ঢাকা, ২৯ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ:

‘পদ্মাসেতু নির্মাণ করে বিশ্বকে আমরা দেখিয়ে দিয়েছি’

নিউজওয়ান প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩:৪৩, ১০ ডিসেম্বর ২০২০  

২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর হেলিকপ্টার থেকে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ দেখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগ্রহ

২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর হেলিকপ্টার থেকে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ দেখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগ্রহ

বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মাসেতুর সবশেষ বা ৪১তম স্প্যান বসানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১২টার শেষ স্প্যানটি বসানো হয়। এ নিয়ে সবার মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখে গেছে।

এদিন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, পদ্মাসেতুর সর্বশেষ স্প্যান বসানোর মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বকে দেখিয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন যেকোনো অসাধ্য সাধনের সক্ষমতা রাখে। দেশরত্ন শেখ হাসিনা আলোকবর্তিকা। তিনি সমগ্র বাংলাদেশকে আলো দিচ্ছেন। তার আলোয় বাংলাদেশ আজকে আলোকিত হয়ে গেছে। বাংলাদেশের পক্ষে এখন সব অসাধ্য সাধন সম্ভব।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ ও বিচক্ষণ নেতৃত্বে শত বাধা অতিক্রম করে পদ্মাসেতু আজ দৃশ্যমান। 

তবে সেতুটি এখনই উন্মুক্ত হচ্ছে না যানচলাচলের জন্য। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২২ সালে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে দেশের সর্ববৃহৎ হবে সেতুটি। 

এ বিষয়ে এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, পদ্মাসেতু এখন বাস্তব। নাও ইট ইজ ফিজিক্যালি কমপ্লিট। তিনি বলেন, আগামী ২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে পদ্মা সেতু চালু হবে।

২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর নামফলক উম্মোচনের করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ৭ মার্চের ভাষণে বলেছিলেন, কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না; এটিই আমরা প্রমাণ করেছি। পদ্মাসেতু নির্মাণ কাজ শুরু করে আমরা দেখিয়ে দিয়েছি আমরা পারি। আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।

পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালে। আর ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বসানো হয়েছিল প্রথম স্প্যানটি। সেতুর মোট পিলার ৪২টি এবং এতে স্প্যান বসানো হয় ৪১টি।

ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে পদ্মা সেতু। সেতুর ওপরের অংশে যানবাহন ও নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। প্রকল্পের সর্বমোট বাজেট ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা।

মূল সেতুর দুই হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে এক হাজার ২৮৫টি এবং দুই হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে এক হাজার ৯৩০টি স্থাপন করা হয়েছে। মাওয়া ও জাজিরা ভায়াডাক্টে ৪৮৪টি সুপার-টি গার্ডারের মধ্যে ৩১০টি স্থাপন করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গত ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত মূল সেতুর বাস্তব কাজের অগ্রগতি ৯১ ভাগ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৮৮ দশমিক ৩৮ ভাগ। মূল সেতু কাজের চুক্তিমূল্য ১২ হাজার ১৩৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা এবং এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১০ হাজার ৭২৩ দশমিক ৬৩ কোটি টাকা। নদীশাসন কাজের বাস্তব অগ্রগতি ৭৫ দশমিক ৫০ ভাগ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৬৫ দশমিক ১৭ ভাগ। নদীশাসন কাজের চুক্তিমূল্য ৮ হাজার ৭০৭ দশমিক ৮১ কোটি টাকা এবং এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৫ হাজার ৬৭৪ দশমিক ৪৮ কোটি টাকা।

সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়ার কাজ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়ার খাত, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ খাত, পরামর্শক, সেনা নিরাপত্তা, ভ্যাট ও আয়কর, যানবাহন, বেতন ও ভাতাদি এবং অন্যান্য খাতে মোট বরাদ্দ ৭ হাজার ৭১৬ দশমিক ৯১ কোটি টাকা।

প্রকল্পের সর্বমোট বাজেট ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২৪ হাজার ১১৫ দশমিক ০২ কোটি টাকা; অর্থাৎ ৭৯ দশমিক ৮৯ ভাগ। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮২ দশমিক ৫০ ভাগ।

আরও পড়ুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত