ঢাকা, ২৪ মে, ২০২৫
সর্বশেষ:

বিহারে মদ নিষিদ্ধের ফজিলত: কেউ খাচ্ছে সাবান, কেউ কাঁচামরিচ

বিলাতি নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭:৫৮, ৮ এপ্রিল ২০১৬   আপডেট: ১৩:৫৬, ৯ এপ্রিল ২০১৬

মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে নিজের জনগণকে রক্ষা করতে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ সম্প্রতি তার রাজ্যে মদ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেন। তার এ উদ্যোগ ব্যাপক আলোচনা-সমলোচনা আর বিতর্কের সৃষ্টি করে। তবে ‘জনস্বার্থে’সবকিছু অগ্রাহ্য করে গত মঙ্গলবার থেকে তার রাজ্যে ঠিক ঠিক মদ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এরপরই শুরু হলো সত্যিকারের বিপত্তি। পানাসক্ত বা মাতাল যাই বলুন না কেন- নিয়মিত মদ খান এরকম হাজার হাজার লোক মদ না পেয়ে উল্টাপাল্টা আচরণ শুরু করে দেয় রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে। সর্বশেষ খবর পর্যন্ত জানা গেছে- মঙ্গলবার রাত থেকে বিষুদবার সকাল পর্যন্ত কমপক্ষে সাড়ে সাত শ ব্যক্তি চরম অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ যেন টুপি বাঁচাতে গিয়ে ধুতি গায়েব হওয়ার অবস্থা।

পরিস্থিতির ভয়াবহতা কতটুকু তা ফুটে উঠেছে বিহারের এক কিশোরের মায়ের বয়ানে। সংবাদ মাধ্যমকে তিনি জানান তার ছেলে প্রতিদিন গলাপর্যন্ত মদ গিলতো। কিন্তু রাজ্যজুড়ে অ্যালকোহল নিষিদ্ধ হওয়ায় মঙ্গলবার রাত থেকে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে সে। মদ না পেয়ে সে হাতের কাছে যেই পাচ্ছে তাই খাওয়া শুরু করে। এমনকি ঝাল কাঁচামরিচও বাদ যাচ্ছে না। আর শুধু কি যা ইচ্ছা তাই খাওয়া! মদের জন্য সে কাছে টিঠে যাকেই পাচ্ছে তাকেই পিটুনি দিচ্ছে মারাত্মকভাবে।

হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অপর এক ব্যক্তির ঘটনাও কম তাজ্জবকর নয়। তিনি মদ না পেয়ে আস্ত একটা সাবান চিবিয়ে খেয়েছেন। এতে করে তার অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।

অ্যালকোহল উইথড্রল সিম্পটমজনিত এই অদ্ভূত কাণ্ডে বিহারের এখনকার পরিস্থিতি বেশ জটিলই বলা যায়। নীতিশ কুমার সরকারের শুকনো রাজ্য (ড্রাই স্টেট) নীতির জেরে মদ্যপ ব্যক্তি এবং তাদের পরিবার-পরিজন রীতিমতো কঠিন চক্করে পড়ে গেছে বলা যায়। বিভিন্ন হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, মদের অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়াদের মাঝে নানাবিধ জটিলতা দেখে দিয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়অদের কারও মুখ বিকৃত হয়ে যাচ্ছে, কারও শরীর থরথর করে কাঁপছে, কারও কারও দেখা দিয়েছে স্মৃতি বিভ্রম- এদের কেউ কেউ এমনকি পরিবারের সদস্যদেরও চিনতে পারছে না। যিনি আস্ত সাবান চিবিয়ে খেয়েছেন তার অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।

পরিবারের লোকজনকে চিনতে পারছেন না এমন এক ব্যক্তির স্বজনরা জানান ওই ব্যক্তি রোজ কমপক্ষে ৬০০ মিলি থেকে ১২০০ মিলির ওপরে মদ গিলতেন। মদ নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই তার পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করে।

তবে বিহার সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, অসুস্থ সবাইকেই বিভিন্ন হাসপাতালের ডিঅ্যাডিকশন সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।

নিউজওয়ান২৪.কম/এসএআর

আরও পড়ুন
বিশ্ব সংবাদ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত