ঢাকা, ২৯ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ:

বৈশ্বিক মহামারীতে নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা (Security Management)

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:১৯, ৮ এপ্রিল ২০২০  

প্রতীকি চিত্র

প্রতীকি চিত্র

বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ (Covid-19) একটি দ্রুত সংক্রামক ব্যাধি। এর নির্দিষ্ট কোনো প্রতিষেধক কিংবা চিকিৎসা এখনও আমাদের আয়ত্তে আসেনি। অথচ আজ কোভিড-এর কারণে পৃথিবীর যাতায়াত, যোগাযোগ, অর্থনীতি সবই স্থবিরপ্রায়।

কোভিড-এর বিরুদ্ধে যে অস্ত্র এখন সবচেয়ে কার্যকরী, তা হচ্ছে মানুষ থেকে মানুষের দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরা এবং জনসমাগম কমানো। লকডাউন কিংবা কারফিউ-এর মাধ্যমে এর মোকাবেলা একটি কৌশল হিসাবে চিহ্নিত এবং তার ঘন ঘন প্রয়োগও আমরা দেখতে পাই। লকডাউন কিংবা (Work from Home) যা-ই বলি না কেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে মাঠপর্যায়ে কাজের বিকল্প নেই। 

সুতরাং, নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিতদের বাড়িতে বসে কাজের সুযোগ নেই। লক্ষ্য করুন, নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিতরাও যে কোনো সময় কোভিড দ্বারা সংক্রমিত হতে পারেন এবং তারা যেহেতু সম্মুখ দ্বার থেকে অভ্যন্তরে কাজ করেন- তারা সংক্রমিত হলে অন্যদের মাঝে তা দ্রুত সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে।

এমতাবস্থায় নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর ওপর যথাযথ লক্ষ্য রাখা আবশ্যক–

# নিরাপত্তা প্রহরীদের বাসস্থান এমনভাবে করতে হবে, যাতে সেখানে মানুষ থেকে মানুষের দূরত্ব বজায় থাকে।

# প্রতিটি ব্যারাকে একটি সিক-রুম প্রস্তুত করে রাখতে হবে, যাতে কারো মধ্যে কোভিড-এর কোনো উপসর্গ দেখা দিলে তাকে আলাদা করে রাখা যায়।

# কোভিড সংক্রমণের উচ্চ হারের সময়কালে নিরাপত্তা প্রহরীদের ছুটিতে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। বিশেষ কারণে কেউ ছুটিতে গেলে কর্মস্থালে ফেরার পর তাকে সিক রুমে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা কোয়ারেনাইনে রেখে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তারপর উপসর্গ না দেখা দিলে তাকে কাজে নিয়োগ করতে হবে।

# সবার জন্য মাস্ক পরা এবং প্রত্যেহ মাস্ক পরিবর্তন করা আবশ্যক। ক্ষেত্র বিশেষে একাধিকবার ব্যবহার যোগ্য কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করলে তা ভালোভাবে ধুয়ে-শুকিয়ে পুনর্ব্যবহার করতে হবে।

# প্রতিটি ব্যারাকে হাত ধোয়ার পয়েন্ট তৈরি করতে হবে এবং একজন প্রহরী যাতে প্রতি ঘণ্টায় অন্তত একবার করে হাত ধোয় কিংবা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করে তা নিশ্চিত করতে হবে।

# প্রতিটি ব্যারাকে ফার্স্ট-এইড ব্যবস্থাপর সঙ্গে একটি নেবুলাইজার মেশিন ও কোভিড-এর প্রতিরোধমূলক ওষুধ যেমন ভিটামিন- সি ও ডি রাখতে হবে এবং তা নিয়ম করে ব্যবহার করতে হবে।

# কেউ আক্রান্ত হয়েছে; এমন হলে তার পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে আলাদারুমে রেখে কিংবা রোগ মারাত্মক পর্যায়ে গেলে তাকে হাসপাতালে স্থানান্তর করে চিকিৎসা করতে হবে। 

মনে রাখতে হবে, সবক্ষেত্রেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা দ্বারা প্রাথমিকভাবে রোগ সংক্রমণ না ছড়ানোর ব্যবস্থাই কোভিড-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রথম কৌশল হওয়া উচিত। আর কেউ সংক্রমিত হলে, বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।

আমাদের সবার সচেতনতা আর সতর্কতা দ্বারা কোভিড-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে।

নুরুল মান্নান চৌধুরী (সি.পি.পি), নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ

লাইফস্টাইল বিভাগের সর্বাধিক পঠিত