ঢাকা, ১২ নভেম্বর, ২০২৫
সর্বশেষ:

পুরান ঢাকায় মামুন হত্যা, দুই শুটারসহ গ্রেপ্তার ৫

নিউজওয়ান২৪ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০১:৩৭, ১২ নভেম্বর ২০২৫  

পুরান ঢাকায় তারিক সাইফ মামুন হত্যায় অংশ নেওয়া দুই শুটারসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার দুজন সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। 

গ্রেপ্তার দুই শুটার হলেন- কুত্তা ফারুক ও রবিন। এ ছাড়া, ঘটনাস্থলে তাদের সঙ্গে সহযোগী হিসেবে থাকা রুবেল নামে একজন গ্রেপ্তার হয়েছে। কুত্তা ফারুক ও রবিন দুজন পেশাদার শুটার হিসেবে কাজ করেন। বাকি দুইজনের নাম জানা যায়নি।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, তাদের সোমবার (১০ নভেম্বর) নরসিংদীর ইটাখোলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে তাদের সিলেটের মৌলভীবাজার থেকে অনুসরণ করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাদের নিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চালায় ডিবি দল। এ সময় ঢাকার রায়েরবাজার এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি পিস্তল ও ছয় রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।  

এর আগে, গত সোমবার পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ এলাকায় তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। স্বজনরা জানান, পুরোনো একটি মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়ে রাজধানীর আফতাবনগরের বাসায় ফেরার পথে সন্ত্রাসীরা মামুনকে গুলি করে হত্যা করে।  

ঘটনার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, মামুন সকাল ১০টা ৫২ মিনিট ৪২ সেকেন্ডে গলি থেকে মূল সড়কের দিকে একা হেঁটে যাচ্ছিলেন। এরপর ১০টা ৫৩ মিনিট ১১ সেকেন্ডে তাকে সড়ক থেকে দৌড়ে ফিরতে দেখা যায়। এসময় আশপাশের পথচারীরা গুলির শব্দে ছোটাছুটি করতে থাকেন। তিন সেকেন্ড পর দেখা যায়, দুই ব্যক্তি গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে আসছেন। তারা মামুনকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়েন। পরে দুজন অস্ত্র কোমরে গুজে দৌড়ে চলে যান। তখন সড়কে অনেকেই চলাচল করছিলেন।

প্রসঙ্গত, চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় ২০ বছরের বেশি সময় জেল খেটে ২০২৩ সালে জামিনে মুক্তি পান মামুন। জামিনের তিন মাসের মাথায় ১৮ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় তাকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় একদল সন্ত্রাসী। তখন পাশ দিয়ে যাওয়া মোটরসাইকেল আরোহী ভুবন চন্দ্র শীলের মাথায় একটি গুলি লাগে। পরে ২৫ সেপ্টেম্বর ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে ভুবন মারা যান। এ ঘটনার পর পুলিশ বলেছিল, গুলি ছুড়েছিলেন কারাবন্দি শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনের লোকজন। ইমন ও মামুন এক সময় ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর ও তেজগাঁও এলাকার আতঙ্ক ছিলেন। তাদের গড়ে তোলা বাহিনীর নাম ছিল ‘ইমন-মামুন’ বাহিনী। তারা দুজনই চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী ও সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ভাই সাঈদ আহমেদ টিপু হত্যা মামলার আসামি।

পুলিশের ভাষ্যমতে, নিহত মামুন তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। ‘ইমন-মামুন’ গ্রুপের অন্যতম প্রধান এই মামুন। একসময় ছিলেন আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনের সহযোগী। অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল।

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত