ঢাকা, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

ভূততত্ত্ব

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:১৯, ৩১ অক্টোবর ২০১৮  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

সারাবিশ্বে জমকালো সব আয়োজনে উদযাপন হচ্ছে ভূত দিবস হ্যালোইন ডে। আজ ৩১ অক্টোবর ভূতের এই দিনে বিশ্বজুড়ে ভূত নিয়ে যখন এত মাতামাতি, এত আয়োজন তখন আমাদের ভূতদের সম্পর্ক না জানলে কী হয়। ভূতের আলোচনা শুরু হলেই প্রথম যে প্রশ্নটা উঠে আসে তা হলো ‘আপনি কি কখনো ভূত বিশ্বাস করেন? বা ভূত দেখেছেন নিজের চোখে?’ উত্তরটি হ্যাঁ বা না যেকোনটাই হতে পারে। কারণ ভূত দেখাটা অনেকটা হ্যালুসিনেশনের মতো। ভূত দেখি বা না দেখি, ভূতের কাহিনী লোকমুখে আমরা অনেকবার শুনেছি। কিছু কাহিনী বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়েছে, আবার কোনোটা হয়নি। বিষয়টি আমাদের মন মানসিকতা, অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে। আমাদের জানার আগ্রহ হয় এই ভূততত্ত্বটা কি আসলে, ভূত এলো কোত্থেকে। এজন্য আমরা দ্বারস্থ হই বিজ্ঞান কি বলে সেইদিকে। 

ভূত কোত্থেকে এসেছে, মানে ভূতের ধারণাটি কোথা থেকে এসেছে সেটা নিয়ে পরিষ্কার কোনো তথ্য জানা যায়নি। স্বয়ং বিজ্ঞান ভূতের অস্তিত্ব নিয়ে কম গবেষণা করেনি। কিন্তু বিজ্ঞানের কাছে এখন পর্যন্ত ভূতের অস্তিত্বের কোনো প্রমাণ মেলেনি। 

ভূত বলতে আমরা সহজ কথায় বুঝি কোনো মৃত আত্মা বা অপচ্ছায়া। অনেকে অন্ধকারকে ভূতের অস্তিত্ব আর আশ্রয়স্থল বলতে চান। অন্ধকার ছাড়া ভূতের টিকে থাকা অসম্ভব। এই ভূতের বিশ্বাস সেই প্রাচীনকাল থেকেই। অসংখ্য প্রাচীন লোককাহিনীতে ভূত বা আদিভৌতিক ঘটনার উল্লেখ আছে। পৃথিবীর অনেক জাতিই ভূতে বিশ্বাস করে। এই আধুনিক যুগে এসেও। তাদের মতে প্রাণীর শরীর থেকে আত্মা চলে গেলেই সে প্রাণহীন হয়ে পড়ে। কোনো কোনো আত্মা প্রাণীর শরীর থেকে বের হওয়ার পরও ফিরে আসে। আর এই ফিরে আসা আত্মাই হচ্ছে ভূত। ভূতের শরীরী রূপ তার থাকে না। সে থাকে অস্পষ্ট। কিন্তু তার চালচলন স্বাভাবিক জীবিত শরীরের মতো। তাকে স্পষ্ট দেখা যায়না। কিন্তু উপলব্ধি করা যায় ঠিকই। 

ইংরেজিতে গোস্ট শব্দটির প্রাচীন ইংরেজির গাস্ট থেকে উদ্ধৃত। ল্যাটিনে ‘স্পিরিটাস’ শব্দটির অর্থ হলো শ্বাস বা জোরে বাতাস ত্যাগ করা। এমন নানান ব্যাখ্যা রয়েছে। সেই আদিকাল থেকেই ব্যাখ্যাগুলো রয়েছে বিভিন্ন ভাষায়। প্রাচ্যের অনেক ধর্মে পর্যন্ত ভূতের উল্লেখ আছে। যেমন হিন্দুদের পবিত্র গ্রন্থ বেদ-এ ভূতের কথা বলা আছে। হিব্রু তাওরাত ও বাইবেলেও ভূতের উল্লেখ আছে। সেই উনিশ শতকে ‘ক্রিসমাস ক্যারল’ বইতে লেখক চার্লস ডিকেন্স ভূতের কথা তুলে ধরেছিলেন। ভূতের কাহিনী আরও অসংখ্য স্থানেই লিপিবদ্ধ আছে। সংস্কৃতিতে ‘ভূত’ শব্দের অর্থ অতীত। এই বিশাল অতীতকালের ব্যাপ্তির মাঝে কখন কীভাবে ভূতের উদ্ভব হয়েছে সেটা জানা মুশকিল। তবে ভূতের ধারণাটি তো একদিনে হয়নি, যুগে যুগে এটা প্রতিষ্ঠিত। 

তবে আধুনিক বিজ্ঞান ভূত বিষয়টিকে স্বীকার করে না। আবার এমন হাজারো ঘটনা আছে যেগুলোর কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা বিজ্ঞান দিতে পারেনি। আর তখনই দ্বিধা বাড়ে তাহলে কী সত্যি ভূত বলে কিছু আছে কি না। পৃথিবীর নানা প্রান্তের উপকথা, গল্প এবং জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে ভূতের উল্লেখ। বলা হয়েছে ভূত হলো আত্মা বা স্পিরিট। একজন মানুষের মৃত্যুর পর তার অদৃশ্য উপস্থিতি। যদিও তার বিবরণ সর্বত্র এক নয়। কোথাও বায়বীয়, কোথাও পানির মতো, কোথাও ছায়া আবার কোথাও তারা পশুপাখির অবয়বে বিরাজমান। ভূত নামের এই অদৃশ্য অলৌকিক এবং কাল্পনিক অবয়বটির প্রতি কমবেশি সবারই অনেক জিজ্ঞাসা রয়েছে।

এই হ্যালোউইন উৎসবের কথাই যদি ধরি, তাহলে ফিরে যেতে হবে প্রায় দুই হাজার বছরের আগে। সেখানে দেখি এক ইন্দো-ইউরোপিয়ান জনগোষ্ঠী কেল্টিকদের হাত ধরে আসে বিশ্বের ভূতেদের এই দিন। 

অনেকে দাবি করে সে ভূত দেখেছে। কিন্তু সেটা আসলে ভূত ছিল কিনা, বা অন্যকোনো অবয়ব ছিলো সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা আমাদের নেই। কারণ আমরা যা দেখি, তা চোখের পলকে ঘটে যায়। আর এই ভূত থেকেই মূল ভয়ের উৎপত্তি তো বটেই। 

নিউজওয়ান২৪/এমএস

ইত্যাদি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত