ঢাকা, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

১৩ মাসে ২২২ কোটি বার কলড্রপ, বিটিআরসি`র চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১:৪০, ২২ অক্টোবর ২০১৮  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

দেশের শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর হতে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৩ মাসে ১০৩ কোটি ৪৩ লাখ কলড্রপ হয়েছে। একই সময়ে রবির কলড্রপ ৭৬ কোটি ১৮ লাখ, বাংলালিংকের ৩৬ কোটি ৫৪ লাখ আর টেলিটকের আনুমানিক ৬ কোটি।

সোমবার বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করেছে। 

গ্রামীণফোনের কলড্রপ নিয়ে সংসদে বাণিজ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ প্রকাশের একদিন পরেই এই প্রতিবেদন প্রকাশ করলো বিটিআরসি। 

এর আগে রোববার সংসদে তোফায়েল আহমদ বলেন, ‘ইদানিং লক্ষ্য করলে দেখা যাবে আমরা যারা গ্রামীণফোন ব্যবহার করি, প্রত্যেকটি কলে কলড্রপ হয়। একেকটি কলে ৩, ৪, ৫ বার ড্রপ হয়। এজন্য বার বার কল করতে হয়।’

বিটিআরসির নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি কলড্রপের জন্য গ্রাহককে ১ মিনিট টকটাইম ফেরত দিতে হবে। তবে অপরেটরগুলো সে নিয়ম পালন করেনি। গ্রামীণফোনের ১০৩ কোটি ৪৩ লাখ বার কল ড্রপ হলেও গ্রাহকরা রিটার্ন কল মিনিট ফেরত পেয়েছে মাত্র ১০ কোটি ৩০ লাখ। আর রবির কল ড্রপ ৭৬ কোটি ১৮ লাখ বার হলেও গ্রাহকরা রিটার্ন কল মিনিট ফেরত পেয়েছেন ৬ কোটি ৮২ লাখ মিনিট। আর বাংলালিংক গ্রাহকরা ফেরত পেয়েছেন ৪ কোটি ৯৪ লাখ মিনিট।

কলড্রপের কারণে গ্রাহকের প্রাপ্য ৪৭ দশমিক ৩২ কোটি মিনিট টকটাইম ফেরত দেয়নি জিপি, রবি ও বাংলালিংক। বিটিআরসির নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিদিন একজন গ্রাহকের একটির বেশি কলড্রপের প্রতিটিতে এক মিনিট করে করে টকটাইম ফেরত দিতে হবে।

২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর হতে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গ্রামীণফোনের একের অধিক কলড্রপ হয়েছে ২৭ কোটি ৭৭ লাখ। এরমধ্যে অপারেটরটি ফেরত দিয়েছে ১০ কোটি ৩০ লাখ মিনিট। তারা ১৭ দশমিক ৪৭ কোটি মিনিটই ফেরত দেয়নি গ্রাহককে।

রবির একের অধিক কলড্রপ ২৪ কোটি ৪৭ লাখ। এরমধ্যে ৬ কোটি ৮২ লাখ ফেরত দিয়েছে তারা। বাকি ১৭ দশমিক ৬৫ কোটি মিনিট ফেরত দেয়নি তারা। বাংলালিংকের একাধিক কলড্রপ ১৭ কোটি ১৪ লাখ। তারা ফেরত দিয়েছে ৪ কোটি ৯৪ লাখ মিনিট। ১২ দশমিক ২ কোটি মিনিটই ফেরত দেয়নি তারা। সরকারি মোবাইল অপারেটর টেলিটকের এই একের অধিক কোনো কলড্রপ নেই।

এদিকে মোবাইল ফোন অপারেটরদের প্রকৃত কলড্রপের অবস্থা এবং এ সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা চেয়েছে বিটিআরসি। জাতীয় সংসদ অধিবেশনে একটি মোবাইল ফোন অপারেটরের বিরুদ্ধে কল ড্রপ নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের বক্তব্যের একদিন পর এ ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

বিষয়টি গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষসহ ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারকে দেখার জন্য অনুরোধ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। পরদিন সোমবার এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়ে অপারেটরদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।

বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশনস বিভাগের পরিচালক মো. গোলাম রাজ্জাক স্বাক্ষরিত অপারেটরদের প্রধানদের ‘কলড্রপের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্রাহক অসন্তুষ্টি প্রসঙ্গে’ চিঠি পাঠানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে মোবাইল অপরেটরদের কল ড্রপ সংক্রান্ত অভিযোগ অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে চলমান জাতীয় সংসদেও আলোচনা হয়েছে। দিন দিন টেলিযোগাযোগ সেবার মান নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সেবার মান নিয়ন্ত্রণ বর্তমানে বিটিআরসির একটি অগ্রাধিকারযোগ্য কার্যক্রম। বিটিআরসি ইতোমধ্যে ড্রাইভ টেস্টের মাধ্যমে বিভিন্ন অপারেটরের সেবার মান নিয়মিত পরিমাপ করছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, গ্রাহক স্বার্থের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কলড্রপের পরিমাণ বিটিআরসি কর্তৃক নির্ধারিত সীমার (২ শতাংশ) মধ্যে থাকা আবশ্যক। অপারেটর কর্তৃক দাখিলকৃত মাসিক রিপোর্টে তাদের কল ড্রপ নির্ধারিত সীমার মধ্যেই আছে দাবি করলেও সম্প্রতি এ বিষয়ে গ্রাহক পর্যায়ে অনেক অভিযোগ আছে। এছাড়াও কোন কোন অপারেটরের নেটওয়ার্কে একটি কলে ৪ থেকে ৫ বার কল ড্রপ হয় বলে অভিযোগ রয়েছে, যা বাস্তবসম্মত নয়।

নিউজওয়ান২৪/টিআর

মোবাইল-পিসি-টেক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত