ঢাকা, ২৮ জুন, ২০২৫
সর্বশেষ:

‘ঐক্যফ্রন্টের আন্তরিকতা’ কতটা আন্তরিক প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০৯:২০, ৪ নভেম্বর ২০১৮  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

সংলাপের পাশাপাশি আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণায় ঐক্যফ্রন্টের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, আলোচনা চলছে এই সময় দেখলাম আন্দোলনের কর্মসূচিও দেয়া হয়েছে। একদিকে আলোচনা, অন্যদিকে আন্দোলনের কর্মসূচি, এটা কী ধরনের সংলাপ? সেটা আমাদের বোধগম্য নয়। জানি না, দেশবাসী এটা কীভাবে নেবে?

শনিবার বিকেলে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জেলহত্যা দিবসের স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির সংলাপের আহ্বান দীর্ঘদিন নাকচ করে আসার পর একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে প্রত্যাশিতভাবে কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত নতুন জোটকে আলোচনায় ডাকেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু হোক, আমরা সেটাই চাই। নির্বাচন সামনে রেখে যখন ঐক্যফ্রন্ট চিঠি দিল আমাদের সঙ্গে দেখা করতে, তখন আমি সঙ্গে সঙ্গে তাদের স্বাগত জানালাম। অনেক ব্যস্ততার মাঝেও যারা দেখা করতে চাচ্ছে, আমরা করছি। ঐক্যফ্রন্ট ও যুক্তফ্রন্ট- দুটো গ্রুপের সঙ্গে আমাদের মিটিং হয়েছে। এরপর আরো সবার সঙ্গে আমরা মিটিং করবো।

তিনি বলেন, যারা আলাপ করতে চেয়েছে, আমরা করেছি। একটা সুন্দর পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। তারা যে সমস্ত দাবি-দাওয়া দিয়েছে, যে সব দাবি-দাওয়া আমাদের পক্ষে করা সম্ভব, আমরা বলেছি সেটা করবো।

ঐক্যফ্রন্টের নেতারা রাজবন্দিদের মুক্তি চেয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বলেছি, রাজবন্দিদের তালিকা দেন। তাদের প্রতি যদি খুনের মামলা না থাকে, কোনো ক্রিমিনাল অফেন্স না থাকে, তাহলে অবশ্যই….। 

আর আমরা কাউকে রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার করিনি। তাই যদি করতাম, তাহলে খালেদা জিয়া যখন ২০১৫ সালে মানুষ পুড়িয়ে মারল, তখনই তাকে গ্রেফতার করতে পারতাম। সেটাও আমরা করিনি। কাজেই আমরা তো রাজনৈতিক কারণে কাউকে গ্রেফতার করিনি।

বিএনপি নেত্রীর বিচারের ক্ষেত্রে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ না থাকার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ১০টা বছর ধরে মামলাটা চলেছে। সরকারের পক্ষ থেকে যদি কোনো দুরভিসন্ধি থাকত, তাহলেও তো ১০ বছর লাগার কথা না।

খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মুক্তির বিষয়ে সরকারের কিছু করার সুযোগ না থাকার কথাও বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের তো কিছু করার নেই। আর বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। স্বাধীন বিচার বিভাগ যে রায় দিয়েছে, সে রায়ে খালেদা জিয়া সাজা ভোগ করছে।

খালেদা জিয়া ও তারেকের দুর্নীতি ‘আন্তর্জাতিকভাবে প্রমাণিত’ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারেক জিয়ার জন্য তো আমেরিকা থেকে এফবিআই এসে সাক্ষি দিয়ে গেছে, আর খালেদা জিয়ার জন্য কয়েকটি কেইসে তারা সাক্ষি দিতে প্রস্তুত হয়ে আছে। আন্তর্জাতিকভাবেও প্রমাণিত যে, এরা দুর্নীতিতে জড়িত।

আমাদের করার কী আছে? তারপরও আমরা বলেছি, আপনারা তালিকা দেন। আমরা দেখব কী করা যেতে পারে। আমরা চাই সবার অংশগ্রহণে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। এদেশের মানুষের যেন আর ওই জ্বালাও-পোড়াওয়ের সম্মুখীন হতে না হয়।

এই সময় দশম সংসদ নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়াকে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে সাড়া পাননি বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জানান, তার ছেলের (খালেদা) মৃত্যুতে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে বন্ধ দরজা থেকে ফিরে আসার বিরূপ অভিজ্ঞতার পরও বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসার ক্ষেত্রে জনগণের কথা মাথায় রেখেছেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, শুধুমাত্র দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে এবং মানুষ শান্তিতে ভোট দিক, তাদের পছন্দের সরকার বেছে নিক- সেজন্যই আমরা এ সংলাপে বসেছি, আলোচনা করেছি।

অধিকাংশ সময় তারাই কিন্তু বলেছে, আমি কিন্তু একটা কথাও বলিনি। একেবারে সর্বশেষ সমাপ্তির জন্য যতটুকু বলা, সেটুকু আমি বলেছি। আর সেখানেও আমি বলেছি, কোনটা আমরা করতে পারি, কোনটা কীভাবে করা যায়, সেটা বলে সমাপ্তি টেনেছি। কিছু দাবি আমরা মেনেও নিয়েছি।

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদের পরিচালনায় জেল হত্যা দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, ওবায়দুল কাদের এবং নিহত চার নেতার পরিবারের সদস্যরা।

নিউজওয়ান২৪/জেডএস

আরও পড়ুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত