ঢাকা, ২৯ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ:

মৌসুমীর অভিযোগ ভিত্তিহীন: মিশা সওদাগর

শোবিজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯:৩৭, ১৬ অক্টোবর ২০১৯  

চিত্রনায়িকা মৌসুমী ও খল অভিনেতা মিশা সওদাগর: ফাইল ফটো

চিত্রনায়িকা মৌসুমী ও খল অভিনেতা মিশা সওদাগর: ফাইল ফটো

চলচ্চিত্র শিল্পীদের সংগঠন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন আগামী ২৫ অক্টোবর। নির্বাচনকে সামনে রেখে চলছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। শুটিংয়ের ব্যস্ততা কমিয়ে প্রার্থীরা ভোট চেয়ে সাধারণ শিল্পীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে সভাপতি প্রার্থী খল অভিনেতা মিশা সওদাগর জানান, তাদের প্যানেলের নির্বাচনী প্রস্তুতি এরই মধ্যে প্রায় নব্বই ভাগ সম্পন্ন করেছেন।

শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে সরগরম বিএফডিসি প্রাঙ্গন। বিএফডিসিতে শিল্পীদের দেখা মেলে কালেভদ্রে। তারপরও বিএফডিসি লোকে লোকারণ্য থাকে অধিকাংশ সময়। এদের বেশিরভাগ বহিরাগত। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বহিরাগতদের আনাগোনা আরো বেড়েছে। এ ব্যাপারে মিশা সওদাগর বলেন, বহিরাগতদের আনাগোনা ঠেকাতে আর নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে বিএফডিসি প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন যাতে নির্বাচনকে ঘিরে কোনো অপৃতিকর ঘটনা না ঘটে।

এবারের নির্বাচনে মিশা সওদাগরের বিপরীতে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী। চলচ্চিত্রাঙ্গনে যারা খোঁজ-খবর রাখেন তাদের অনেকেরই জানা- মৌসুমীর সঙ্গে মিশা সওদাগরের দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্ব। তবে সেই পরিচয়কে ছাপিয়ে এবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী তারা। 

বিষয়টি নিয়ে এ খল অভিনেতা বলেন, এটা কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বীতা নয়। এখানে চার-পাঁচশো মেম্বার আছে তাদের কাছে আমি বা মৌসুমী একই সমান। মৌসুমী গুণী অভিনেত্রী, অনেক উচ্চমার্গীয় মনের মানুষ এছাড়াও সে অনেক গুনে গুনান্বিত। উনি শিল্পী সমিতির সেবা করতে চান। এটা শিল্পীদের জন্য ভালো খবর। 

কিন্তু বর্তমান কমিটি শিল্পী সমিতিকে এমন একটা অবস্থানে নিয়ে গেছে যা দেখে এখন অনেকেই নেতৃত্ব দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করছেন। আমরা যে মানবীক কাজের পরিচয় বহন করে রেখেছি, সে কাজের সাক্ষী তারাও হতে চায়। আমি বরাবরই বলে আসছি- ভোটাররা যদি আমাকে নির্বাচিত করেন আমি ফুলের মালা পরবো, আর যদি মৌসুমী জয়ী হয় তাকে আমি ফুলের মালা পরিয়ে দেবো। এখানে হার-জিৎ ব্যাপার না। নির্বাচন করার উদ্দেশ্য শিল্পীদের সেবা করা। 

এ অভিনেতা আরো বলেন, শিল্পী সমিতি একটি অরাজনৈতিক, অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, এখানে সময় দিতে হবে, শিল্পীদের সেবা করতে হবে। মৌসুমী যদি নির্বাচিত হয়ে আসে তাকে স্বাগতম জানাবো। সে ব্যস্ত মানুষ, যদি সমিতির পেছনে সময় দিতে পারে ভালোই হবে। আর শিল্পীরা যদি মনে করেন উনার সেবা নেবে সে রাস্তাও খোলা। কিন্তু আমরা চাই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। প্রত্যাশা একটাই- যারাই কমিটিতে আসুক তারা যেন চলচ্চিত্রের স্বার্থে কাজ করেন।

নির্বাচনের শুরু থেকে মৌসুমী একাধিকবার অভিযোগ করেছেন, তার নির্বাচনের ক্ষেত্রে নাকি বাঁধা দেয়া হচ্ছে, একটি অদৃশ্য চাপ প্রয়োগও করা হচ্ছে। এ বিষয়ে মিশা সওদাগর বলেন, আমি স্বতস্ফুর্তভাবে বলতে চাই- একজন শিল্পীর হতে হবে সৎ এবং সাহসী। শিল্পীদের বড় শক্তি লাখো লাখো ভক্ত। মৌসুমীর মতো শিল্পীকে কেউ আঙ্গুল তুলে কথা বলবে এমন সাহস কারো নেই। যে শিল্পী তার সমস্যার কথা বলতে পারে না, কে বা কারা তাকে বাঁধা প্রদান করছে? কে তাকে প্যানেল করতে দেয়নি? নিজের সমস্যার কথা তাকেই মুখ ফুঁটে বলতে হবে। কে এই অদৃশ্য শক্তি? নাম না বলে বিচ্ছিন্নভাবে কথা বললে এ অভিযোগের কোনো ভিত্তি থাকে না। তার অভিযোগ ভিত্তিহীন।

শিল্পীদের উদ্দেশ্য মিশা বলেন, শিল্পীদের কাছে কেউ সুপারস্টার নয়, সুপারস্টার দর্শকদের কাছে। সমিতিতে যখন বসবো সবাই সমান। তবে সিনিয়রদের সম্মান সবার আগে করতে হবে। যে যতো বড়ই সুপারস্টার হোক না কেন একজন সিনিয়র শিল্পীকে তার প্রাপ্ত সম্মান দিতেই হবে। আমি যতোই সভাপতি হইনা কেনো ফারুক, আলমগীর, সোহেল রানা, ববিতা, সুচন্দাদের কাছে সবসময়ই জুনিয়র।

তিনি আরো বলেন, পুনরায় নির্বাচিত হলে দুস্থ শিল্পীদের জন্য অল্প জায়গার মধ্যে হলেও আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। সিঙ্গেল যে হলগুলো রয়েছে সেগুলো কিভাবে উন্নত করা যায় সে ব্যাপারে হল মালিকদের সহায়তা করা হবে। কারণ হল বাঁচলেই সিনেমা বাঁচবে, সিনেমা বাঁচলেই শিল্পীরা বাঁচবে। একটি ফান্ড করা হবে যেকোনো ব্যাংকে। কোনো শিল্পী যদি বিপদে পড়ে তাহলে ওই ফাণ্ডের ইন্টারেস্ট থেকে সহযোগিতা করা হবে।

শিল্পী সমিতির এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে লড়ছেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী ও খলনায়ক মিশা সওদাগর। সহ-সভাপতির দুটি পদে প্রার্থী হয়েছেন মনোয়ার হোসেন ডিপজল, রুবেল ও নানা শাহ। সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানের প্রতিদ্বন্দ্বী ইলিয়াস কোবরা। সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন আরমান ও সাংকো পাঞ্জা। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে অভিনেতা সুব্রতের বিপরীতে কেউ নেই। 

আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে লড়ছেন নূর মোহাম্মদ খালেদ আহমেদ ও চিত্রনায়ক ইমন। দফতর ও প্রচার সম্পাদক পদে একাই রয়েছেন জ্যাকি আলমগীর। সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক পদ একটি। লড়বেন জাকির হোসেন ও ডন। কোষাধ্যক্ষ পদে অভিনেতা ফরহাদের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। অর্থাৎ সুব্রত জ্যাকি আলমগীর এবং ফরহাদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

এছাড়াও কার্যকরী পরিষদ সদস্যের ১১টি পদের জন্য লড়ছেন ১৪জন প্রার্থী। তারা হলেন-অঞ্জনা সুলতানা, রোজিনা, অরুণা বিশ্বাস, আলীরাজ, আফজাল শরীফ, বাপ্পারাজ, রঞ্জিতা, আসিফ ইকবাল, আলেকজান্ডার বো, জেসমিন, জয় চৌধুরী, নাসরিন, মারুফ আকিব ও শামীম খান (চিকন আলী)।

নিউজওয়ান২৪.কম/এমজেড