ঢাকা, ২৪ মে, ২০২৫
সর্বশেষ:

‌`অতিরিক্ত ভারতপ্রেমই` কাল হলো নেপালি প্রধানমন্ত্রী ওলির!

সার্ক অঞ্চল ডেস্ক

প্রকাশিত: ০০:৩২, ২৫ জুলাই ২০১৬   আপডেট: ১২:২৩, ২৬ জুলাই ২০১৬

নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি রবিবার ইস্তফা দিয়েছেন। জোটভুক্ত শরিক দলগুলোর অনাস্থার মুখে তিনি পদত্যাগের এই সিদ্ধান্ত নেন। তবে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের আগেই তিনি পরিস্থিতি বুঝে প্রধানমন্ত্রীত্ব ছেড়ে দিলেন।

কিন্তু কেন এমন হলো? এই প্রশ্নের জবাবে জানা গেছে, ওলির ভারতমুখীনতাই তাকে পার্লামেন্টে এমন নির্বান্ধব অবস্থায় ফেলে দেয়। অর্থাৎ ভারতের সঙ্গে তার অতি মিত্রতাই তাকে পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য করেছে। তবে এজন্য তিনি মাওবাদী এবং নেপালি কংগ্রেস দলের ষড়যন্ত্রকে দায়ী করেছেন।

পদত্যাগের আগে দেওয়া ভাষণে ওলি জানান, নেপালি কংগ্রেস এবং মাওবাদী দলগুলো তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের ঘোট পাকিয়েছে। তিনি বলেন, ভারত ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের স্বার্থে নেওয়া কিছু ভাল পদক্ষেপের জন্য আমাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সরকারের শরীক মাওবাদীরা সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয় ওলির ওপর থেকে এবং পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব আনে। এমন পরিস্থিতিতে পদত্যাগ করেন তিনি।

মাত্র গত অক্টোবরে ক্ষমতায় আসে ওলির নেতৃত্বাধীন সরকার। গত ১০ বছরে নেপাল আটটি সরকার পেয়েছে। বিষয়টি মোটেই সুখকর নয় কোনো রাষ্ট্র বা জাতির জন্য। প্রতিবারই সরকার গঠনকে কেন্দ্র করে বিবাদ-হাঙ্গামা-অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এবার ওলির ক্ষেত্রে যা হলো তা হচ্ছে বড় দুটি দল সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে যার ফলে মর্যাদা রক্ষার্থে ইসতফা দেওয়া তার জন্য অনেকটাই বাধ্যতামূলক হয়ে পড়ে। এর সঙ্গে মধেসি পিপলস রাইটস ফোরাম এবং রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টি তার বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবে সমর্থন দেয়।

শরীক দলগুলো ওলির ওপর প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ এনেছে।

এদিকে, পদত্যাগপূর্ব ভাষণে ওলি আরও বলেন, আমি দেশের এক সংকটময় মুহূর্তে ক্ষমতায় আসি। আর আজ আমাকে এমন এক সময়ে পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে যখন দেশ গতবছরের ভয়াবহ প্রাণঘাতী ভূমিকম্পের ক্ষতি কাটিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমি যখন ক্ষমতায় আসি তখন প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে নেপালের সম্পর্ক খুব নাজুক ছিল। নিজের চেষ্টায় সেই সম্পর্কে প্রাণ সঞ্চার করি- যার ফলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন হয়। সেই ভাল কাজের সাজা দেওয়া হচ্ছে আমাকে।

প্রসঙ্গত, পার্বত্য দেশ নেপালের দুই প্রভাবশালী প্রতিবেশী ভারত ও চীন। নেপালি সমাজ, অর্থনীতি, কৃষ্টি-সংস্কৃতি, ধর্মাচার তথা রাজনীতি গভীরভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় এই দুটি দেশের মাধ্যমে। বিশেষ করে ভূমিবেষ্টিত নেপাল রসদপত্র ও জ্বালানি আমদানির জন্য ভারতের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল।

তবে নানাবিধ কারণে নেপালি জনগণের বিরাট অংশে প্রায়ই ভারত বিরোধীতার প্রকাশ দেখা যায়, যেমন দেখা যায় চীনের ক্ষেত্রেও।

নিউজওয়ান২৪.কম/একে

 

আরও পড়ুন
বিশ্ব সংবাদ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত