ঢাকা, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

জন্ম নিবন্ধন...

প্রকাশিত: ১১:৫৫, ৪ অক্টোবর ২০১৮  

 

জন্ম নিবন্ধন কী, কেন এবং কীভাবে করবেন?

জন্ম নিবন্ধন হলো জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন, ২০০৪ (২০০৪ সনের ২৯ নং আইন) এর আওতায় একজন মানুষের নাম, লিঙ্গ, জন্মের তারিখ ও স্থান, বাবা-মায়ের নাম, তাদের জাতীয়তা এবং স্থায়ী ঠিকানা নির্ধারিত নিবন্ধক কর্তৃক রেজিস্টারে লেখা বা কম্পিউটারে এন্ট্রি প্রদান এবং জন্ম সনদ প্রদান করা। 

জন্ম নিবন্ধন আইনের বিধান অনুযায়ী এই বিধি লংঘনকারী নিবন্ধক বা ব্যক্তি অনধিক ৫০০ (পাঁচশত টাকা) অথবা অনধিক দুইমাস বিনাশ্রম কারাদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারেন।

জন্ম নিবন্ধনের গুরুত্ব-

জন্ম নিবন্ধন হলো একটা মানুষের প্রথম রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। রাষ্ট্র এই ভাবে স্বীকার করছে যে, হ্যাঁ, তুমি শিশু রূপে এ রাষ্ট্রের একজন ভবিষ্যৎ নাগরিক হয়ে এসেছো। তোমাকে এ রাষ্ট্রের স্বীকৃত নাগরিকের  মর্যাদা ও সকল সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে।

বয়স প্রমাণ ও সেসব ক্ষেত্রে জন্মনিবন্ধন কার্ড প্রদর্শন বাধ্যতামূলক-

> পাসপোর্ট ইস্যু

> স্কুলগুলে ভর্তি

> বিবাহ নিবন্ধন

> শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি

> সরকারী, বেসরকারী ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে নিয়োগদান

> ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু

> ভোটার তালিকা প্রণয়ন

> জমি রেজিষ্ট্রেশন

> ব্যাংক একাউন্ট খোলা

> আমদানী বা রপ্তানী বা উভয় লাইসেন্স প্রাপ্তি

> গ্যাস, পানি, টেলিফোন ও বিদ্যুৎ সঙযোগ প্রাপ্তি

> করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) প্রাপ্তি

> ঠিকাদারী লাইসেন্স প্রাপ্তি

> বাড়ির নক্সা অনুমোদন

>গাড়ি রেজিষ্ট্রেশন

> ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি

> জাতীয় পরিচয়পত্র প্রাপ্তি

> বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ

> শিশু শ্রম প্রতিরোধ 

জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম-

শিশু জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক। শিশু জন্মের ২ বছরের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন না করালে বাবা-মায়ের জন্য আইনে জরিমানার বিধান আছে। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কোনরকম ফি ছাড়া জন্ম নিবন্ধন করার সুযোগ দেয়া হয়। এ সময় বাড়ানো হয়েছিল ২০১০ সালের জুন পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে দেশের অধিকাংশ শিশু জন্ম নিবন্ধনের আওতায় এসেছে। জুনের পর জন্মনিবন্ধনের জন্য সরকার একটি ফি ধার্য করেছে। তবে ২ বছর পর্যন্ত শিশুদের জন্মনিবন্ধন যেকোন সময় বিনা ফিতে করানো যাবে। 

কোথায় আবেদন করবেন-

> ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়
   
> পৌরসভা
   
> সিটি কর্পোরেশন অফিস
   
> সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ওয়ার্ড কমিশনারের অফিস 

যে সকল কাগজপত্র প্রদান করতে হয়-

> যদি কোন হাসপাতাল বা ক্লিনিকে জন্মগ্রহণ করে থাকে তবে সেখানকার সার্টিফিকেট/ছাড়পত্র।

> এস.এস.সি সনদ এর ফটোকপি/ পাসপোর্টের ফটোকপি/আইডি কার্ডের ফটোকপি এবং এলাকার জনপ্রতিনিধী যেমন-ওয়ার্ড কমিশনার/ ইউনিয়ন পরিষদ/ পৌরসভার  চেয়ারম্যান কর্তৃক নাগরিকত্ব সনদ এর ফটোকপি।

জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ-

জন্ম নিবন্ধন আবেদন পত্র জমা দেওয়ার সময় সনদ প্রদানের সম্ভাব্য একটি তারিখ একটি কুপনে লিখে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে কুপন প্রদান করে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করতে হয়। জন্ম নিবন্ধন সনদ একটি শক্ত কাগজ (আর্ট পেপার) যেটার উপরে আপনার নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, জন্মস্থান, পিতা-মাতার নাম সহ যাবতীয় তথ্য ছাপানো আছে।  নিচে  সংশি­ষ্ট অফিসারদের স্বাক্ষর থাকে। 

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন প্রক্রিয়া-

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধনের জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন (http://bris.lgd.gov.bd/pub/)। বিভিন্ন ধাপে এই নিবন্ধন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়। প্রথমে নিবন্ধনকারীর জন্ম স্থান বা স্থায়ী ঠিকানার বিভাগ, জেলা, প্রভৃতি ধাপ পার হয়ে ওয়ার্ড পর্যন্ত নির্বাচন করতে হয়। 

অনলাইন জন্ম নিবন্ধনের আবেদন ফরম প্রথমে বাংলায় ও পরবর্তীতে ইংরেজিতে পূরণের পর প্রয়োজনীয় সম্পাদনা করে সংরক্ষণ বাটনে ক্লিক করুন। সংরক্ষণ বাটনে ক্লিক করলেই আবেদন পত্রটি সংশ্লিষ্ট নিবন্ধক কার্যালয়ে স্থানান্তিরত হয়ে যায়, আবেদনকারীর আর কোনো সংশোধনের সুযোগ থাকে না। 

অতঃপর পরবর্তী ধাপে প্রিন্ট বাটনে ক্লিক করলে আবেদন পত্রের মুদ্রিত কপি পাবেন। সনদের জন্য ১৫ দিনের মধ্যে উক্ত আবেদন পত্রে নির্দেশিত প্রত্যয়ন সংগ্রহ করে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্রের সত্যায়িত কপিসহ নিবন্ধক অফিসে যোগাযোগ করুন।

নিউজওয়ান২৪/আরএডব্লিউ

ইত্যাদি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত