ঢাকা, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

বারো বছরেই ই-কমার্স বিশেষজ্ঞ

ইত্যাদি ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:২০, ২০ জুলাই ২০১৯  

জুনেইরা (ছবি: সংগৃহীত)

জুনেইরা (ছবি: সংগৃহীত)

তথ্য প্রযুক্তির অগ্রগতিতে মানুষের জীবনধারায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। শিশুদের মনেও এর প্রভাব এতটাই পড়েছে যে, সামান্য বয়সেই তারা প্রযুক্তি দুনিয়ায় নিজেদেরকে মেলে ধরছে। 

অন্যান্য বাচ্চারা যে সময়ে বাড়িতে বসে গণিত অনুশীলন করে, নামতা শেখে, বারো বছরের জুনেইরা তখন বিভিন্ন কোম্পানিতে, বাণিজ্যিক সংস্থার জন্য সফটওয়্যারের নানাবিধ সমাধান দিচ্ছে।

জুনেইরা খান, দিল্লি পাবলিক স্কুলের নাচারাম শাখার ছাত্রী। সাত বছর বয়স থেকেই এই বিস্ময় বালিকার ওয়েব ডেভেলপমেন্ট আর কোডিং- এর প্রতি আগ্রহ। তার মা একজন তথ্য প্রযুক্তি প্রশিক্ষক। মায়ের ক্লাসে, তার সঙ্গে থাকতে থাকতে এই ঝোঁক তৈরি হয়েছে জুনেইরার।

‘আমার মা যখন বি-টেক ছাত্র ছাত্রীদের পড়ায়, তখন আমিও জোর করি ওদের যা যা পড়াচ্ছে, আমাকেও পড়াতে হবে। ওদের যেসব বিষয় পড়তে হয়, সেসব আমিও শিখতে শুরু করি। ধীরে ধীরে কোডিং করা শিখি এবং আট বছর বয়সে আমার প্রথম ওয়েবসাইট ডেভেলপ করি’, জানায় জুনেইরা। এরপর আরো চার বছর গড়িয়ে গেছে। জুনেইরা এখন জেড এম ইনফোকম নামক সফটওয়্যার সলিউশন সংস্থার চিফ এক্সেকিউটিভ অফিসার, হ্যাঁ, মাত্র বারো বছর বয়সেই।

তার মায়ের সঙ্গে সে চালাচ্ছে এই ফার্ম। বিভিন্ন কোম্পানির জন্য নানা রকম বিজনেস অ্যাপ্লিকেশন নিজেই তৈরি করছে বছর বারোর এই কন্যা। ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন বানাবার জন্য এইচটিএমএল, সিএসএস, পিএইচপি, মাই এসকিউএল ডেটাবেস এবং জাভা স্ক্রিপ্ট-এ তার জ্ঞান আর অভিজ্ঞতা চমকে দিয়েছে তার ক্লায়েন্টদের।

‘জেড এম ইনফোকম –এর সঙ্গে প্রথম মিটিং-এই যখন জানতে পারি আমাদের টেকনিক্যাল পার্টনার হিসবে একটি বারো বছরের মেয়ে আমাদের প্রজেক্ট পরিচালনা করবে, আমরা ভীষণই অবাক হই। কিন্তু আমাদের আরো বিস্মিত করে আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী জুনেইরা খুবই ভালো মানের একটা মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করে’, শহরের এক বাজেট গাড়ির প্রস্তুতকারক সংস্থার গ্রুপ ম্যানেজার আরশাদ হুসেইন জানিয়েছেন। 

জুনেইরা ই-কমার্সে তুখোড় বিশেষজ্ঞ। প্রতিদিন স্কুলের পর অন্তত ঘণ্টা তিনেক করে এই বিষয়ে চর্চা করে সে। নানা নামকরা প্রতিষ্ঠানের জন্য ই-কমার্স বিষয়ক সমাধান দিয়েছে সে। এর মধ্যে জি এস বিজকার্ট, শহরের বিখ্যাত ফ্যাশন কোম্পানি ‘রিদম’ সহ নানা সংস্থার জন্য কাজ করেছে এই খুদে। ‘এখন আমি যে অ্যাপটি বানাচ্ছি, তা বিভিন্ন সংস্থার টিম ম্যানেজমেন্ট-এ সাহায্য করবে। কর্মীদের কাজ অ্যাসাইন করবে, লক্ষ্য তৈরি করে দেবে তাদের, কর্মীদের কাজের মূল্যায়ন করবে ইত্যাদি’ জানাচ্ছে ছোট্ট মেয়েটি। 

অ্যান্থনি রবিনের ‘হুইজ কিড’ বইটি তাকে অনুপ্রাণিত করে, ইনফোসিস উইপ্রোর মত কোম্পানির উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারী হতে চায় এই বিস্ময় বালিকা। গর্বিতা মা নিসাত খান জানান ‘ভবিষ্যতে মেয়েকে কোনো বাণিজ্য উদ্যোক্তা হিসেবে দেখতে পেলে খুশি হব’। 

প্রসঙ্গত, জুনেইরার বাবা পেশায় একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। মায়ের মতই এখন জুনেইরা ক্লাস নেয় বি-টেক ছাত্রছাত্রীদের। কোডিং-এর মত জটিল বিষয় শেখাচ্ছে ব্যাচের পর ব্যাচ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের। তারাও মন দিয়ে শিখে নিচ্ছে এই ছোট্ট দিদিমণির কাছে।

সূত্র: বাংলা লাইভ ডট কম

নিউজওয়ান২৪.কম/এমজেড

ইত্যাদি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত