ঢাকা, ৩১ মে, ২০২৫
সর্বশেষ:

থানায় নুসরাতের কান্নার ভিডিও ভাইরাল (ভিডিও)

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:৪২, ১২ এপ্রিল ২০১৯  

নুসরাত জাহান রাফি (ছবি সংগৃহীত)

নুসরাত জাহান রাফি (ছবি সংগৃহীত)

যৌন হয়রানির চেষ্টার পর মার্চের ২৭ তারিখে থানায় কান্নারত অবস্থায় পুরো ঘটনা নিজ মুখে বর্ণনা করেছিলেন ফেনীর সোনাগাজীতে দুর্বৃত্তদের আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি।

বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে থানায় অভিযোগ দেওয়ার সময় করা ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দুই পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না। ভিডিওটি থানার ওসি ধারণ করেন বলে জানা গেছে।

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, সোনাগাজীর থানার ওসির সামনে অঝরে কাঁদছিলেন মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি। আর সেই কান্নার ভিডিও করছিলেন সোনাগাজী থানার ওসি। নুসরাত তার মুখ দুহাতে ঢেকে রেখেছিলেন। তাতেও ওসির আপত্তি। বারবারই ‘মুখ থেকে হাত সরাও, কান্না থামাও’ বলার পাশাপাশি তিনি এও বলেন, ‘এমন কিছু হয়নি যে এখনো তোমাকে কাঁদতে হবে।’

ভিডিওতে থানার ভেতরে নুসরাতকে জেরা করা হচ্ছে দেখা যায়, তাকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে- ‘কীসে পড়া? ক্লাস ছিল?’ ঘটনা বর্ণনা দিতে গিয়ে নুসরাত বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন। সে সময় তার কাছে জানতে চাওয়া হয়- ‘কারে কারে জানাইসো বিষয়টা?’

আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত যখন জানায়- তাকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ অফিস রুমে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। তখন জানতে চাওয়া হয়- ‘ডেকেছিল, নাকি তুমি ওখানে গেছিলা?’ পিয়নের মাধ্যমে ডেকেছিল বলে নুসরাত জানালে জিজ্ঞাসা করা হয়- ‘পিয়নের মাধ্যমে ডেকেছিল? পিয়নের নাম কী?’ নুসরাত জাহান সে সময় পিয়নের নাম বলেন- ‘নূর আলম।’

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওর পুরোটা জুড়েই নুসরাত কাঁদছিলেন। একসময় ভিডিওধারণকারী তাকে ধমকের সুরে বলে- ‘কাঁদলে আমি বুঝব কী করে, তোমাকে বলতে হবে। এমন কিছু হয়নি যে তোমাকে কাঁদতে হবে।’

পাঁচ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিওর শেষে নুসরাতের কথা বলা শেষ হলে ধারণকারী বলেন- ‘এইটুকুই?’ আরও কিছু অশালীন উক্তির পাশাপাশি তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন- ‘এটা কিছু না, কেউ লিখবেও না তোমার কথা। আমি আইনগত ব্যবস্থা নেব। কিছু হয়নি। রাখো। তুমি বসো।

সর্বশেষ মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত আকুতি ব্যক্ত করে বলে, আমি আর বাঁচব না স্যার।

এই ঘটনায় ইতোমধ্যে সোনাগাজী থানার ওসি (তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কামাল উদ্দিনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি কে করেছিল জানতে চাইলে সোনাগাজী থানার ওসি (তদন্ত) বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আজকে অনেকে বিষয়টি জানতে চেয়ে ফোন করায় আমি জানতে পেরেছি।

দেখুন ভিডিও>>>

নিয়ম ভেঙেই ওই সময় ওসি নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও ধারণ করেছেন কি না- জানতে চাইলে আইনজীবীরা বলছেন, যৌন হয়রানির অভিযোগকালে ওসির ভিডিও ধারণের ঘটনায় ওসির বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা করার সুযোগ রয়েছে নুসরাতের পরিবারের।

আইন না মেনে অভিযোগ করতে যাওয়া কারোর ভিডিও করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্তৃপক্ষ।

নিউজওয়ান২৪.কম/আ.রাফি

আরও পড়ুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত