ঢাকা, ২৯ মে, ২০২৫
সর্বশেষ:

এবার ১০ টাকায় টিকিট কেটে চিকিৎসাসেবা নিলেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১:৩১, ১৯ এপ্রিল ২০১৯  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যদের মতো কাউন্টারে দাঁড়িয়ে নাম  নিবন্ধন করে টিকিট কাটছেন। (ছবি সংগৃহীত)

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যদের মতো কাউন্টারে দাঁড়িয়ে নাম নিবন্ধন করে টিকিট কাটছেন। (ছবি সংগৃহীত)

সাধারণ রোগীদের মতো দশ টাকার টিকিট কেটে চোখ দেখালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

শুক্রবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি।

এ সময় তিনি হাসপাতালের বর্তমান কর্মকাণ্ড সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেন এবং চিকিৎসক ও নার্সদের ধন্যবাদ জানান। এর আগে, পাঁচ টাকা মূল্যের নির্ধারিত টিকিট কেটে গাজীপুরের কাশিমপুরে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় তিনি অন্যদের মতো কাউন্টারে দাঁড়িয়ে নাম নিবন্ধন করে টিকিট কাটেন। সেটি নিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান।

প্রধানমন্ত্রী নিজেই হাসপাতালের কাউন্টারে নাম নিবন্ধন করিয়ে চেকআপের ফি পরিশোধ করেন। পরে হাসপাতালে চোখ, কানসহ নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান তিনি। পরে প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালের কনসালটেন্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন। রাজধানীর অদূরে স্থাপিত এই হাসপাতাল দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করেন প্রধানমন্ত্রী।

এখন থেকে দেশের হাসপাতালেই চিকিৎসা নেবেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি যদি কখনও অসুস্থ হয়ে পড়ি, তাহলে আপনারা আমাকে বিদেশে নেবেন না। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে উঠাবেন না। আমি দেশের মাটিতেই চিকিৎসা নেব। এই হাসপাতালে চিকিৎসা নেব।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আরও আগেই আমার বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে এই হাসপাতালে আসার ইচ্ছে ছিল। আমরা চিন্তা করেছি, ভবিষ্যতে আমরা একটি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করব। যেহেতু দেশে জনসংখ্যার তুলনায় ডাক্তারের প্রয়োজন আরও রয়েছে। এ ছাড়া এখানে রয়েছে একটি আন্তর্জাতিক মানের নার্সিং ইনস্টিটিউট।

কী করে জনগণের স্বাস্থ্যসেবা আরও বেশি করে নিশ্চিত করা যায় সেই চিন্তা থেকে আমাদের এই উদ্যোগ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যেহেতু এখানকার বেশিরভাগ রোগী আর্থিকভাবে অসচ্ছল, তাই তাদের আর্থিকভাবে সুবিধাও দিতে হবে।’ এক্ষেত্রে তিনি চিকিৎসকদের কনসালটেন্সি ফি কমানোরও পরামর্শ দেন।

হাসপাতালের ফান্ডে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট্রের পক্ষ থেকে আরও ১০ কোটি টাকার অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু হাসপাতালটি আমাদের মায়ের নামে, তাই এখানে আমাদের পরিবারের সবাই অনুদান দেবে। আপনাদের এবং হাসপাতালের যে কোনো সমস্যা আমাদের নিয়মিত জানাবেন।’

চিকিৎসকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে উপস্থিত সবাই দেশের স্বনামধন্য ডাক্তার। যদি কোনো ডাক্তার এখানে এসে চিকিৎসাসেবা দিতে আগ্রহী হন, তারা প্রতিদিন এখানে আসতে পারেন। এভাবেই আমরা এ হাসপাতালকে আরও উন্নত করে তুলতে পারব। আমি বলতে চাই, জনগণের সেবা করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’

চিকিৎসাসেবা উন্নত করার জন্য হাসপাতালের ম্যানেজমেন্ট কমিটিকে নিয়মিত বৈঠক করার পরামর্শও দেন তিনি। এ ছাড়া অত্যাধুনিক ফার্মেসি, ট্রাস্টের অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার ও ফুলটাইম ডাক্তারের সংখ্যা বাড়ানোর কথা বলেন।

অগ্নিকাণ্ড ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সজাগ থাকতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

অগ্নিকাণ্ড, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে সবসময় সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া দুর্যোগ ও দুর্ঘটনায় ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি ব্যক্তিগত পর্যায়েও সবাইকে নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে কী কী করতে হবে সেগুলো প্রচারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলের সভায় তিনি এ নির্দেশনা ও আহ্বান জানান। সভায় শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কোথায় কাজ করেন, কী করেন, সেখানে নিরাপত্তা কতটুকু নিজের ভেতরে সেই সচেতনতা আছে কি না- এ ব্যাপারে নিজেদেরও প্রস্তুতি থাকতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কী কী করণীয় সেগুলোর প্রচার নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান করবে। কোনো দুর্যোগ এলে জাতীয়ভাবে আমাদের করণীয় কী? যে নির্দেশনাগুলো আছে সেগুলো ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ, গ্যাস সিলিন্ডার, দাহ্য পদার্থ ব্যবহারে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। বনানীর এফআর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে একটা বহুতল ভবনে আগুন লাগল, সেখানে যে বিষয়টা লক্ষণীয় ছিল, সেখানে যারা কর্মরত ছিল, তাদের মধ্যে কোনো সচেতনতা ছিল না। এমনকি সেখানে যে ফায়ার এক্সিট আছে সেটাও তারা জানে না।

তিনি বলেন, অনেক ফায়ার এক্সিট বা জরুরি নির্গমণ পথে ইন্টেরিয়র সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য অথবা সেখানে খালি জায়গায় যত মালামাল আছে সব ফেলে রাখা হয়। দুর্যোগ প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর (ভবন) সঙ্গে সেখানে যারা কাজ করছেন তাদের মধ্যে সচেতনতা থাকা প্রয়োজন।

নিউজওয়ান২৪.কম/আ.রাফি

আরও পড়ুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত