ঢাকা, ২৯ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ:

হেফাজতের হুঁশিয়ারি

নিজস্ব সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ২০:৪১, ২৭ মার্চ ২০২১  

সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতারা ছবি সংগৃহীত

সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতারা ছবি সংগৃহীত


হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের বিক্ষোভ মিছিলে হামলা ও সংঘর্ষে নেতাকর্মী নিহতের ঘটনার প্রতিবিাদে ডাকা রবিবারের (২৮ মার্চ) হরতালে বাধা দেওয়া হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছে দলটি।

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বলেছেন, ‘আগামীকাল সরকারি দলের (আওয়ামী লীগ) কোনো কর্মসূচি নেই। কাজেই আমাদের হরতালের দিন সরকারি দলের কাউকে রাজপথে দেখতে চাই না। কোনো হেলমেট বাহিনীকেও দেখতে চাই না।’

শনিবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যায় খিলগাঁওয়ের একটি মাদরাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। মামুনুল হক বলেন, ‘শুক্রবারের (২৬ মার্চ) মতো আবার যদি কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে, কোনো উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এর দায়ভার সরকারকে নিতে হবে। এমন কোনো কিছু ঘটলে আগামীতে লাগাতার কঠোর কর্মসূচি দেবে হেফাজত। এ জন্য সরকারকে অনুরোধ করব, এমন কোনো কিছু করবেন না যাতে ক্ষুব্ধ জনগণ আরও বেশি ক্ষুব্ধ হয়।’

তিনি বলেন, ‘স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমাদের আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে নয়। এই আন্দোলন নাস্তিক-মুরতাদের বিরুদ্ধে। অথচ সরকার এই আন্দোলনকে প্রভাবিত করে আমাদেরকে তাদের প্রতিপক্ষ বানিয়েছে। এর প্রতিবাদের ভাষা আমাদের জানা নেই।’

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে মামুনুল হক বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন করতে চাই। আমাদেরকে সহযোগিতা করুন। কোনো সন্ত্রাসী, হেলমেট বাহিনীকে প্রশ্রয় দেবেন না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।’

পূর্বঘোষণা অনুযায়ী শনিবার সারাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে হেফাজত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘হরতালে সারাদিন রাজপথে হেফাজত কর্মীরা থাকবেন। তারা শান্তি-শৃঙ্খলায় কাজ করবেন।’

চট্টগ্রামের হেফাজতের নেতাকর্মীরা প্রথমে পুলিশের ওপর হামলা করেছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মামুনুল হক বলেন, ‘এটা মিথ্যা প্রচারণা। এরপরও আমরা অধিকতর তদন্ত করে দেখব।’

সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য রাখেন হেফাজতের মহাসচিব নুরুল ইসলাম জেহাদি। তিনি বলেন, ‘সংঘাতমূলক কোনো কর্মসূচি আমাদের ছিল না। ইচ্ছা করলে আমার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে প্রতিহত করতে পারতাম। বিমানবন্দর ঘেরাও করতে পারতাম। কিন্তু সেটা করিনি। এরপরও আমাদের ওপর অনাকাঙ্ক্ষিত হামলা চালানো হয়েছে, যা দুঃখজনক।’

উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বাংলাদেশে দুদিনের সফরে আসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মোদির এ সফরের প্রতিবাদে শুক্রবার বায়তুল মোকাররমে বিক্ষোভ করে হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন ইসলামী সংগঠন। এই বিক্ষোভে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে চট্টগ্রাম হাটহাজারী মাদরাসার ছাত্ররাও বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হয়।

সেখানে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলায় চার জনের মৃত্যু হয়। চট্টগ্রামে মাদরাসাছাত্রদের ওপর পুলিশের হামলার খবরে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে ব্রাহ্মণবাড়িয়াও। জেলা সদরের বিভিন্নস্থানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষুব্ধরা। বিক্ষোভের ঘটনায় আশিক (২০) নামে এক জন নিহত হয়েছেন। বিক্ষোভ মিছিলে হামলা ও পাঁচ জনের মৃত্যুর গতকাল (শুক্রবার) হরতালের ডাক দেয় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।

নিউজওয়ান২৪.কম/রাজ

আরও পড়ুন