ঢাকা, ২৪ মে, ২০২৫
সর্বশেষ:

ভারতে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৫

বিশ্ব সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৩৭, ২০ নভেম্বর ২০১৬   আপডেট: ১৪:১৫, ২৪ নভেম্বর ২০১৬

ভারতের উত্তর প্রদেশের কানপুরে এক্সপ্রেস ট্রেনের ১৪টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে সোমবার রাত পর্যন্ত অন্তত ১৪৫ জন নিহতের খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। আহত হয়েছে দেড় শ জন। উদ্ধার অভিযানেরও সমাপ্তি ঘোষণা করা হয় একইদিন। রোববার ইন্দোর থেকে পাটনা যাওয়ার পথে মালাসার ও পুখরাইয়া স্টেশনের মাঝামাঝি এলাকায় যাত্রীবাহী ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয় বলে জানা গেছে।

মৃতের সংখ্যাহ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তি চিকিৎসাধীন রয়েছে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি যাদের মধ্যে কেউ কেউ আশংকাজনক অবস্থায় আছে।

দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ইন্দোর থেকে পাটনা যাওয়ার পথে মালাসার ও পুখরাইয়া স্টেশনের মাঝামাঝি এলাকায় যাত্রীবাহী ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয় বলে জানা গেছে।

শনিবার স্থানীয় সময় দিবাগত রাত ৩টার দিকে কানপুর শহরের ১০০ কিলোমিটার দূরের পুখরাইয়া এলাকায় ইন্দোর-পাটনা এক্সপ্রেস নামের ওই ট্রেনটি দুর্ঘটনায় পড়ে। এসময় অধিকাংশ যাত্রী ঘুমের ঘোরে ছিলেন।

কানপুর পুলিশের আইজি জাকি আহমেদের বরাত দিয়ে রবিবার সকালে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, ঘটনাস্থল থেকেই ৬৩ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে একে একে মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকে যা সোমবার রাতে ১৪৫ জনে গিয়ে ঠেকে।

উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব দুর্ঘটনায় নিহতদের জন্য ৫লাখ, গুরুতর আহতদের জন্য ৫০ হাজার ও সামান্য আহতদের জন্য ২৫ হাজার টাকা সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন। আর ভারতের রেল মন্ত্রণালয়ও নিহতদের জন্য সাড়ে তিন লাখ, গুরুতর আহতদের জন্য ৫০ হাজার ও সামান্য আহতদের জন্য ২৫ হাজার রুপি দেবে বলে জানিয়েছে।

এনবিটি জানায়, দুর্ঘটনায় ১৪টি বগি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ইঞ্জিনের ঠিক পেছনের ২টি বগি। বেশিরভাগ নিহতের ঘটনাও ঘটেছে ওই দুই বগিতে। আর অনেক বগি দুমড়ে মুচড়ে যাওয়ায় ভেতরে আটকা পড়েন অনেক যাত্রী। তাদের উদ্ধারে গ্যাস কাটার ব্যবহার করা হয়।

দুর্ঘটনার সময়ের অভিজ্ঞতা বর্ণনায় ট্রেনের যাত্রী কৃষ্ণ কেশব বলেন, প্রচণ্ড ঝাঁকুনিতে আমাদের ঘুম ভেঙে যায়। সবাই খুব আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। আমি অনেক লাশ দেখেছি, অনেক মানুষ আহত হয়েছে।

হতাহতদের মধ্যে কোনো বাংলাদেশি আছে কি না তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। উল্লেখ্য, চিকিৎসা, ব্যবসা, পড়াশোনা, তীর্থ দর্শন ও অন্যান্য কাজে প্রতিদিন হাজার হাজার বাংলাদেশি ভারত সফর করে থাকেন।

এদিকে, দেশটির রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু এক টুইটে জানান, দুর্ঘটনার জন্যন যারাই দায়ী হোক না কেন, তাদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।

কানপুর ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে জংশন। এ জংশন হয়ে প্রতিদিন কয়েকশ ট্রেন যাতায়াত করে। দুর্ঘটনার কারণে ওই পথের ট্রেনগুলোকে বিকল্প পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

ট্রেন ভারতের অন্যতম প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম। তবে দেশটি ইদানিং বুলেট ট্রেন ব্যবস্থার দিকে যাওয়ার চিন্তা ভাবনা করলেও এর বর্তমানের বাহনসমূহ, রেলপথ এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতি ও ব্যবস্থাপনা সেকেলে এবং ত্রুটিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ কারণে প্রায়ই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে বর্তমানে সোয়া শ কোটি জনসংখ্যার এই দেশে।

নিউজওয়ান২৪.কম/আরকে

আরও পড়ুন
বিশ্ব সংবাদ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত