ঢাকা, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

অবশেষে হেফাজতের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করলেন বাবুনগরী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০১:২৩, ২৬ এপ্রিল ২০২১  

বাবুনগরী ওমামুনুল           -ফাইল ফটো

বাবুনগরী ওমামুনুল -ফাইল ফটো

হেফজতকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ সময় ধরে চলমান নানা জটিলতা আর ঘটনা পরম্পরা এবং আলোচনা-সমালোচনার ধারাবাহিকতায় শেষপর্যন্ত হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। রবিবার রাত ১১টায় ফেসবুকে এক সংক্ষিপ্ত ভিডিও বার্তায় এ ঘোষণা দেন সংগঠনের আমির জুনাইদ বাবুনগরী।

সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো একই ধরনের বিবৃতিতে বাবুনগরী বলেন, ‘দেশের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম অরাজনৈতিক দ্বীনি সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের পরামর্শক্রমে বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হইল।’

তবে নতুন একটি আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে এর সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলেও একই বিবৃতিতে জানান বাবুনগরী।

হেফাজতে ইসলামের ফেইসবুক পাতায় এক মিনিট ২৪ সেকেন্ডের ভিডিও বার্তায় বিবৃতিটি পড়েন তিনি। এর বাইরে বিস্তারিত আর কিছুই তিনি বলেননি।

নতুন কমিটি গঠনের ছয় মাস পার হওয়ার  আগে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে সংগঠিত বিক্ষোভ থেকে সহিংসতার ঘটনার পর হেফজত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক পুলিশি অভিযান শুরু হয়। রাজধানী ঢাকা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ–সহিংসতার সূত্র ধরে হেফাজতের কেন্দ্রীয় ও গুরুত্বপূর্ণ ১৯ জন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে গত কয়েকদিনে। সংগঠনটির বিক্ষোভ–সহিংসতার ঘটনায় দেশের বিভিন্ন জেলায় তাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অন্তত ৭৭টি মামলা হয়েছে যেখানে ৬৯ হাজারের বেশি জনকে আসামি করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে বাবুনগরীর এই ঘোষণা এল।

প্রসঙ্গত, হেফাজতের কমিটি বিলুপ্তির বার্তা প্রচারের কয়েক ঘণ্টা আগেই কওমি মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকদের সব ধরনের রাজনীতি ‘মুক্ত’ রাখার ঘোষণা দেয় মাদ্রাসাগুলোর নীতি নির্ধারণী বোর্ড আল হাইআতুল উলয়া লিল জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ।

কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের আমির চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক শাহ আহমদ শফী মারা যাওয়ার পর গত ১৫ বছরের নভেম্বর বাবুনগরীকে আমির করে হেফাজতের ১৫১ সদস্যের নতুন কমিটি গঠিত হয়েছিল।

দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকা হেফাজতের নেতারা গত বছরের শেষ দিকে ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতায় নেমে ফের আলোচনায় আসে। সাম্প্রতিক সময়ে ‘দ্বিতীয় স্ত্রী’ কাণ্ডে সংগঠনটির আলোচিত-সমালোচিত নেতা মামুনুল হক ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন। পরে তিনি হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিবের পদ পাওয়ার পাশাপাশি ঢাকা কমিটির সাধারণ সম্পাদকও হন।  

এদিকে গত মাসের শেষ দিকে মোদির সফরের বিরোধিতায় নেমে নতুন করে ফের আলোচনায় আসে হেফাজত। তাদের ডাকা বিক্ষোভ ও হরতালের সূত্রে ব্যাপক সহিংসতায় ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চট্টগ্রামে বেশ কয়েকজন নিহত হয়।

এসব ঘটনার পর অর্ধশত মামলার দায়ের করা মামলার সূত্রে মামুনুলসহ হেফাজতের ডজন খানেক কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের অনেককে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে।

জিজ্ঞাসাবাদ সূত্রে পুলিশের দাবি, হেফাজত নেতারা নাশকতার বড় ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছিলেন, যার চূড়ান্ত লক্ষ্য ছিল রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করা। 

নিউজওয়ান২৪.কম/এবি

আরও পড়ুন