ঢাকা, ২৯ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ:

পড়া মনে রাখার কিছু কৌশল

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৮:৩৫, ১৬ জানুয়ারি ২০১৯  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

সবার একটা কমন অভিযোগ, ‘পড়লে মনে থাকে না। এতো পড়ি কিন্তু মনে রাখতে পারি না।’ 

হ্যাঁ এটা ঠিক যে পড়া ১০০% মুখস্ত করা ঠিক না। বরং বুঝে পড়তে হয়। তবুও কিছু জিনিস আমাদের মনে রাখা লাগবেই।

তাই ১০টি সহজ কৌশল নিয়ে আজ লিখব। যা পড়া মনে রাখতে সাহায্য করবে।

চলুন তাহলে, পড়া মনে রাখার কৌশলগুলো জেনে নেয়া যাক- 

(১) যা পড়েছি তা অন্যকে শেখানো:
পড়া মনে রাখার জন্য প্রাচীনকাল থেকেই এ পদ্ধতিটি বেশ জনপ্রিয়। নিজে যা পড়েছি বা জেনেছি তা অন্যকে শেখানোর মাধ্যমে মস্তিষ্কে আরো ভালোভাবে গেঁথে যায়। তাছাড়া অন্যকে শেখানোর ফলে নিজের দক্ষতা প্রকাশ পায় এবং পড়াটি ভালভাবে আয়ত্ত হয়েছে কিনা তাও বুঝা যায়।

(২) পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো:
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ব্রেইন যেকোন ইনফরমেশন বা তথ্যকে মেমরি বা স্মৃতিতে পরিণত করে ঘুমানোর সময়। তাই পড়া মনে রাখার জন্য পড়ালেখার পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোও জরুরি। সাধারণত একজন সুস্থ ব্যক্তির দিনে ৮ ঘন্টার মত ঘুমানো উচিত। এর থেকে কম ঘুমালে পড়া মনে রাখার ক্ষমতা কমে যায়।

(৩) নিমনিক তৈরী করা:
আমাদের ব্রেইন আগোছালো জিনিস মনে রাখতে পারে না। তাই কোন কিছু ছক বা টেবিল আকারে সাজিয়ে নিলে কিংবা কবিতার ছন্দ বানিয়ে পড়লে তা সহজেই মনে রাখা যায়। পড়া মনে রাখার এই কৌশল কে নিমনিক (mnemonic) বলা হয়।

(৪) পড়ার জন্য সঠিক সময় নির্বাচন করা:
অনেকেরই ধারণা সারাদিন-সারারাত পড়লেই পড়া বেশি মনে থাকে। এটা নিতান্তই ভুল ধারণা। কারণ সবসময় আমাদের ব্রেইন একইভাবে কাজ করতে পারে না। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, বিকালের পর আমাদের ব্রেইনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাই বিকালের পরে অর্থাৎ সন্ধ্যায় বা রাতে পড়া বেশি কার্যকর হয়।

(৫) কনসেপ্ট ট্রি ব্যবহার করে পড়া:
কোন বিষয় পড়ার আগে অধ্যায়গুলোকে কয়েকটি অংশে ভাগ করে নিলে পড়তে সুবিধা হয়। একে একটি গাছের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। গাছটিকে একটি অধ্যায় বিবেচনা করে প্রতিটি পাতায় অংশ গুলোর একটি করে সারমর্ম লিখে পড়লে পড়া মনে রাখতে সহজ হয়। এ পদ্ধতিকে কনসেপ্ট ট্রি বলা হয়। পড়া মনে রাখতে এটি বেশ কার্যকর।

(৬) লিখে লিখে বা ছবি এঁকে পড়ার অভ্যাস করা:
কোন জিনিস পড়ার সাথে সাথে লিখলে বা ছবি আঁকলে পড়ার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়। কারন নিউরো সায়েন্সের মতে, কিছু লিখলে বা ছবি আঁকলে ব্রেইনের অধিকাংশ জায়গা উদ্দীপিত হয় এবং ছবি বা লেখাটিকে স্থায়ী মেমরিতে রূপান্তরিত করে ফেলে। ফলে পড়াটি মস্তিষ্কতে দীর্ঘস্থায়ী হয়। সাধারণভাবেও বুঝা যায়, বইতে যেসব বিষয় ছবি দিয়ে ব্যাখ্যা করা হয় তা-ই আমাদের বেশি মনে থাকে। পরীক্ষার সময়ও চোখের সামনে বইয়ের ছবিটিই ভেসে উঠে। তাই লিখে বা ছবি এঁকে পড়া অনেক কার্যকর।

(৭) বেশি বেশি পড়া ও অনুশীলন করা:
আমাদের ব্রেইন ক্ষণস্থায়ী স্মৃতি গুলোকে তখনই দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিতে পরিণত করে যখন তা বারবার ইনপুট দেয়া হয়। বারবার ইনপুট দেয়ার ফলে ব্রেইনের স্মৃতি গঠনের স্থানে গাঠনিক পরিবর্তন হয় যা দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতি তৈরীতে সাহায্য করে। তাই বেশি বেশি পড়া ও অনুশীলন করা পড়া মনে রাখার অন্যতম উপায়। এক্ষেত্রে 10 Minute School-এর এডমিশনের মডিউলটি বিশ্ববিদ্যালয় এডমিশন পরীক্ষার্থীদের অনেক সহায়তা করতে পারে।

(৮) কালারিং বা মার্কার পেন ব্যবহার করে দাগিয়ে পড়া:
আমাদের মধ্যে অনেকেই মার্ক করে বা দাগিয়ে পড়ে। এটাও পড়া মনে রাখতে বেশ কার্যকর। মার্ক করার ফলে কোন শব্দ বা বাক্যের প্রতি আকর্ষণ ও আগ্রহ বেড়ে যায়। পাশাপাশি এর উপর ব্রেইনের ভিজ্যুয়ালিটি ইফেক্টও বেড়ে যায় যা পড়াকে মনে রাখতে সহায়তা করে।

৯. পড়ার প্রতি আকর্ষণ অনুভব করা:
যে বিষয়টি পড়ব তার প্রতি আকর্ষণ জাগাতে হবে। কিংবা আকর্ষণীয় উপায়ে পড়ার চেষ্টা করতে হবে। এতে পড়া সহজে মনে থাকবে।

১০. পড়তে বসার আগে ১০ মিনিট হাঁটা:
পড়ার টেবিলে বসার পূর্বে ১০ মিনিট হাঁটলে বা হালকা ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে পড়া মনে রাখতে বেশ সুবিধা হয়। ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, পড়ার পূর্বে ১০ মিনিট হাঁটলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা প্রায় ১০ শতাংশ পরিমাণ বেড়ে যায়। তাহলে একটু হাঁটার পরেই শুরু হোক পড়ালেখা।

চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মতে, মানুষ কোনো কিছুর প্রতি আকর্ষণ অনুভব করলে তা সহজেই মস্তিষ্কে মেমরি বা স্মৃতিতে রূপান্তরিত হয়ে যায় এবং তা স্মৃতিতে দীর্ঘস্থায়ী হয়।

নানা রঙের হাইলাইটার ব্যবহার করা পড়াশোনায় মন আনতে অনেক সাহায্য করতে পারে

নিউজওয়ান২৪/এনআর

ইত্যাদি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত