ্রন্ট থেকে ভোটে বিজয়ী বিএনপির পাঁচ এবং গণফোরামের দুজন নির্বাচিত এমপি।

সেদিন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরাসরি বলে দিয়েছিলেন, শপথ তো পার হয়ে গেছে, প্রত্যাখ্যান করলে শপথ থাকে নাকি আর?... আমরা শপথ নিচ্ছি না, পরিষ্কার করে বললাম।

তবে মির্জা ফখরুলসহ সমমনা অন্যদের হতাশ করে তার দুদিন পর আজ (শনিবার) গণফোরামের বৈঠকের পর তোপখানা রোডের শিশুকল্যাণ পরিষদের মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসে ভিন্ন কথা শোনালেন দলের সভাপতি কামাল।

গণফোরাম থেকে নির্বাচিত দুজন শপথ নিচ্ছেন কি না- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমরা ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করছি।

তিনি বলেন, দুজন প্রার্থী নির্বাচনে তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। আমরা তাদের বিষয়ে ইতিবাচকভাবে সিদ্ধান্ত নেব।

গণফোরাম থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মৌলভীবাজার-২ আসনে জয়ী হয়েছেন সাবেক ডাকসু ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর।

আর সিলেট-২ আসনে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী হিসেবে জয়ী গণফোরামের মুকাব্বির খান দলীয় প্রতীক উদীয়মান সূর্য নিয়ে ভোট করেন।

এদিকে, বিএনপি যেহেতু শপথ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আবার একইসঙ্গে তাদের প্রতী ধানের শীষে ভোটে জিতে গণফোরাম সদস্য শপথ নিলে তা দুই দলের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি করবে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কামাল বলেন, আমার মনে হয় না।

এক সময়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ সারির নেতা ও গণফোরাম সভাপতি কামাল এবার বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ে ভোটের লড়াইয়ে যোগ দেন। তবে তিনি কোনো আসনে প্রার্থী হননি। 

প্রথম থেকেই থেকে বিভিন্ন বিষয়ে তাদের গণফোরাম ও বিএনপির মদ্যে মতভিন্নতা দেখা দিতে থাকে যা ছিল প্রকাশ্য।

তবে ভোটের পর দুই নেতা একসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে এসে পুনর্নির্বাচনের দাবি তোলেন এবং গত বৃহস্পতিবার জোটের নেতারা একসঙ্গে ইসিতে গিয়ে স্মারকলিপিও দিয়েছিলেন।

কিন্তু মাত্র দুই দিনের মাথায় শপথ নেওয়া নিয়ে তাদের দুই পক্ষের পথ যেন দুদিকে বেঁকে গেল।

প্রসঙ্গত, জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি এবারই সবচেয়ে কম আসনে জয়ী হয়েছে। ৩০০ আসনের মধ্যে তাদের আসন মাত্র ৫টি। অপরদিকে, দুই যুগ আগে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে গণফোরাম গঠনের পর এবারই সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও দেশের সংবিধান প্রণেতাদের অন্যতম ড. কামালের দলটি থেকে কেউ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেন।
 

আরও পড়ুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত