ঢাকা, ২৭ জুন, ২০২৫
সর্বশেষ:

অন্য কারও সঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বৈঠক নয়: ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:৪৪, ২০ নভেম্বর ২০১৮  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ডেকে কেউ যেন বৈঠক কিংবা ব্রিফ করতে না পারেন সে বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

বিএনপির করা এ-সংক্রান্ত এক অভিযোগের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।

জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের প্রধানমন্ত্রীর দফতরে ডেকে নিয়ে ব্রিফ করা হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার (২০ নভেম্বর) বিএনপির পক্ষ থেকে দলের যুগ্ম-মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের কাছে এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগপত্র জমা দেন।

দলটির অভিযোগ, সরকারি দলের পক্ষে ভূমিকা রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন বলেন, ‘আজকে মাননীয় কমিশন একটি নির্দেশনা দিয়েছে, সবগুলো বিষয় মিলিয়ে সরকারকে আমরা একটা পত্র দেবো। সিদ্ধান্ত হয়েছে এ রকম- পত্রপত্রিকায় ইতোমধ্যে যেসব অভিযোগ উঠেছে ভবিষ্যতে যাতে সেগুলো আর না করা হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তারা নির্বাচন কমিশনের অধীন হওয়ায় তাদের যাতে অন্য কোনও ভাবে কেউ ডেকে ব্রিফ না করে। এসব ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে। সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং অন্যান্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘কোনও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে নির্বাচন কমিশন তা তদন্ত করে দেখবে। সব কিছু বিবেচনা করে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।’ 

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘নির্বাচন কর্মকর্তারা জনপ্রশাসনের কর্মকর্তা। প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা। কোনও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে কমিশন তা খতিয়ে দেখবে, তলিয়ে দেখবে, তদন্ত করবে, তারপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রির্টানিং কর্মকর্তাদের ডেকে নিয়ে সভা করা হয়েছে- এটা আচরণবিধি লঙ্ঘন কিনা- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা অভিহিত নই। যেহেতু একটি অভিযোগ এসেছে, আমরা খতিয়ে দেখবো।’

বিএনপির অভিযোগ তাদের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসার পথে সাদা পোশাকের লোকজন কাউকে কাউকে তুলে নিচ্ছে- এর জবাবে হেলালুদ্দীন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ বিষয়টিও আমাদের জানা নেই। আমরা অভিযোগ পেলে তবেই ব্যবস্থা নেবো।’

ইসি সচিবের শাস্তি ও বদলির ব্যাপারে বিএনপির দাবির প্রেক্ষিতে হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের যে সিদ্ধান্তগুলো হয়, ওই সিদ্ধান্তের মুখপাত্র হিসেবে ও সাচিবিক দায়িত্ব পালনের জন্য ইসি সচিব সকল ধরনের কাজ করে থাকে। এখানে নির্বাচন কমিশন সচিবের আলাদা কোনও সত্ত্বা নেই। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের দায়িত্ব সচিবের। ইতোমধ্যে যে সিদ্ধান্তগুলো হয়েছে, সবগুলোই কিন্তু কমিশনের সিদ্ধান্ত। সচিবের নয়।’

মেনটরদের তালিকায় তার নাম থাকা নিয়ে সচিব বলে, ‘মন্ত্রিপরিষদ ১৩ নভেম্বর মেন্টর নিয়োগের আদেশটি বাতিল করেছে। জেলাতে মেন্টর নিয়োগের বিষয়টি অনেক আগে থেকেই প্রচলিত। বিভিন্ন সরকার বিভিন্ন জেলায় মেনটর নিয়োগ করে থাকে।’ 

তফসিল ঘোষণার দিন মেন্টর নিয়োগ করা হয়েছে, তবুও কেন কমিশনকে জানানো হয়নি- এ প্রশ্নে ইসি সচিব বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি অভিহিত নই।’

বিএনপির অভিযোগ সরকারের কারণে আপনারা রেফারির ভূমিকা পালন করতে পারছেন না। কেন পারছেন না? চাপটা কোথায়? এসব প্রশ্নের জবাবে হেলালুদ্দীন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। এ পর্যন্ত কমিশন যতগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রত্যেকটি সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনাররা নিজেরা বসে নিয়েছেন। এখানে কোনও চাপে বা বিশেষ কারও পরামর্শে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’

প্রশাসনে রদবদলের বিষয়ে বিএনপির অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘ঢালাওভাবে প্রস্তাব কমিশন গ্রহণ করবে না। প্রত্যেকটি অভিযোগ সুনির্দিষ্ট করে বলতে হবে। তখন বিষয়টি নির্বাচন কমিশন তদন্ত করবে- কী কারণে বদলি চাওয়া হচ্ছে।’

নিউজওয়ান২৪/এমএস

আরও পড়ুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত