ঢাকা, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

কারচুপির অভিযোগকারী সাখাওয়াত হেরেছেন নিজের কেন্দ্রেও

জেলা সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ১১:০৮, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০২:১৪, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬

পরাজয়ে বিমর্ষ বিএনপি মেয়রপ্রার্থী সাখাওয়াত

পরাজয়ে বিমর্ষ বিএনপি মেয়রপ্রার্থী সাখাওয়াত

পরাজিত হওয়ার পর সূক্ষ্ণ কারচূপির অভিযোগকারী নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান তার নিজের কেন্দ্রেও হেরেছেন আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াৎ আইভীর কাছে।

বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মোট ভোটের হিসেবে তিনি আওয়ামী লীগের আইভীর কাছে হেরেছেন প্রায় আশি হাজার ভোটের ব্যবধানে।

এদিকে, ভোট গণনায় দেখা গেছে, নিজে যে কেন্দ্রে ভোট দেন অর্থাৎ নিজ মহল্লার কেন্দ্রেও প্রায় এক হাজার ভোটে হেরেছেন সাখাওয়াত।

চাষাঢ়ার ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন আদর্শ স্কুলের দুটি কেন্দ্রে সাখাওয়াতের ধানের শীষ পেয়েছে ৯৬৮ ভোট (৫০৪ ও ৪৬২)। আর আইভীর নৌকা প্রতীক পেয়েছে ১ হাজার ৯৩০ ভোট (১২৫২ ও ৬৭৮)।

রিটার্নিং কর্মকর্তা নুরুজ্জামান তালুকদার বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এ স্কুলের দুই কেন্দ্রের ফল ঘোষণা করেন। আর পুরো সিটি কর্পোরেশনের সবগুলো কেন্দ্রের হিসেবে সাখাওয়াত হেরেছেন।

আর মোট ভোটের হিসেবে ১৭৪টি কেন্দ্রে আইভী পেয়েছেন এক লাখ ৭৪ হাজার ৬০২ ভোট। সাখাওয়াত পেয়েছেন ৯৬ হাজার ৭০০ ভোট।

সাখাওয়াতের অভিযোগ
সাখাওয়াত বলেছেন, এ নির্বাচনে অনেক সূক্ষ্ণ কারচুপি হয়েছে যার কারণে ধানের শীষকে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় নগরীর শহরের শায়েস্তা খান সড়কে বিএনপির নির্বাচনী মিডিয়া সেলে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

উল্লেখ্য, এবার সিটি করপোরেশন নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হয়েছে। নানা নাটকীয়তার পর আইভী নৌকা ও সাখাওয়াত ধানের শীষ- দেশের প্রধান দুটি দলের দুই প্রার্থী দলীয় প্রতীকে নাসিক মেয়র নির্বাচনে অংশ নেন।

বিএনপি ও আওয়ামী লীগ উভয়েই এই নির্বাচনকে নিজেদের জনপ্রিয়তার পরীক্ষা হিসেবে নেয়। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় প্রার্থীর প্রচারণায় নারায়ণগঞ্জে হাজির হন কেন্দ্রীয় স্তরের নেতারাও। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সর্বোচ্চ নেতারাও দুই দলের প্রার্থীসহ স্থানীয় নেতাদের ডেকে নিয়ে যে কোনো মূল্যে জয় নিশ্চিতের কঠোর নির্দেশনা দেন।

নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে অনেকের মনে শংকা থাকলেও বৃহস্পতিবার কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ও অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সুষ্ঠুভাবে ভোটদানের নজির সৃষ্টি করে নির্বাচন কমিশন। এমন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোট চলাকালে বিকেল পর্যন্ত ভোট নিয়ে বড় ধরনের কোনো অভিযোগ তুলেননি দুই প্রার্থী। কিন্তু রাতে ফল ঘোষণার ধারাবহিকতায় ৭৭ হাজার ভোটের বিশাল ফারাক স্পষ্ট হতেই অভিযোগে সরব হয়ে ওঠেন সাখাওয়াত। এসময় সাংবাদিকদের তিনি সাখাওয়াত বলেন, নির্বাচন কমিশন হতে স্বাক্ষরিত ফলাফল দেখে আমি আরো বিস্তারিত বলবো। তবে আমার কাছে খবর আছে অনেক কেন্দ্রে সূক্ষ্ণ কারচুপি হয়েছে। যেমন অনেক কেন্দ্রে ১ হাজার ভোট কাস্ট হয়েছে কিন্তু দেখা গেছে নৌকা পেয়েছে ৮শ ও ধানের শীষ পেয়েছে ৫শ।

সাখাওয়াত অভিযোগ করে বলেন, আমি শুরু থেকেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম। কারণ, এ নির্বাচন কমিশন সরকারের নির্দেশনাতেই চলেছে, সেটা আজ ভোটে প্রমাণিত হয়েছে। কারচুপির মাধ্যমেই ফলাফল পাল্টে দিয়েছে।

এ বিষয়ে বিজয়ী আইভীর কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

তবে তার নির্বাচনী প্রচারণা শিবিরের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সাখাওয়াতের এই অভিযোগের প্রমাণের অপেক্ষায় থাকবো আমরা, থাকবে দেশবাসী। তবে আশা করা যায় তিনি অচিরেই বুঝতে পারবেন তার অভিযোগ ডাহা মিথ্যা। কারণ, জনসেবার দায়িত্ব পালন আর ভাল কাজ করে পাওয়া জনপ্রিয়তাই জিতিয়েছে আইভীকে।

ভোট পড়েছে ৬৩.৬৫%
রিটার্নিং অফিসার নুরুজ্জামান তালুকদার জানান, এবার নাসিক নির্বাচনে শতকরা ৬৩ হতে ৬৫ ভাগ ভোট পড়েছে। ২ লাখ ৯৬ হাজার ৩৬টি ভোট গৃহীত হয়।

২৭ ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৩১জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৬২জন ও মহিলা ভোটার ২ লাখ ৩৫ হাজার ২৬৯জন।
নিউজওয়ান২৪.কম/একে

ইত্যাদি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত