ঢাকা, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নয়, সরকার ব্যস্ত মুজিববর্ষ নিয়ে: ফখরুল

প্রকাশিত: ১০:৪০, ৮ মার্চ ২০২০  

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিএনপি-ছবি: সংগৃহীত

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিএনপি-ছবি: সংগৃহীত


বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

শনিবার (০৭ মার্চ) রাতে স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর মির্জা ফখরুল এ সমালোচনা করেন।

তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস সারা পৃথিবীতে মানুষের শুধু ক্ষতি করছে তা, এটা অর্থনীতির ওপরে প্রচণ্ড রকমের প্রভাব ফেলছে। কিন্তু এ ব্যাপারে সরকারের আগ্রহ কম। তারা ব্যস্ত মুজিববর্ষ নিয়ে। অন্য বিষয়গুলোতে খুব বেশি সময় দিতে পারছে না তারা। ফলে এখানে এই ভাইরাসটা ছড়িয়ে পড়ার যথেষ্ট আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে মনে হয়েছে যে, দিস ইজ টোটাল ইরেসপনসেবিলিটি পার্ট অব দি গভার্মেন্ট। এই রকম একটা ব্যাপক বিপর্যয় বিশ্বজুড়ে চলছে। সেখানে এই বিষয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করা উচিত ছিলো সরকারের অগ্রাধিকার কাজ, প্রথম কাজ। এটা তারা করছে না। এ ব্যাপারে সরকারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’

‘আমরা বলছি যে, প্রত্যেকটি পোর্টে স্ক্যানিং মেশিন থাকা দরকার, লোকবল থাকা উচিত। ডায়াগনোসিস করার জন্য যে কিটস তার অপ্রতুলতা আছে, পাওয়া যাচ্ছে না, মাস্কেরও যথেষ্ট অপ্রতুলতা রয়েছে। একই সঙ্গে ইমার্জেন্সি হসপিটাল ওপেন করে দেয়া উচিত ছিলো। যেখানে আক্রান্তদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য নেয়া হবে, সেই ব্যবস্থা থাকবে। এখন পর্য়ন্ত এই ধরনের কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে আমরা জানতে পারেনি’— বলেন মির্জা ফখরুল।

সদ্য ওমরাহ পালন শেষে দুবাই হয়ে দেশে ফেরা দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমাদের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস সাহেব কয়েকদিন আগে দুবাই থেকে এসেছেন। তিনি বলেছেন যে, এয়ারপোর্টে একটা ফরম দেয়া হচ্ছে তাতে বলা আছে যে, কোন কোন দেশ আপনি ভ্রমণ করছেন। কিন্তু ফরমটা কেউ কালেক্টও করছে না। যাত্রী ইমিগ্রেশনে আসার পর ওই বিষয়ে জানতেও চাওয়া হচ্ছে না। করোনার কোনো পরীক্ষাও করা হচ্ছে না। এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক ব্যাপার।’

ফখরুল বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি যে, করোনাভাইরাস নিয়ে সারা পৃথিবী যখন উদ্বিগ্ন ও বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন, যাতে ভাইরাস না আসতে পারে, আক্রমণ না করতে পারে। ল্যান্ড পোর্ট, এয়ারপোর্ট, সি পোর্টে প্রয়োজনীয় স্ক্যানিং ব্যবস্থা তৈরি করেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশে একমাত্র ঢাকা এয়ারপোর্ট ছাড়া আর কোথাও এই স্ক্রিনিং মেশিন নাই।’

ফখরুল বলেন, ‘আমরা আজকের সভা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, করোনা ভাইরাস নিয়ে জনগণকে সচেতন করার জন্যে আমরা লিফলেট ছাড়বো, জনগণের কাছে পৌঁছাবো। ড্যাবসহ অঙ্গসংগঠনগুলো এ বিষয়ে কাজ করবে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। যদিও সরকার দাবি করছে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি পাওয়া যায়নি। আজকেই আইইডিসিআর-এর পরিচালক (মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা) বলেছেন যে, যেকেনো মুহুর্তেই বাংলাদেশ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে।’

খালেদার মুক্তির দাবিতে ১১ মার্চ বিক্ষোভ

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যরা আবার দেখা করেছেন। তারা বেরিয়ে এসে যেটা বলেছে তা আরও উদ্বেগজনক। এতোটুকু তার (খালেদা জিয়া) শারীরিক উন্নতি হয়নি, আরো অবনতির দিকে যাচ্ছে। তারা বলেছেন যে, আমরা খালেদা জিয়াকে ফিরে পাবো কিনা-এটা আমরা নিশ্চিত নই। এটা এতো বেশি উদ্বেগের বিষয় যে, গোটা জাতিকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বার বার বলেছি, চেষ্টা করছি, আইনি ব্যবস্থা নিয়েছি, রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিয়েছি কিন্তু এ ব্যাপারে এতোটুকু কর্ণপাত করছে না। আমরা আবারও বলছি যে, অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার  ব্যবস্থা করতে হবে। এই দাবিতে আমরা বুধবার সারা দেশে মহানগর ও জেলা সদরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।’

বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জমিরুউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। লন্ডন থেকে স্কাইপে যুক্ত হয়ে সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

নিউজওয়ান২৪.কম/এমজেড

আরও পড়ুন