ঢাকা, ২২ জুন, ২০২৫
সর্বশেষ:

সিমেন্টের বদলে বালি আর রডের বদলে বাঁশ দেবেন না: আবদুল হামিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০৯:৩৭, ২০ মার্চ ২০১৯  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

দেশ ও জনগণের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে বুয়েট শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। 

তিনি বলেন, কর্মক্ষেত্রে কোনো ধরনের দুর্নীতির আশ্রয় নেবেন না। সিমেন্টের বদলে বালি আর রডের বদলে বাঁশ দেবেন না। মঙ্গলবার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ১১তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
 
রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশ থেকে প্রতিবছর উচ্চশিক্ষার্থে বিপুল সংখ্যক প্রকৌশলী, প্রযুক্তিবিদ, স্থপতি ও পরিকল্পনাবিদ ইউরোপ, আমেরিকাসহ উন্নত দেশগুলোতে যাচ্ছেন। কিন্তু উচ্চশিক্ষা গ্রহণ শেষে অনেকেই দেশে ফেরেন না। ফলে দেশ তাদের মেধা ও সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ দেশেই এখন উপযুক্ত কর্মপরিবেশ ও কাজ করার বিশাল ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপতি।

বুয়েট দেশে ও বিদেশে সুপরিচিত উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়টির আচার্য হামিদ বলেন, শিক্ষার্থীদের মনে রাখতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটি একক সত্তা নয়। এর প্রাণ হলো শিক্ষার্থীরা, এর আত্মা হলো সম্মানিত শিক্ষকরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান স্মরণে রেখে ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের  উন্নয়নে আরো অর্থপূর্ণ অবদান রাখতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, মহাশূন্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করে বাংলাদেশ এখন মহাকাশ স্যাটেলাইটের গর্বিত সদস্য। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হতে চাই। সে লক্ষ্যে সরকার বৃহৎ প্রকল্প পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রামপাল ও মাতার বাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, ঢাকা মেট্রোরেল, এলিভেটেট এক্সপ্রেস হাইওয়ে, পদ্মা সেতু রেলওয়ে লিংক প্রজেক্টসহ মেগা প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন করছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে প্রকৌশলীদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, আমার দৃঢ় বিশ্বাস বুয়েটের দক্ষ প্রকৌশলীরা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

আবদুল হামিদ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা হিসেবে ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ গ্রহণ করেছে। এ মহাপরিকল্পনায় বন্যা, নদী ভাঙন, নদী ব্যবস্থাপনা, পানি সরবরাহ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নগর জলাবদ্ধতা নিয়ন্ত্রণ ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘমেয়াদী কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে। জাতীয় স্বার্থে এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রকৌশলীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।

গ্র্যাজুয়েটদের উচ্চ পর্যায়ের মানবসম্পদ উল্লেখ করে বুয়েটের আচার্য রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, এ সমাবর্তন তোমাদের যেমন আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিচ্ছে, তেমনি দায়িত্বও অর্পণ করছে। সে দায়িত্ব পালনে তোমরা সদা প্রস্তুত থাকবে। কর্মজীবনে তোমরা যেখানেই থাকো না কেন, দেশমাতৃকার কথা, দেশের খেটে খাওয়া মানুষের কথা ভুলে যাবে না। তোমরা তাদের কাছে ঋণী। এখন তোমাদের পালা দেশ ও জাতির সেই ঋণ শোধ করার। তোমরা তোমাদের মেধা, মনন ও কর্ম দিয়ে সে ঋণ শোধ করতে সদা তৎপর থাকবে।

সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের তরুণ প্রজন্মের আদর্শ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, তোমাদের আদর্শকে ধারণ করে নবীনরা উজ্জীবিত হবে, সামনে এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা পাবে।

আগামী ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে আমাদের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপিত হবে। শিক্ষার্থীরা তাদের অদম্য উৎসাহ ও প্রাণচঞ্চল্য দিয়ে সেই উদযাপনকে আরো রঙিন, উজ্জ্বল ও সফল করে তুলবে বলে প্রত্যাশা করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম, সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

২০১১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ৫,২৮৪ জন গ্র্যাজুয়েট সমাবর্তনে নিবন্ধন করেন। অসাধারণ একাডেমির ফলাফলের জন্য পাঁচ কৃতিশিক্ষার্থীকে স্বর্ণপদক দেয়া হয়।

নিউজওয়ান২৪/আ.রাফি

আরও পড়ুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত