ঢাকা, ২৮ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ:

বেকারদের সঙ্গে প্রতারণা: সেনা-পুলিশের প্রাক্তন ছয় সদস্য আটক

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২০:০৬, ২৯ এপ্রিল ২০১৬   আপডেট: ১২:০০, ১৮ মে ২০১৬

ঢাকা: চাকরি দেওয়ার নামে সাধারণ জনগণকে প্রতারণার অভিযোগে ছয় ব্যক্তিকে আটক করেছে র‌্যাব। এর সবাই সেনাবাহিনী ও পুলিশের প্রাক্তন সদস্য।
   
শুক্রবার র্যাব সদর দফতর জানায়, সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণায় জড়িত এসব ব্যক্তিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে।

সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের সাবেক এই সদস্যরা নিজ নিজ বাহিনী থেকে অবসর নিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে র্যাব-১ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ জানান, ওই ছয় প্রতারক চাকরি প্রত্যাশী ১৩ জন ব্যক্তির কাছ থেকে ৩৯ লাখ টাকা নেয়। এর বিনিময়ে তাদেরকে ভুয়া নিয়োগপত্র দেওয়া হয়।

আটক ব্যক্তিদের কাছে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের নয়টি ভুয়া নিয়োগপত্রও পাওয়া গেছে।

গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে আজ (শুক্রবার) ভোররাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়।

ঘটনার বিস্তারিত

এ বিষয়ে বিকেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, প্রতারিত ব্যক্তিদের অভিযোগের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, কয়েকটি প্রতারক চক্র দেশের বিভিন্ন জেলার সহজ সরল ও দরিদ্র শ্রেণির লোকদের ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অধীনে ৪র্থ শ্রেণির বিভিন্ন পদে যেমন ওর্য়াড বয়, মালি পদে এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সশস্ত্র বাহিনীতে বেসামরিক পদে যেমন অফিস সহকারী, অপারেটরসহ বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেকের থেকে ০৪ হতে ০৫ লাখ করে টাকা নেয়। পরে তাদের ভূয়া নিয়োগপত্র প্রদান করে।

এভাবে চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছে।
 
সম্প্রতি প্রতারিত ব্যক্তিদের অভিযোগ এবং গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক চক্রের ছয় সদস্যকে আটক করে। এরা হলো (১)মামুন আকন্দ(২৩), পিতা-শাহা জামাল আকন্দ, সাং-কুনাগাতি, থানা ও

জেলা-সিরাজগঞ্জ, (২) আবুল কাশেম(৫২), পিতা-মৃত আছাব উদ্দিন মণ্ডল, সাং-জগতগাতি, থানা ও জেলা-সিরাজগঞ্জ, (৩) আব্দুর রাজ্জাক(৫৭), পিতা-পিয়ার উদ্দিন, সাং-খাদাশ, থানা-শাহজাহানপুর, জেলা-বগুড়া  (৪) তারেক হাসান(৫৩), পিতা- মকাম মোল্লা, সাং-কলাবাড়ীয়া, থানা-নড়াগাতি, জেলা-নড়াইল (৫) নাসির উদ্দীন(৪৬), পিতা-মৃত আব্দুর শুকুর প্রমানিক সাং- মণ্ডতোষ, থানা-ভাংগুরা, জেলা-পাবনা এবং (৬) রাশেদুল মজিদ (৩২) পিতা-রায়হান মজিদ, সাং-উচাখিলা, থানা- ঈশ্বরগঞ্জ, জেলা-ময়মনসিংহ। আটককালে নয়টি ভুয়া নিয়োগপত্র পাওয়া যায় তাদের কাছ থেকে। এসময় প্রতারক চক্রের সদস্য রফিক, তরিকুল ইসলাম, দিদার ও সবুজসহ অজ্ঞাত সংখ্যক ব্যক্তি পালিয়ে যেতে সক্ষম হয। তবে তাদের আটকের চেষ্টা অব্যাহত আছে বরে জানায় র‌্যাব।

প্রতারিত ব্যক্তিরা জানান, প্রতারকরা প্রথমে মেডিক্যাল চেকআপ বাবদ ২০ হাজার টাকা করে নেয় এবং প্রার্থীদের বিশ্বাস অর্জনের জন্য ঢাকা সিএমএইচ বা তার আশে পাশের কোনো স্থাপনার বাথরুমসহ বিভিন্ন গোপনীয় স্থানে নিয়ে প্রার্থীদের ভুয়া মেডিক্যাল চেকআপ সম্পন্ন করে। পরে নিয়োগপত্র প্রদান বাবদ প্রতিজনের কাছ থেকে চার

থেকে পাঁচ লাক টাকা করে নেয়। এভাবে মোট ১৩ জনের কছ থেকে মোট ৩৯ লাখ টাকা নেয়। পরবর্তীতে তাদের দেওয়া ভুয়া নিয়োগপত্র নিয়ে কর্মস্থলে যোগদান করতে গিয়ে জানতে পারে যে তারা প্রতাড়িত হয়েছে।

এরপর তারা প্রতারকদের বিষয়টি জানালে তারা উল্টো ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রতাড়িতদের জীবননাশের হুমকি  দেয়। তারা বিষয়টি গোপন রাখার জন্য ভয়ভীতিও প্রর্দশন করে। ভুক্তভোগীরা জানায়, জমিজমা, ফসলসহ সর্বস্ব বিক্রি করে চাকরি লাভের আশায় আসামিদেরকে তরা চাহিদামতো টাকা দিযেছিলেন।

গ্রেফতার  প্রতারকদের মধ্যে আবুল কাশেম ও নাসির উদ্দিন সেনাবাহিনী, তারেক হাসান পুলিশ বাহিনী ও পলাতক আসামি দিদার বিজিবির চাকুরিচ্যুত/অবসর প্রাপ্ত সদস্য বলে জানা গেছে। পলাতক আসামি রফিকুল ও তরিকুল সেনাবাহিনীর চাকুরিচ্যুত সদস্য এবং তারা নিজেদেরকে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা বা বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ গ্রামের সহজ সরল মানুষের সঙ্গে প্রতারণা এবং বিভিন্ন অনৈতিক ও অবৈধ কাজ করে আসছে বলে জানা যায়।

তাদের সবার বিরুদ্ধে আইনুনুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানায় র্যাব।


নিউজওযান২৪.কম/এসআর

আরও পড়ুন
অপরাধ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত