ঢাকা, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

ভিসির পদত্যাগ দাবিতে বিএসএমএমইউ তোলপাড়

প্রকাশিত: ১৫:৪৪, ১৩ মে ২০১৯  

আন্দোলনরতদের অভিযোগ সমইবলত পোস্টার

আন্দোলনরতদের অভিযোগ সমইবলত পোস্টার

২০০ মেডিকেল অফিসারের নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল বাতিল ও উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার পদত্যাগ দাবিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএসএমএমইউ) পরীক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছেন।

আন্দোলনকারীরা আজ (সোমবার) দ্বিতীয় দিনের মতো ভিসির কার্যালয় ঘেরাও করেন। পরীক্ষা বাতিল ও ভিসির পদত্যাগ দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা। আন্দোলনরত চিকিৎসকদের দাবি, ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে নজিরবিহীন অনিয়ম হয়েছে এবার। তাদের অভিযোগ ভিসি ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রভাবশালীদের স্বজনদের নিয়োগ দিতে পরীক্ষার ফলাফল টেম্পারিং করা হয়েছে।
তবে এমন পরিস্থিতিতে ভিসি তার কার্যালয়ে নেই বলে জানা গেছে। পুলিশ কর্মকর্তা ও বিএসএমএমইউর অপরাপর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করছেন। একইসঙ্গে আন্দোলনে উত্তাল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাস ও ভিসি কার্যালয়ের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। 

বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা জানান, এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তারা বিভিন্ন কোর্সে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়েই তাদের চাকরি হবে বলে প্রত্যাশা করেছিলেন। লিখিত পরীক্ষাও তাদের ভালো হয়েছে। কিন্তু অনিয়মের কারণেই তারা বাদ পড়েছেন বলে মনে করছেন।

উল্লেখ্য, বিএসএমএমইউতে গত ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত ২০০ ডাক্তার নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল গতকাল (রবিবার) প্রকাশিত হয়। ১৮০ জন মেডিকেল অফিসার ও ২০ জন ডেন্টাল চিকিৎসক পদে ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় ৮ হাজার ৫৫৭ জন চিকিৎসক অংশগ্রহণ করেন। এতে প্রতি পদের বিপরীতে ৪ জনকে পাস করানো হয়। এ হিসাবে ৭১৯ জন মেডিকেল অফিসার ও ডেন্টালের ৮১ জন মিলে মোট ৮২০ জন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। চূড়ান্ত নিয়োগের লক্ষ্যে তাদের ৫০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হবে।

কিন্তু এই ফলাফল ঘোষণার পরপরই সুযোগ বঞ্চিত চিকিৎসকরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের বিভিন্ন দেয়ালে ‘ছেলের জন্য সাজানো নিয়োগ, লজ্জা, ভিসি লজ্জা, ভিসির পদত্যাগ চাই!, অর্থের বিনিময়ে এই নিয়োগ মানি না মানবো না, প্রশ্নফাঁসের এ নিয়োগ কাদের জন্য, আমাদের সংগ্রাম চলছে চলবে- ইত্যাদি স্লোগানভরা পোস্টার সাঁটিয়ে দেন।

আজ দুপুরে (সোমাবার) দুপুরে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে বিএসেএমএমইউ ভিসির সঙ্গে সেল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার নম্বরটি বারবারই ব্যস্ত পাওয়া যায়। তবে বিএসএমএমইউ রেজিস্ট্রার ডা. আবদুল হান্নানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পরীক্ষায় কোনো অনিয়ম হয়নি। স্বচ্ছতার ভিত্তিতে পরীক্ষা গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশিত হয়।

এছাড়া ফলাফল প্রকাশের পর ভিসি কনক কান্তি গণমাধ্যমকর্মীদের বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী সম্পূর্ণ মেধারভিত্তিতে ফলাফল প্রকাশিত হচ্ছে। মেধাবীরাই চিকিৎসক হিসেবে নিয়োগ পাবেন। এ ক্ষেত্রে কোনো চাপের কাছে নতিস্বীকার করা হবে না।

অভিযোগ রয়েছে, নিয়োগ পরীক্ষার আগে থেকেই সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ২০টি মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পরীক্ষা ছাড়াই তাদের নিয়োগ দিতে সাবেক ও বর্তমান ভিসির ওপর চাপ দিতে থাকেন। প্রায় ৯ মাসব্যাপী তারা আন্দোলনের নামে দফায় দফায় ভিসির অফিস, বাসভবন ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘেরাও ও ভাঙচুর চালান। একপর্যায়ে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী মেধার ক্ষেত্রে কোনো চাপের কাছে নতিস্বীকার না করতে নির্দেশনা দেন। তবে চাকরিবঞ্চিত চিকিৎসকরা এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ফলাফল প্রকাশে অনিয়ম না হলে তারা যোগ্যতার ভিত্তিতেই চাকরি পাবেন।

নিউজওয়ান২৪.কম/আরকে

আরও পড়ুন
শিক্ষাঙ্গন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত