ঢাকা, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুতের দাম

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২০:৪২, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

এই দাম ১লা মার্চ থেকে কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে বিইআরসি-প্রতীকী ছবি

এই দাম ১লা মার্চ থেকে কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে বিইআরসি-প্রতীকী ছবি


পাইকারি, খুচরা ও সঞ্চালন-এই তিন পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। সাধারণ গ্রাহক পর্যায়ে (খুচরা) প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম গড়ে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়িয়ে ৭ টাকা ১৩ পয়সা করা হয়েছে। যা বর্তমানে প্রতি ইউনিট ৬ টাকা ৭৭ পয়সা। 

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ সম্মেলনে এ  ঘোষণা দেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এর চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জলিল। পাইকারিতে বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিট গড়ে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়িয়ে ৫ টাকা ১৭ পয়সা করা হয়েছে। যা বর্তমানে প্রতি ইউনিট ৪ টাকা ৭৭ পয়সা। এ ছাড়া বিদ্যুৎ সঞ্চালন মূল্যহার বা হুইলিং চার্জ প্রতি ইউনিটে শূন্য দশমিক ২৭৮৭ টাকা থেকে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়িয়ে শূন্য দশমিক ২৯৩৪ টাকা করা হয়েছে।

এই দাম ১লা মার্চ থেকে কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে বিইআরসি। এই দাম বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে মনে করছে ভোক্তা অধিকার সংগঠনগুলো। তারা বলছে, এই দাম বৃদ্ধি মানুষের জীবন-যাত্রায় ব্যয় আরেক দফা বাড়াবে। এ সরকারের আমলে এর আগেও কয়েক দফা বাড়ানো হয় বিদ্যুতের দাম। রাজধানীর টিসিবি মিলনায়তনে ২০১৯ সালের ২৮শে নভেম্বর থেকে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি শুরু হয়। বিইআরসি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ইস্যুতে ওই গণশুনানি করে। শুনানিতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) পাইকারি বিদ্যুতের দাম ২৩ দশমিক ২৭ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল। বিপরীতে কমিশনের কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি ১৯ দশমিক ৫০ শতাংশ বাড়ানোর প্রয়োজন বলে মন্তব্য করে। বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাবে পিডিবি বলছে, ২০২০ সালে বিদ্যুৎ বিক্রি করে আয় হতে পারে ৩৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। কিন্তু ওই সময় প্রয়োজন হবে ৪৫ হাজার ২০৮ কোটি টাকা। ফলে, বাকি আট হাজার ৬০৮ কোটি টাকা পূরণের জন্য মূল্য সমন্বয় করতে কমিশনকে অনুরোধ করে পিডিবি। এরপর, গত বছরের ২৮শে নভেম্বর বিতরণ কোম্পানিগুলোর বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি শুরু করে কমিশন। সেসময় চার দিনব্যাপী এই শুনানি হয়। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বেশিরভাগ শুনানির পর বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। তবে কখনও কখনও পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়নি। ২০১০ সালের ১লা মার্চ গ্রাহক পর্যায় ৬ দশমিক ৭ ভাগ বেড়েছিল। সেবার পাইকারিতে বাড়েনি। ২০১১ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি গ্রাহক পর্যায় ৫ ভাগ এবং পাইকারিতে ১১ ভাগ বেড়েছিল। ২০১১ সালের ১লা আগস্ট গ্রাহক পর্যায়ে বাড়েনি। তবে পাইকারিতে ৬ দশমিক ৬৬ ভাগ বাড়ানো হয়। ২০১১ সালের ১লা ডিসেম্বর গ্রাহক পর্যায়ে ১৩ দশমিক ২৫ ভাগ এবং পাইকারিতে ১৬ দশমিক ৭৯ ভাগ বাড়ানো হয়। ২০১২ সালের ১লা সেপ্টেম্বর গ্রাহক পর্যায়ে ১৫ ভাগ এবং পাইকারিতে ১৭ ভাগ, ২০১৫ সালের ১লা আগস্ট গ্রাহক পর্যায়ে ২ দশমিক ৯৩ ভাগ বাড়ানো হয়। সেবার পাইকারিতে বাড়েনি। এরপর সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১লা ডিসেম্বর গ্রাহক পর্যায়ে ৫ দশমিক ৩ ভাগ বাড়ানো হয়। সেই সময়ও পাইকারিতে বাড়েনি।

এদিকে, আবাসিক বা শিল্পখাত, কোনো পর্যায়ের ভোক্তার জন্য বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা দেখছেন না ভোক্তা সংগঠন কনজুমারস অ্যাসোয়িশেন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম। পাইকারি, খুচরা ও সঞ্চালন-তিন ক্ষেত্রেই বিদ্যুতের দাম আরেক দফা বাড়ানোর পর প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতে অযৌক্তিক ব্যয় না কমিয়ে সরকার জনগণের ব্যয়ভার বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, ভোক্তা যে মানের বিদ্যুৎ পায়, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মূল্য পুনরায় নির্ধারণ হোক, সেটা আবাসিক বা শিল্পক্ষেত্রে একইভাবে এমনটি চেয়েছিলাম আমরা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, আগের ধারাবাহিকতায় গতানুগতিক ঐকিক ক্ষেত্রে বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারিত হয়েছে। কোনো পর্যায়ের ভোক্তার জন্যই মূল্য বৃদ্ধির যৌক্তিকতা এ আদেশে প্রতিফলিত হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সদস্য মকবুল ই ইলাহী চৌধুরী, রহমান মুরশেদ, মোহম্মদ আবু ফারুক ও মোহাম্মদ বজলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

নিউজওয়ান২৪.কম/এমজেড

আরও পড়ুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত