ঢাকা, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

ফজলে হাসান আবেদের প্রয়াণ, রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শোক

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:৩৯, ২১ ডিসেম্বর ২০১৯  

ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ                 -ফাইল ফটো

ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ -ফাইল ফটো

ঐতিহ্যবাহী ও দেশে-বিদেশে খ্যাত প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ এনজিও ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহিরাজিউন)। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) রাত ৮টা ২৮ মিনিটে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ব্রেন টিউমারের সমস্যায় ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। স্ত্রী, এক মেয়ে, এক ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন বাংলাদেশের পক্ষে একমাত্র নাইটহুড (স্যার) খেতাবজয়ী এই গুণী বাঙালি। 

(২২ ডিসেম্বর) রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ফজলে হাসানের মরদেহ ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টায় সেখানেই নামাজে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে  দাফন করা হবে তাকে।

১৯৩৬ সালের ২৭ এপ্রিল হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচংয়ে জন্মগ্রহণ করেন ফজলে হাসান আবেদ। তার পিতা ছিলেন একজন জমিদার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে এবং পরে ব্রিটেনের গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন তিনি।

সফল কর্মজীবনে বেশকিছু অভিজাত ও উচ্চ সম্মানজনক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি। এর মধ্যে সামাজিক উন্নয়নে অসামান্য ভূমিকার জন্য র‌্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার, জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থার মাহবুবুল হক পুরস্কার, গেটস ফাউন্ডেশনের বিশ্ব স্বাস্থ্য পুরস্কার এবং শিক্ষাক্ষেত্রের নোবেল হিসেবে খ্যাত ইয়াইদান পুরস্কার লাভ করেন তিনি। এছাড়া দারিদ্র্য বিমোচন এবং দরিদ্রের ক্ষমতায়নে বিশেষ ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ ব্রিটিশ সরকার তাকে ‘নাইট’ উপাধিতে ভূষিত করে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক
এদিকে, ব্র্যাক প্রতিষ্ঠাতার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ফজলে হাসান আবেদের অবদানের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নে তার অবদান জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোকবার্তায় বলেন, ১৯৭১ সালে ফজলে হাসান আবেদ ইংল্যান্ড হতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সমর্থন আদায়, তহবিল সংগ্রহ ও জনমত গঠন করেন। সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনেও তিনি কাজ করেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তার মতো মানবতাবাদী মানুষের মৃত্যুতে দেশ ও জাতির এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো।

ব্র্যাক-এর সূচনা
আমাদের গৌরবময় স্বাধীনতা যুদ্ধের পর সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জের শাল্লায় ধ্বংসস্তূপে মানবেতর জীবনযাপনরত লোকজনকে দেখতে যান ফজলে হাসান। সরেজমিনে সেখানে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে অসহায় মানুষজনের অবস্থা দেখে তিনি সিদ্ধান্ত নেন শাল্লায় উন্নয়নমূলক কাজ করবেন। এভাবেই স্বাধীন বাংলাদেশের দরিদ্র, অসহায়, সব হারানো মানুষজনের ত্রাণ ও পুনর্বাসনকল্পে শুরু করলেন ‘বাংলাদেশ রিহানিলিয়েশন অ্যাসিসট্যান্স কমিটি’ সংক্ষেপে যা ‘ব্র্যাক’ নামে পরিচিত। ১৯৭৩ সালে সাময়িক ত্রাণ কার্যক্রমের গণ্ডি পেরিয়ে ব্র্যাক যখন উন্নয়ন সংস্থা হিসেবে কর্মযজ্ঞ শুরু করে, তখন ‘BRAC’-এই শব্দ সংক্ষেপটির নয়া ব্যাখ্যা নির্ধারণ করা হয়। সে মোতাবেক ব্র্যাক শব্দটির পূর্ণ রূপ দেয় হয়- ‘বাংলাদেশ রুরাল অ্যাডভান্সমেন্ট কমিটি’। তবে এখন আর ব্র্যাককে বোঝাতে কোনো ব্যাখ্যামূলক শব্দসমষ্টির সমর্থন লাগে না। এই সংস্থা শুধুই ‘BRAC’ নামে এখন সর্বত্র পরিচিত, পরিচত স্যার ফজলে হাসান আবেদও।
নিউজওয়ান২৪.কম/এসএল

আরও পড়ুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত