ঢাকা, ২৪ মে, ২০২৫
সর্বশেষ:

সিরিয়া: যেখানে কষ্ট পেয়ে কাঁদাটাও ভুলে গেছে শিশুরা!

ইত্যাদি ডেস্ক

প্রকাশিত: ০২:২৫, ২০ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ২৩:৩০, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬

ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার আহত শিশু

ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার আহত শিশু

গৃহযুদ্ধকবলিত সিরীয় শহর আলেপ্পোয় সরকারি ও বিদ্রোহী বাহিনীর তাণ্ডব শেষে বেঁচে যাওয়া লোকজন বোড়িঘর ছেড়ে কোনমতে প্রাণটা হাতে নিয়ে পালাচ্ছে। তাদের মাঝে আছে হাজারো শিশু-কিশোরও। প্রাণবন্ত শৈশবের স্বপ্নময় দিনগেুলোর আবেশ হারানো ওই শিশু-কিশোররাও যুদ্ধের নিষ্ঠুর ক্রুরতা আর ভয়াবহতায় ভুলে গেছে এমনকি কাঁদতেও।

এমনও দৃশ্য দেখা গেছে যে যুদ্ধবিমান হামলায় বাড়িঘর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ার পর গায়ে ধুলোর আস্তরণে কিম্ভূত রূপ হয়েছে দুটি শিমূর। এরা পরস্পর ভাই-বোন। দুজনেই উদভ্রান্তের মেতা খুঁজছে তাদের নিখোঁজ বাবা-মাকে। তবে কারও চোখেই অশ্রু নেই, নেউ কান্না। কারণ, চরম শোক ও কষ্টে যে স্বাভাবিক কান্না আসে- তারা সেটাই ভুলে গেছে! ওই ধরনের বুকফাটা ক্রোধ আর কান্নার অসহায়ত্ব তাদের অনেকবারই হয়েছে।

বিদ্রোহীদের হাত থেকে আলেপ্পো উদ্ধারে সম্প্রতি আসাদ সরকারের অনুগত বাহিনী ও তার মিত্র রুশ সৈন্যদের অভিযানে বিদ্রোহীদের সঙ্গে তাদের লড়াইয়ে যে তাণ্ডব বয়ে গেছে তা দেখলে মাথা ঘুলিয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে আকাশপথে হচ্ছে জঙ্গিবিমান হানা আর মাটিতে চলমান রক্তপিপাসু যুদ্ধ তো আছেই। এমনন অবস্থায় আলেপ্পোতে অবরুদ্ধ মানুষজনকে উদ্ধারে রাশিয়া ও সিরিয়ার সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে তুর্কি সরকারের। রবিবার আল ফৌও এবং খেফরায় শহরে অবরুদ্ধদের মাঝে আহত আর অসুস্থদের উদ্ধারে যায় কয়েকটি বাস। কিন্তু মাঝপথেই বাসগুলিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সিরিয়ায় অবস্থানরত এক মানবাধিকারকর্মী এ তথ্য জানান।

একটি ধ্বংসস্তুপের পাশে দেখা যায় যুদ্ধে সর্বহারা শিশু মাহমুদকে। এখনও বালক হয়ে ওঠেনি। তার কোলে রয়েছে এক মাস বয়সী ভাইয়ের মরদেহ। কিন্তু মাহমুদ কাঁদছে না। বিমান হামলায় তাদের বাড়িটি ধসে পড়ে। ধ্বংসস্তুপে চাপা পড়ে নিহত হয় তারিআদরের ছোট ভাইটি। চরম শোকে বাকরুদ্ধ পাথর বনে যাওয়া মাহমুদ বলছিল- এই জালিমের (প্রেসিডেন্ট আসাদ) কাছ থেকে আমাদের বিচার আল্লাহ করবেন।

বিচার করনেওয়ালা পক্ষগুলো যদি এভাবে সবদিকদিয়ে চুপ থাকাটাকেই বড় দায়িত্ব মনে করেছেন, হয়তো।

শহরে অবরুদ্ধ ৫০ হাজার মানুষের মধ্রে ৪০ হাজা্রই বেসামরিক নিরীহ মানুষ।

গৃহযুদ্ধ বাঁধার পর থেকে সিরিয়ায় এপর্যন্ত নিহ হয়েছে প্রায় চার লাখ মানুষ। বাস্তুচ্যুত হয়েছে লাখে লাখে।

এই হচ্ছে একদার শান্তশিষ্ট উৎসবমুখর সিরিয়ার এখনকার চালচিত্র।

নিউজওয়ান২৪.কম/একে

আরও পড়ুন
বিশ্ব সংবাদ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত