ঢাকা, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

বাংলাদেশের ১৮০০ আমলাকে প্রশিক্ষণ দেবে ভারত

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:৫২, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের ১৮০০ আমলাকে (সিভিল সার্ভেন্ট) তাদের ক্যারিয়ারের মাঝপথে প্রশিক্ষণ দেবে ভারত। 

শুক্রবার নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের পঞ্চম যৌথ পরামর্শ কমিশনের (জেসিসি) বৈঠকে এ-সংক্রান্ত একটিসহ চারটি সমঝোতাপত্র (মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং বা এমওইউ) স্বাক্ষর হয়। 

বাংলাদেশের পক্ষে সমঝোতায় স্বাক্ষর করেন দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী। আর ভারতের পক্ষে স্বাক্ষর করেন দিল্লিতে ন্যাশনাল সেন্টার অব গুড গভর্ন্যান্সের (এনসিজিজি) প্রশাসনিক প্রধান পুনম সিং।

এর আগে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ জেসিসি’র বৈঠকে নিজ নিজ দেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন।

পরে বাংলাদেশ ও ভারত যৌথ বিবৃতিতে সমঝোতাপত্রের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরে।

আমলাদের প্রশিক্ষণ বিষয়ে এতে বলা হয়, প্রথম দফায় বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ১৮০০ কর্মকর্তা, যারা তাদের ক্যারিয়ারের মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছেন, তারা প্রশিক্ষণ নিতে ভারতে যাবেন।

এই কর্মসূচির নাম দেয়া হয়েছে, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভেন্টদের জন্য ‘ট্রেনিং ও ক্যাপাসিটি বিল্ডিং (প্রশিক্ষণ ও সামর্থ্য নির্মাণ) প্রোগ্রাম’।

বাংলাদেশ থেকে সরকারি কর্মকর্তা এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা নানা ধরনের প্রশিক্ষণ বা কর্মশালার জন্য নিয়মিতই ভারতে আসতেন। তবে, এদিন সমঝোতাপত্র সইয়ের মাধ্যমে সেটি আনুষ্ঠানিক রূপ পেল।

ভারত সরকারের প্রশাসনিক সংস্কার মন্ত্রণালয়ের অধীনে এনসিজিজি একটি স্বশাসিত সংস্থা, যাদের নথিভুক্ত কার্যালয় হলো উত্তরাঞ্চলের শৈল শহর মুসৌরিতে। এখানে ভারতের ভাবি আমলাদের (ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস বা আইএএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ) প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।

বাংলাদেশ থেকে যে আমলারা প্রশিক্ষণ নিতে আসবেন, তাদের মুসৌরিসহ দেশের নানা প্রান্তে বিভিন্ন সরকারি কেন্দ্র ও প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।

এদিনের বৈঠকের পর বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিবিআই) মধ্যে একটি সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়।

এতেও বলা হয়, ‘দু’দেশের এই দুই প্রতিষ্ঠান নিজেদের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করবে।’

দুদক এবং সিবিআই কর্মকর্তারাও পারস্পরিক সফরে যাবেন। নানা ধরনের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা নির্মাণের কর্মসূচিতে অংশ নিবেন বলেও সমঝোতায় উল্লেখ করা হয়েছে।

ঔষুধি গাছপালা সংক্রান্ত বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ভারতের আয়ুষের মধ্যে একটি সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর হয়।

এ ছাড়া মোংলায় ভারতের অর্থনৈতিক জোনের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক জোন কর্তৃপক্ষ এবং ভারতের হিরানন্দি গ্রুপের মধ্যে আরেকটি সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর হয়।

জেসিসি বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারত তাদের অংশীদারিত্ব দৃঢ়করণে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটা দূরদর্শী রোডম্যাপ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। দু’দেশ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুত লোকদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে সম্মত হয়েছে।

যৌথ বিবৃতি অনুযায়ী, মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চল থেকে বাস্তুচ্যুত বিপুলসংখ্যক লোককে মানবিক সহায়তা দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করে সুষমা স্বরাজ মোমেনকে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত লোকদের নিরাপদ, দ্রুত ও টেকসই প্রত্যাবর্তনে ভারতের অব্যাহত সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

বৈঠককালে উভয়পক্ষ ২০১৭ সালের অক্টোবরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত জেসিসি’র সর্বশেষ বৈঠকের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরকালে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের বাস্তবায়নসহ চলমান সহযোগিতার বিষয়ে পর্যালোচনা করে।

দুই মন্ত্রী ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকালের কৌশলগত অংশীদারিত্ব পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং বর্তমানে এই সম্পর্কের ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, ভাষাগত গুরুত্ব এবং গণতন্ত্র ধর্ম নিরপেক্ষতা, উন্নয়ন অংশীদারিত্ব ও অন্যান্য অনেক বিষয়ে মিল থাকার কথা উল্লেখ করেন।

সূত্র: বাসস।

নিউজওয়ান২৪/আ.রাফি

আরও পড়ুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত