ঢাকা, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

‘জনগণকে বাদ দিয়ে সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছে সরকার’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০০:৩৩, ২৪ মার্চ ২০২১  

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর


জনগণকে বাদ দিয়ে সরকার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে হলি ফ্যামেলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবীব-উন-নবী খান সোহেলকে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই অভিযোগ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছে জনগণকে বাদ দিয়ে। জনগণ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এই সুবর্ণজয়ন্তীর যে অনুষ্ঠানগুলো তারা করছে এখানে মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো অবস্থান নেই। এমনকি রাজনৈতিক দলগুলোরও কোনো অবস্থান নেই। শুধু মাত্র বিদেশি মেহমানদের নিয়ে এসে দেখানো হচ্ছে। তাদের দিয়ে বলানো হচ্ছে, বাংলাদেশে উন্নয়নের লহরি বয়ে যাচ্ছে।

রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে ভারত, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, নেপাল ও ভুটানের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের আগমনকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের প্রতিবেশী চারটি বন্ধু দেশ এসে গেছেন। তাদের রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী এসেছেন এবং আগামী ২৬ মার্চ আমাদের বন্ধু দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আসবেন। আমরা সমসময়ই বিদেশি বন্ধুদের স্বাগত জানাই এবং সুবর্ণজয়ন্তীতে অবশ্যই আমরা তাদেরকে স্বাগত জানাব।

বিএনপি বছরব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণের কথা উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, আমরা সেই কর্মসূচিগুলো পালন করছি। কিন্তু দুভার্গ্যক্রমে গত ১৭ তারিখ থেকে বিদেশি মেহমানরা আসবেন সেই কারণ দেখিয়ে আমাদের কর্মসূচিগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মানুষের চলাচলে বাঁধার সৃষ্টি করা হয়েছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী এখানে কী সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে আসছেন নাকি পশ্চিমবঙ্গের বিধান সভার নির্বাচনি প্রচারণায় আসছেন?— এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, পশ্চিম বাংলার পত্রিকাগুলো, ভারতের পত্রিকা, আমাদের দেশের পত্রিকাগুলোতে সেই ধরনের ইঙ্গিতই আমরা পাচ্ছি। মূলত তার (নরেন্দ্র মোদী) এই ভিজিটের মূল্য লক্ষ্য হচ্ছে ,তাদের যে ভোট পশ্চিম বাংলায় রয়েছে সেই ভোটের জন্য তিনি চেষ্টা করছেন। এটা পত্র-পত্রিকায় লেখা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা বরাবরই বলে এসছি যে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও উন্নত করতে হলে বাংলাদেশে সঙ্গে ভারতের যে অভিন্ন নদীগুলো রয়েছে তার মীমাংসা হওয়া উচিত, সীমান্তে হত্যা বন্ধ হওয়া উচিত। কানেকটিভিটিতে আমার কী লাভ হচ্ছে সেটা জনগণের কাছে স্পষ্ট হওয়া উচিত। আমরা এখনো পরিষ্কার করে বলতে চাই যে, সীমান্তে হত্যা অবিলম্বে বন্ধ হোক। এটা অমানবিক। পৃথিবীর কোনো দেশে এই ধরনের ঘটনা আছে কি না আমরা জানি না।

মির্জা ফখরুল বলেন, তিস্তা নদীর চুক্তি হচ্ছে না, ফেনী নদীর পানি একতরফাভাবে নিয়ে গেছে। সেতুও তৈরি হচ্ছে কানেকটিভিটিতে। অথচ আমাদের মৌলিক সমস্যাগুলোর কোনো সমাধান হচ্ছে না। আমরা এখনো প্রত্যাশা করি, বাংলাদেশ সরকার আমাদের দাবিগুলো সঠিকভাবে উপস্থাপন করে আমাদের কোটি কোটি মানুষের সমস্যা সমাধান করবেন।

দেশে করোনা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোতে বেড নাই। এতদিন ধরে কী করলেন? বেড নাই কেনো? কখন থেকে আমরা বলছিলাম। সেই বেড তো তারা যোগাড় করতে পারেননি। চিকিৎসা ঠিক মতো দিতে পারেন না। জনগণের সমস্যা বাড়ছে, করোনা মারাত্মক হারে বেড়ে গেছে। আমাদের অনেক নেতা করোনায় আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেছেন, অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই করোনা উদ্ভুত পরিস্থিতি সরকার মোকাবিলা করতে সক্ষম হচ্ছে না এজন্য যে, তাদের নিয়তেরই ঠিক নাই। তাদের তো লক্ষ্য একটাই কখন কোত্থেকে তারা চুরি করবে। প্রত্যেকটা বিষয় যখন দুর্নীতি করতে চায় তখন তো সমাধান করা সম্ভব না। আর করোনার মতো একটা সমস্যা যেটা সারা বিশ্বে আজকে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে মানবসভ্যতার জন্য সেটাকে সমাধান করার জন্য যে আন্তরিকতা, যে নিষ্ঠা এর কোনটাই নাই সরকারের।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার।

আরও পড়ুন