ঢাকা, ২০ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

সেই ১০০ বিঘা জমির ধান যাবে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে

বগুড়া সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ০০:২১, ২১ মার্চ ২০২১  

বগুড়ায় ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ ১০০ বিঘা জমির ধান যাবে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে। তবে এর কিছু অংশ স্থানীয় কৃষক এবং এই প্রজেক্টের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকরা পাবেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

আজ (শনিবার) দুপুরে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ জাতীয় পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ এফ এম বাহাউদ্দিন নাছিম।

তিনি বলেন, ধান পাকলে আমরা শুধু ধানের শীষটুকু কেটে নেব এবং বাকি অংশগুলো মাটির সঙ্গে মিশে যাবে। এর পর উৎপাদিত এই ফসল যাবে প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে। অনেক আলোচনা করে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

আশা করছি সেখান থেকে এই ফসল বীজ হিসেবে দেশের অন্যান্য জেলার কৃষকরাও পাবেন। এই শিল্পকর্মটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান করে নেওয়ার পাশাপাশি সারাদেশের কৃষকদের উজ্জীবিত করেছে। “শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু” বিষয়টি দেশের কৃষকদের ধান চাষে অনুপ্রেরণা যোগাবে। এতে বগুড়ার কৃষকরা নিজেদের সম্মানিত বোধ করেছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন, বলেন নাছিম।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এই নেতা বলেন, আগে দেশে নানা ধরণের বিপর্যয় এবং ক্ষুধা-দুর্ভিক্ষ ছিল। সেই পরিস্থিতি উত্তরণে দেশের কৃষকরাই বড় ভূমিকা পালন করেছেন। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। আগামী ৫০ সালের মধ্যে দেশের জনসংখ্যা তিনগুণ বেড়ে যাবে। যেহেতু ধানই আমাদের প্রধান ফসল সুতরাং ধানের এই উৎপাদন ধরে রাখার জন্য আমরা কৃষকদের ধান চাষে অনুপ্রাণিত করতে চাই। বগুড়ায় “শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’’ প্রকল্পটিও একটা অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে কৃষকদের জন্য।

যারা এ কাজে শ্রম এবং জমি দিয়েছেন তারা উৎপাদিত ফসল পাবেন কি না জানতে চাইলে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, এটা একটা ভালো প্রস্তাব, আমরা স্থানীয় কৃষক-শ্রমিকদেরও কিছু অংশ বণ্টন করতে পারব বলে আশা করছি।

প্রকল্পটির অর্থ এবং কারিগরি সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান একই তথ্য জানান।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের লক্ষে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের বালেন্দা গ্রামের ১০০ বিঘা জমিতে শস্য দিয়ে তৈরি চিত্রটি শস্য ক্ষেতে বিশ্বের সর্ববৃহৎ শস্যচিত্র হিসেবে স্থান পেয়েছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে। রেকর্ডসের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে গত ৯ মার্চ।

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ তাদের অফিসিয়াল পেজে সেটা জানিয়ে দিয়েছে গত ১৬ মার্চ এবং পরের দিন অফিসিয়ালি জানিয়েছে একটি ভিডিও ওয়েবিনারের মাধ্যমে।

এই রেকর্ডের কৃতিত্ব দেওয়া হয় এ এফ এম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমানকে। এই চিত্রের আয়োজক হিসেবে দেখানো হয়েছে ন্যাশনাল অগ্রিকেয়ার আমদানি এবং রপ্তানি লিমিটেড প্রতিষ্ঠানকে।

গিনেস কর্তৃপক্ষ আরো উল্লেখ করে, শস্যচিত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ফুটিয়ে তোলা হয়েছে আগামী ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে তাকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।

গত নভেম্বর মাস থেকে ১০০ বিঘা জমির ওপর প্রকল্পটির কাজ শুরু করে ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার। স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি বিঘা ৮৯০০ টাকা করে ৭ মাসের জন্য লিজ নেয় প্রতিষ্ঠানটি। জানুয়ারিতে দুই ধরনের ধানের ছাড়া লাগানো হয়। প্রকল্পের জন্য চীন থেকে বেগুনি রঙের এফ১ জাতের ধান বীজ আমদানি করা হয়। সবুজ রঙের অন্য ধানের জনক ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার নিজেই বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি।

ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে ১০০ বিঘা জমির ওপর ধান লাগানোর কাজ করেন স্থানীয় ১০০ জন আদিবাসী নারী শ্রমিক।

গত ৯ মার্চ গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড’র দুজন বাংলাদেশি প্রতিনিধি শস্যচিত্রটি পরিদর্শন করতে বগুড়ায় আসেন। পরে গত ১৪ মার্চ কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক শস্যচিত্রটি পরিদর্শনে এসে বলেন, কৃষি প্রধান সবুজ বাংলার বিশাল ক্যানভাসকে ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো আঁকা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি হবে তার জন্মশতবার্ষিকীর এক অনন্য উদযাপন।

আরও পড়ুন
স্বদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত