‘প্রচারণায় ফেসবুক’, এনটিএমসি ও বিটিআরসির সঙ্গে বৈঠক বসবে ইসি
নিজস্ব প্রতিবেদক

ফাইল ছবি
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়া রাজনৈতিক দলগুলো মেতে উঠেছে ভয়ঙ্কর সাইবার যুদ্ধে। এক্ষেত্রে ইন্টারনেট ভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমকে ব্যাবহার করা হচ্ছে একটি বড় প্ল্যাটফর্ম হিসেবে। বিশেষ করে ফেসবুক এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে নির্বাচনী আচরণবিধির তোয়াক্কা করছে না কেউই। বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে নির্বাচন কমিশনকেও (ইসি)। তাই অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে সাইবার যুদ্ধের মাধ্যমে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এটিকে নিয়ন্ত্রণ করার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি।
এক্ষেত্রে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন সেন্টারের (এনটিএমসি) সহযোগিতা নেবে কমিশন। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) ও দেশে চলমান মোবাইল অপারেটরগুলোর (টেলিটক বাংলাদেশ, গ্রামীণ ফোন, বাংলালিংক, রবি ও এয়ারটেল) সহযোগিতাও নেয়া হবে বলে জানা গেছে।
সোমবার এসব প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে ইসির। নির্বাচন কমিশনের একজন মেনটেইনেন্স ইঞ্জিনিয়ার জানান, মোবাইল ফোনের এসএমএসে এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিধি ভেঙে আগাম প্রচার, বিদ্বেষ ও গুজব ছড়ানোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২৬ নভেম্বর বৈঠকে বসবে ইসি। আইন অনুযায়ী প্রতীক বরাদ্দের আগে ভোটের প্রচারের সুযোগ না থাকলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বিশেষ করে ফেইসবুককে নানাভাবে নির্বাচনী প্রচারে লাগানো হচ্ছে। এই বৈঠকে ঠেকানোর প্রক্রিয়া ও কৌশল নিয়ে আলোচনা হবে। ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এসব প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে এ বৈঠক করবেন বলে জানান তিনি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষক বি এম মইনুল হোসেন এ বিষয়ে বলেন, সাইবার যুদ্ধ বলতে তো আর প্রথাগত যুদ্ধ বোঝায় না। ইন্টারনেট ব্যবহার করে নিজেদের প্রচার-প্রচারণা ও প্রতিপক্ষের ভুল চিহ্নিত করাটাই এর উদ্দেশ্য।
তিনি বলেন, ফেসবুক এমন একটি মাধ্যম যার সাহায্যে কম সময়ে অনেক মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছে দেয়া যায়। তাই নির্বাচনকে সামনে রেখে ফেসবুকে রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা নিজেদের প্রচারণা জোরেশোরে শুরু করেছেন। কোন পোস্টে কয়টি লাইক পড়ছে, কতগুলো শেয়ার হচ্ছে- এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর মাধ্যমে একটি ইমপ্যাক্ট (প্রভাব) তৈরি হয়।
যে কারণে প্রার্থী কিংবা সমর্থকরা এটিকে বেছে নিয়েছে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে ‘সাইবার যুদ্ধ’ প্রথমবারের মতো ব্যাপক আকার ধারণ করে ২০১২ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে ঢাকার শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের সময়। ওই সময় আন্দোলনকারীরা যেভাবে অনলাইন ব্লগ ও সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় ছিলেন তেমনি ফেসবুকসহ ইন্টারনেট-ভিত্তিক বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যাপকভাবে সক্রিয় হয়ে উঠে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থকরা।
‘বাঁশের কেল্লা’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে বিচারের সমালোচনা করা হয় ক্রমাগত। এই ফেসবুক পেজটিকে জামায়াতে ইসলামীর মদদপুষ্ট বলে মনে করা হয়। এরপর থেকে ফেসবুকে নানা ধরণের গ্রুপ তৈরি করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকরা।
আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে এসব গ্রুপ থেকে নিজ দলের প্রার্থীদের পক্ষে যেমন প্রচারণা চালানো হচ্ছে তেমনি প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে বিষোদাগার করতেও দেখা যাচ্ছে অনেককে। নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচার-প্রচারণার সঙ্গে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নানা প্রচারণার বিষয়ও লক্ষণীয় এসব পেজে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মতো বড় রাজনৈতিক দলগুলোর ফেসবুক পেজের পাশাপাশি টুইটার ও ইউটিউবেও সক্রিয়।
এছাড়া তাদের কর্মী-সমর্থকরা ফেসবুকে অসংখ্য পেজ খুলেছেন, যা দলের প্রচার-প্রচারণার কাজ করছে। ‘বিএনপি সমর্থক গোষ্ঠী’, বিএনপি-দেশনায়ক তারেক রহমান’ কিংবা ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অনলাইন ফোরাম’ এ ধরনের বহু ফেসবুক পেজ দেখা যায়। বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের মতো বড় রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে নেতা-কর্মীদের ফেসবুকের মাধ্যমে নিজদের প্রচারণার পাশপাশি প্রতিপক্ষের ত্রুটি ও নিজেদের কর্মকাণ্ড তুলে ধরার নির্দেশনা রয়েছে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে তার প্রমাণ মিলেছে গত বেশ কয়েক বছর যাবত। ক্ষমতাসীন দল মনে করে তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ফেসবুকে অনেক সক্রিয় এবং সরকারবিরোধী নানা ‘অপপ্রচারে’ লিপ্ত। কিন্তু এর বিপরীতে আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকরা ফেসবুকে ততটা সোচ্চার নয় বলেই দলের শীর্ষ পর্যায়ে ধারণা রয়েছে।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সাইবার ব্রিগেড গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে। তারা বলছে, এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘গুজব ছড়ানো প্রতিহত’ করা। এছাড়া নির্বাচনের জন্য ‘সরকারের উন্নয়ন’ প্রচার করা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আসিফ নজরুলের মতে, নির্বাচনে অনলাইন-বিশেষ করে করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। বর্তমান সময়ে সারা পৃথিবীতে নির্বাচনী প্রচারণা ও খবর আদান-প্রদানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তার মতে, বাংলাদেশে বর্তমানে নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রতিবাদ করার জায়গা চরমভাবে সংকুচিত হওয়ার কারণে বিকল্প মাধ্যম হিসেবে মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে বেছে নিয়েছে।
নিউজওয়ান২৪/জেডএস
- ভাষা আন্দোলনের আদ্যেপান্ত
- মহান বিজয় দিবস আজ
- সেনা কল্যাণ সংস্থার শিক্ষামূলক বৃত্তির চেক পেল ২৯৩ শিক্ষার্থী
- বারবার ধর্ষন করা হয়েছে: সুকির দেশ থেকে পালিয়ে আসা নারীদের আর্তনাদ
- ‘বাড়াবাড়ি করছে, দিছি...সরাইয়া’
- পিলখানা হত্যাকাণ্ড: বিজিবির সব ইউনিট শাহাদাত বার্ষিকী পালন করবে
- ট্রেনের টিকিট কাটতে লাগবে এনআইডি নম্বর
- সেনাকল্যাণের ৪৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে দরবার অনুষ্ঠিত
- কুয়েতের সঙ্গে তিনটি নয়, চারটি চুক্তি স্বাক্ষর
- খালেদার আপিল শুনানির সময় ইসিতে যা ঘটেছে
- পাকিস্তানি স্কুলের মতে ‘পাঞ্জাবি অশ্লীল ভাষা’!
- আসল নকল থেকে সাবধান: ভয়াবহ বিপদ ঘটে যেতে পারে!
- অনিরুদ্ধ অপহৃত নাকি আত্মগোপনে!
- বাংলাদেশের রাজনৈতিক জরিপ ও সত্য-মিথ্যা
- ২১ ফেব্রুয়ারি
মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আজ