ঢাকা, ২০ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচকে ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ

বিশ্ব সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:০৬, ১৭ অক্টোবর ২০১৯  

ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

ক্ষুধা দূর করার ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে চেয়ে ভালো অবস্থানে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। 

► সূচকে বাংলাদেশ ৮৬তম
► ভারত ১০২, পাকিস্তান ৯৪

তবে নেপাল, মিয়ানমার ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে এখনো পিছিয়ে আছে। চলতি বছরের বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচকে বিশ্বের ১৭৭ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৮তম; যা গত বছর ছিল ৮৬তম। 

খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ও জার্মানভিত্তিক সংস্থা হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ড যৌথভাবে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে। গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স (জিএইচআই)-২০১৯ শিরোনামের এই প্রতিবেদনটি গত মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে। 

ক্ষুধা ও অপুষ্টির হার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে ধারাবাহিক উন্নতি অব্যাহত থাকলেও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অবস্থান গত কয়েক বছর ধরে প্রায় একই বৃত্তে ঘুরছে। ২০১৮, ২০১৭ ও ২০১৬ সালে এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল যথাক্রমে ৮৬, ৮৮ ও ৯০ নম্বরে।

প্রতিবেদনে ক্ষুধার সংজ্ঞা নির্ধারণে চারটি সূচককে আমলে নেয়া হয়েছে। এগুলো হলো—অপুষ্টির হার, ৫ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে কম ওজনের শিশুর হার, ৫ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে কম উচ্চতার শিশুর হার, ৫ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার। এই চারটি মাপকাঠিতে প্রতিটি দেশের স্কোর হিসাব করা হয়েছে ১০০ পয়েন্টের ভিত্তিতে। এই সূচকে সবচেয়ে ভালো স্কোর হলো শূন্য। স্কোর বাড়লে বুঝতে হবে, ক্ষুধার রাজ্যে সেই দেশের পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। আর স্কোর কমা মানে, সেই দেশের খাদ্য ও পুষ্টি পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।    

প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে ধারাবাহিকভাবে। মোট স্কোর গতবারের ২৬.১ থেকে কমে হয়েছে ২৫.৮। তারপরও বাংলাদেশ বৈশ্বিক অবস্থানে দুই ধাপ পিছিয়েছে, কারণ অন্যদের উন্নতি ঘটছে আরো দ্রুত গতিতে।

প্রতিবেদনে ১৯৯০ সাল থেকে মোট ১০টি বছরে বাংলাদেশের স্কোরের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। সেগুলো হলো—১৯৯০ সালে ৫২.২; ১৯৯৫ সালে ৫০.৩; ২০০০ সালে ৩৬.১; ২০০৫ সালে ৩০.৭; ২০১০ সালে ৩০.৩; ২০১৫ সালে ২৭.৩; ২০১৬ সালে ২৭.১; ২০১৭ সালে ২৬.৫; ২০১৮ সালে ২৬.১; ২০১৯ সালে ২৫.৮।        

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার নির্ধারিত সংজ্ঞা অনুযায়ী, একটি শিশুর প্রতিদিনের গ্রহণ করা খাদ্যের পুষ্টিমান গড়ে ১৮০০ কিলোক্যালরির কম হলে বিষয়টিকে ক্ষুধা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

ক্ষুধা সূচক বলছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ অপুষ্টির শিকার; পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ১৪ দশমিক ৪ শতাংশের উচ্চতার তুলনায় ওজন কম; ওই বয়সী শিশুদের ৩৬ দশমিক ২ শতাংশ শিশুর ওজন বয়সের অনুপাতে কম এবং পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার ৩ দশমিক ২ শতাংশ।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সূচকে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে শ্রীলঙ্কা। ১৭.১ স্কোর নিয়ে শ্রীলঙ্কার অবস্থান সূচকের ৬৬ নম্বরে। আর সাত দেশের মধ্যে ৩৩.৮ স্কোর নিয়ে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা আফগানিস্তানের অবস্থান সূচকের ১০৮ নম্বরে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য চার দেশের মধ্যে মিয়ানমার ১৯.৮ স্কোর নিয়ে ৬৯ নম্বরে, নেপাল ২০.৮ স্কোর নিয়ে ৭৩ নম্বরে, পাকিস্তান ২৮.৫ স্কোর নিয়ে ৯৪ নম্বরে এবং ভারত ৩০.৩ স্কোর নিয়ে ১০২ নম্বরে রয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে এগিয়ে থাকা অর্থনীতি ভারতের এই সূচকে পিছিয়ে থাকার মূল কারণ বিপুল জনসংখ্যা। খাদ্য ও পুষ্টি পরিস্থিতিতে ধারাবাহিক উন্নতি অব্যাহত রাখলেও জনসংখ্যার বিপুল বিস্তারের তুলনায় তার গতি ধীর। ভারতে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ২০ দশমিক ৮ শতাংশের উচ্চতার তুলনায় ওজন কম, যা প্রতিবেদনের ১১৭টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। অথচ ২০১৪ সালে ভারতের অবস্থান ছিল ৫৫ নম্বরে। ভারতের এ অবনতির জন্য বিরোধীদলীয় নেতারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যাপক সমালোচনা করছেন।

এই তালিকার শীর্ষে অর্থাৎ ভালো অবস্থানে রয়েছে বেলারুশ, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, বোলগেরিয়া, চিলি, ক্রোয়েশিয়া, কিউবা, কুয়েত ও তুরস্কসহ ১৭টি দেশ; যাদের প্রত্যেকের স্কোর ৫-এর কম।

নিউজওযান২৪.কম/এমজেড

বিশ্ব সংবাদ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত