ঝাঁপ দেওয়ার আগে ক্ষমা চান মামুন
নিজস্ব প্রতিবেদক

বনানীর এফ আর টাওয়ার থেকে জীবন বাঁচাতে লাফিয়ে পড়ে প্রাণ হারানো আবদুল্লাহ আল মামুন। (ছবি : সম্পাদিত)
রাজধানীর বনানীর এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শ্রীলঙ্কান নাগরিকসহ মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ১৯ জনে। যাদের মধ্যে একজন হলেন ভবনে কর্মরত দিনাজপুরের বাসিন্দা আবদুল্লাহ আল মামুন (৪৭)।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে বহুতল সেই ভবনটিতে আগুন লাগার পর তিনি জীবন বাঁচাতে এর আটতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে প্রাণ হারান। মামুন এফ আর টাওয়ারে থাকা প্রতিষ্ঠান হেরিটেজ গ্রুপের অ্যাকাউন্ট ব্যবস্থাপক পদে কর্মরত ছিলেন। মর্মান্তিক এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির আরো অন্তত তিন কর্মকর্তা প্রাণ হারান।
এ দিন সন্ধ্যার পর গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে উপস্থিত হেরিটেজ এয়ার এক্সপ্রেস প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘উনারা আসলে গ্লাস ভেঙে তার বেয়ে নিচে নামার চেষ্টা করেছিলেন। উপর থেকে যখন একজন তারটা ছেড়ে দেন, পরে নিচের জনের ওপর পড়লে তারা দুইজনই নিচে পড়ে যান এবং সঙ্গে সঙ্গেই তাদের মৃত্যু হয়। আমাদের আরেকজন কর্মীও নাকি ঠিক একইভাবে লাফিয়ে পড়ে মারা গেছেন।’
হেরিটেজ গ্রুপের এ কর্মকর্তা আরো বলছিলেন, ‘নিহত সেই তিনজনের মরদেহই ইউনাইটেড হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। তাছাড়া মিজান নামের অপর একজন কর্মকর্তা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।’
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের শিকার বনানীর এফ আর টাওয়ার। (ছবি : সংগৃহীত)
এদিকে ঘটনার পর জাহিদুল আলম পাটোয়ারী নামের একজন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘Abdullah Al Mamun আমার বড় ভাই। বনানী আগুন লাগার পর ৮ তলা থেকে লাফ দেয়ার পর আর জীবিত রইলো না। গতকাল একসঙ্গে চা খেলাম। প্রতিদিন একসঙ্গে আড্ডা দেই। অনেক ভালো মানুষ ছিল। ছোট দুইটা মেয়ে আছে ভাইয়ার। খুব খারাপ লাগছে খবরটা শোনার পর।’
নিহত আবদুল্লাহ দিনাজপুর শহরের নিকটবর্তী পশ্চিম বালুয়াডাঙ্গা এলাকার অন্ধ হাফেজ মোড় নিবাসী প্রাক্তন ফরেস্ট অফিসার মরহুম আবুল কাশেমের দ্বিতীয় সন্তান।
মামুনের এই অকাল মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর দিনাজপুরের বাসায় চলছে শোকের মাতল। নিহতের ভাই মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মা পাথর হয়ে গেছেন। মৃত্যুর আগ মুহূর্তে সে (মামুন) ফোন দিয়ে ক্ষমা চেয়েছিল। পরে আমরা জানতে পারি, মামুন তার বেয়ে নামার সময় নিচে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছে। পরে হাসপাতালে নেয়ার সময় নাকি সে মারা গেছে।’
এলাকাবাসী ও পরিবার সূত্র থেকে জানা যায়, মামুন দিনাজপুর শহরে স্কুল জীবন সম্পন্ন করে ভারতে উচ্চ শিক্ষা লাভ করেন। তিনি বিভিন্ন অফিসে অত্যন্ত সুনাম ও দক্ষতার সঙ্গে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি স্ত্রী, দুই কন্যা, মা, চার ভাই-বোন, অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
আবদুল্লাহ আল মামুনের প্রথম নামাজে জানাজা শুক্রবার (২৯ মার্চ) বেলা ১১টায় দিনাজপুরের বিরল উপজেলার কালিয়াগঞ্জ সংলগ্ন মিরাবনে নিজ গ্রামের বাড়িতে অনুষ্ঠিত হবে। পরে তার দ্বিতীয় জানাজা বাদ জুমা দক্ষিণ বালুয়াডাঙ্গা মিনার জামে মসজিদের ঈদগাহ মাঠে হওয়ার কথা রয়েছে। জানাজা শেষে তাকে দিনাজপুর শহরের ফরিদপুর কবরস্থানে বাবার পাশে সমাহিত করা হবে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
এর আগে একইদিন দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে রাজধানীর বনানীর ১৭ নম্বর রোডের এফ আর টাওয়ারে ৯তলা থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। পরে এ আগুন গোটা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত শ্রীলঙ্কান নাগরিকসহ ২৫ জনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ করা হলেও বর্তমানে তা কমিয়ে ১৯ জনে আনা হয়েছে।
যদিও এর কারণ হিসেবে বলা হয়, মরদেহ গণনার সময় অন্তত ছয়টি লাশকে পরপর দুইবার করে গোনা হয়েছিল। যা পরবর্তীতে সংশোধন করা হয়। তাছাড়া এতে এখনো কমপক্ষে ৭০ জন ঢাকা মেডিকেলসহ রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।
নিউজওয়ান২৪/আ.রাফি
- ভাষা আন্দোলনের আদ্যেপান্ত
- মহান বিজয় দিবস আজ
- সেনা কল্যাণ সংস্থার শিক্ষামূলক বৃত্তির চেক পেল ২৯৩ শিক্ষার্থী
- বারবার ধর্ষন করা হয়েছে: সুকির দেশ থেকে পালিয়ে আসা নারীদের আর্তনাদ
- ‘বাড়াবাড়ি করছে, দিছি...সরাইয়া’
- পিলখানা হত্যাকাণ্ড: বিজিবির সব ইউনিট শাহাদাত বার্ষিকী পালন করবে
- ট্রেনের টিকিট কাটতে লাগবে এনআইডি নম্বর
- সেনাকল্যাণের ৪৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে দরবার অনুষ্ঠিত
- কুয়েতের সঙ্গে তিনটি নয়, চারটি চুক্তি স্বাক্ষর
- খালেদার আপিল শুনানির সময় ইসিতে যা ঘটেছে
- পাকিস্তানি স্কুলের মতে ‘পাঞ্জাবি অশ্লীল ভাষা’!
- আসল নকল থেকে সাবধান: ভয়াবহ বিপদ ঘটে যেতে পারে!
- অনিরুদ্ধ অপহৃত নাকি আত্মগোপনে!
- বাংলাদেশের রাজনৈতিক জরিপ ও সত্য-মিথ্যা
- ২১ ফেব্রুয়ারি
মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আজ