ঢাকা, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

১৮+ ফুচকা!

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৫২, ৬ অক্টোবর ২০১৮  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

গোলাকার মচমচে ফুচকার ভেতরে মসলাদার বুট, আলু, পেঁয়াজ কুচি, ধনে পাতা আর তার ভেতর তেঁতুলের রস। মুখে দিতেই ফুচকা ভেঙ্গে যেন জিহ্বায় স্বাদের ঝড় তোলে।

স্বাদের এই বৈচিত্র্যের কারণে দেশের স্ট্রিট ফুডের মধ্যে ফুচকার জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি। শুধু তাই নয়, দেশের স্ন্যাক্সের তালিকা করা হলে নিঃসন্দেহে ফুচকার নাম থাকবে সবার ওপরে। নানা স্বাদের সংমিশ্রণই এর কারণ।

জিভে পানি আসা ফুচকার যে টক-ঝাল-মিষ্টি মজাদার স্বাদ, তা যেন অন্য আর কোনো খাবারে নেই। তাই বিপুল জনপ্রিয়তায় ফুচকা এখন হয়ে পড়েছে বাঙালি সংস্কৃতির অংশ।

মানুষের পছন্দের এই খাবারটি নিয়ে ঢাকায় আয়োজন করা হয়েছে ফুচকা উৎসবের। যেখানে রয়েছে নানা নামের ২০ রকমের ফুচকা। ফুচকায় আনা হয়েছে ফিউশন। ফেসবুকে এমনই এক উৎসবের ইভেন্ট দেখে ছুটির দিনে সদলবলে হাজির হয়েছেন আইটি ব্যবসায়ী নুসরাত আক্তার টুম্পা।

তিনি বলেন, ‘আমি এ ধরনের উৎসবের কথা এবারই প্রথম শুনেছি। এজন্য বন্ধুদের নিয়ে আসলাম। আসলে ফুচকা তো সবার পছন্দের খাবার। এর যে টক ঝাল মিষ্টি স্বাদ, সেটা সবার পছন্দ। ফুচকার নানা বৈচিত্র্য রয়েছে এখানে। এসির মধ্যে খাচ্ছি, তাই গরমও লাগছে না।’

বারিধারা ডিওএইচএস কনভেনশন সেন্টারে আয়োজন করা হয়েছে এই ফুচকা উৎসবের। মেলাটি মূলত নারী উদ্যোক্তাদের কেন্দ্র করে আয়োজিত হলেও, এখানে ভিড় করা বেশিরভাগ মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল মেলার মাঝখানের বড় ফুচকা স্টলটিকে ঘিরে।

ঢাকার একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকা রাকিবা সুলতানা এসেছেন তার ছেলেকে নিয়ে।

তিনি বলেন, ‘আমার ছেলের ভীষণ আগ্রহ, শুক্রবার দেখে চলে এলাম। আসলে ওরা তো সারাদিন বার্গার, পিৎজা - এসব ফাস্টফুড খায়। ফুচকা আমাদের দেশী খাবারের অংশ। তাই এখানে এলাম যেন ওর মধ্যেও এই আগ্রহ জন্মায়।’

ফুচকা কেন পছন্দ? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাদের ব্যাখ্যা দিয়ে দিলেন রাকিবার ছেলে আরিব শারাফ।

‘আমার ফুচকা অনেক ভালো লাগে। অনেক মজার। এজন্য আমি এখানে খেতে এসেছি। আমার সবচেয়ে প্রিয় দই ফুচকা। এটা একটু মিষ্টি, আবার ক্রাঞ্চি। ওটা আমার সস দিয়ে খেতে খুব ভালো লাগে,’ জানায় সে।

দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন স্থানে এই মুখরোচক খাবারটি বিভিন্ন নামে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কোথাও এটি গোলগাপ্পা কোথাও বা পানিপুরি আবার কোথাও ওয়াটার বোলস। তবে বাংলাদেশে ফুচকা ছাড়া এর আর কোনো নাম নেই।

তবে রাস্তাঘাটে যে ফুচকা বিক্রি হয় সেটির পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বা তৈরি প্রণালী নিয়ে বারবারই প্রশ্ন ওঠে। সেক্ষেত্রে ক্রেতাদের স্বাস্থ্যকর ফুচকার নিশ্চয়তা দিয়ে এই স্টল সাজানোর কথা জানিয়েছেন, আয়োজক মিরাজ হোসেইন।

‘স্ট্রিট ফুড যেভাবে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা হয়, আমরা সেভাবে করিনি। আমরা ঘরে প্রতিটি আইটেম তৈরি করেছি। ফুচকা যেটা আছে, ওইটাও আমরা নিজেরা ভেজেছি। অনেকের অনেক প্রশ্ন থাকে যে এটা কি দিয়ে বানানো? বাইরে থেকে আনা কিনা? কি তেল দিয়ে ভাজা। আমাদের এখানে এ ধরনের প্রশ্ন বা সন্দেহের অবকাশ নাই,’ বলেন তিনি।

মেলায় আয়োজন করা হয়েছে প্রায় ২০ ধরনের ফুচকার। দাম ধরা হয়েছে ৫০ থেকে ২০০ টাকা। বেশ কয়েকটি ফুচকায় ফিউশন এনে নানা রকম নাম দিয়েছেন তারা।

সাধারণ ফুচকায় ঝালের আধিক্য থাকায় ছোটরা খেতে পারে না। তবে আজকাল ‘দই-ফুচকা’ এবং অন্যান্য নামেও ফুচকা  তৈরি হচ্ছে এবং সমাদৃত হচ্ছে। মোট কথা ফুচকা একটা বড়দের খাবার হিসেবে পরিচিত। এখানে এ ধরনের ১৮ পদের বেশি ফুচকা আছে বলে জানা গেল। তবে আয়োজকরা বললেন, সেখানে ২০ পদের ফুচকা আছে। দুয়েকটি পদ আছে ছোটদের জন্য কম ঝাল দেয়া হয় সেগুলোতে। এই ফচুকাগুলোর নাম দেয়া হয়েছে বেবি ফুচকা।

আয়োজক নূর ই আজমা বলেন,‘আমরা সব বয়সীদের কথা ভেবে অনেক ধরনের আইটেম তৈরি করেছি। যার একেকটার স্বাদ একেক রকম। যেমন - বেবি ফুচকা, এইটিন প্লাস ফুচকা, ইলিশ ফুচকা, বিফ ফুচকা, হট এন্ড স্পাইসি ফুচকা। বেবি ফুচকায় আমরা রাখি বাদাম, দুধ, কিসমিস, সেমাই। এক কথায় বাচ্চাদের টেস্ট আর স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে।’

নিউজওয়ান২৪/এএস

লাইফস্টাইল বিভাগের সর্বাধিক পঠিত