ঢাকা, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫
সর্বশেষ:
টানা পাঁচদিন বৃষ্টির আভাস মুসলিম বিশ্বকে ‘ন্যাটো-ধাঁচের’ নিরাপত্তা কাঠামো গঠনের প্রস্তাব তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল পাঠাচ্ছে চীন

কেউ কথা রাখেনা, কেন!

আসিফ ইকবাল কাজল, ঝিনাইদহ

প্রকাশিত: ১৪:৩৯, ২৯ আগস্ট ২০১৬   আপডেট: ১৫:২৮, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

মসলেম উদ্দীন শাহ            -ছবি: আসিফ ইকবাল কাজল

মসলেম উদ্দীন শাহ -ছবি: আসিফ ইকবাল কাজল

ভোটের সময় মেম্বর-চেয়ারম্যানরা বলেছিলেন, ভোট দাও, বয়স্ক ভাতা পাবে। সংসদ নির্বাচনেও একইভাবে ভোট নিয়েছিলো নেতারা মসলেম উদ্দীন শাহের কাছ থেকে।

কিন্তু ভোট চলে গেছে সেই কবে, কেউ কথা রাখেনি। বয়স এখন সত্তরের কাছাকাছি। পাথরের মতো পেটানো শরীরটি ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে পড়ছে তার। তারপরও ক্ষুধার যন্ত্রণা আর অভাবের তাড়নায় মসলেমকে খোয়া ভেঙ্গে জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে।

মসলেম শাহের বাড়ি ঝিনাইদহ শহরের পাগলাকানাই এলাকার গয়াসপুর বটতলা কলোনিতে। স্ত্রী জহুরা খাতুন অ্যাজমার রোগী। জানালেন, তাকে নিয়ে মাঝেমধ্যেই যমে-মানুসষে টানাটানি অবস্থা পড়ে যায়। আরেক বাস্তব হচ্ছে, দুই ছেলে বিয়ে করে আলাদা। তারা নিজেরা্নই জেদের পেট বাঁচাতে বেদিশা।

তিন মেয়ের মধ্যে বড়টা আবার বিধবা হয়ে বাড়িতে বসে আছে। বাবার সঙ্গে এখন মেয়েও খোয়া ভাঙ্গে। এই ভাদ্রের তালা পাকানো রোদে বসেও উদোম গায়ে ভেঙে চলেছে জীবনের খোয়া- জীবীকার্জনের পাথেয় যে এটাই।

মেম্বর-চেয়ারম্যানদের কাছে বয়স্ক ভাতা চেয়ে কোনো লাভ হয়নি। বয়স্ক ভাতা প্রকল্প মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিজের ইচ্ছায়, নিজের তৎপরতায় গড়া। তবে স্থানীয় রাজনীতির কুশীলব আর প্রভাবশালী যাদের হাতে এটা বিতরণের চাবিকাঠি- তাদের কাছে মসলেম উদ্দীনের বয়স্ক ভাতা পাবার যোগ্যতা মনে হয় এই প্রায় সত্তর বছরেও হয়নি। খুটোর জোর নেই বা তিন বেলা হুজুর হুজুর করার সময় নেই বলে কেউ পাত্তা দেয় না...

তবে একটা প্রশ্ন কুকুরের লেজের মতো বারবার পকিয়ে ওঠে মনের ভেতর- আচ্ছা, কেউ কথা রাখে না কেন! মসলেমদের দিকে তাকালে কি তাদের দামি মোবাইলের বিলে টান পড়বে, নাকি মোটরসাইকেলে-কারের গ্যাস কেনার টাকায় শর্ট পড়বে, স্যাটেলাইট চ্যানেলে দেখা হাল ফ্যাশানের দামি কোট-কোটি কিনতে সমস্যা হবে!

আচ্ছা, তারা না হয় ভোটের সময়ে ফের নজর দেবেন, কিন্তু তাই বলে কি সরকারি কর্মকর্তাদেরও কোনো দায়িত্ব নেই! নেতারা না বললে তারা কিছু করবেন না- এতটাই অণুগত তারা! তাদের কি মানবতাও নেই? নিশ্চয়ই আছে। এতটা নির্দয় তারা হবেন না, আশা করি।

আরও আশা  করা যায়, ঝিনাইদহ সমাজসেবা অধিদপ্তরের সৎ ও নিষ্ঠাবান কর্মকর্তারা হতদরিদ্র মসলেম শাহকে বঞ্চিত করবেন না। এবার তারা নড়েচড়ে বসবেন। গদি আঁটা চেয়ারে, ছাদের নিচে, অ্যান-এসির হায়ওয়ায় বসা তো কম হয়ে যাবে না তাতে!

মসলেম উদ্দীনের সঙ্গে যোগাযোগ 01610209710 (নাতি মানিক)।

নিউজওয়ান২৪.কম/একে

ইত্যাদি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত