ঢাকা, ১৯ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ:

প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে মুচি দিলেন ২০ হাজার টাকা

রংপুর সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ২০:৩৭, ২৭ এপ্রিল ২০২০  

মিঠাপুকুরের ইউএনও মামুন ভূঁইয়ার হাতে নিজের কষ্টে জমানো টাকাগুলো তুলে দেন চর্মকার রবি দাস

মিঠাপুকুরের ইউএনও মামুন ভূঁইয়ার হাতে নিজের কষ্টে জমানো টাকাগুলো তুলে দেন চর্মকার রবি দাস

এমন ঘটনার খবর শুনে সবার মনই আনন্দ ও গৌরবে পূর্ণ হয়ে যায়। মনে পড়ে যায়- আসলেই মানুষ তো স্বর্গের বাসিন্দা ছিল। বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারির এই দুর্যোগে যখন এই দেশে জনপ্রতিনিধিদের অনেকে ত্রাণ চুরিতে ব্যস্ত তখন অসহায় মানুষের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন পেশায় মুচি রবি দাস। 

রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার লতিবপুর ইউনিয়নের আবদুল্লাহপুর গ্রামের মিলন রবি দাস (৩৭)।  দলিত সম্প্রদায়ের এই ব্যক্তি জুতা সেলাই করে অতি কষ্টে সংসার চালান। অভাব-অনটনের সংসারে বড় হয়েছেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চৌকাঠো পেরুতে পারেননি। প্রায় ২০ বছর আগে মারা যান তার বাবা মতি লাল। এরপর পৈত্রিক পেশাকে আঁকড়ে ধরে টানতে শুরু করেন সংসারের ঘানি। মিঠাপুকুর উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকের পাশে জুতা সেলাইয়ের দোকান থেকে যা আয় হয় তা দিয়েই চলে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে গড়া সংসার। সঙ্গে আছেন রবির মা-ও। পরিবার নিয়ে থাকেন অন্যের জমিতে। মেয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে এবং ছেলে প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তবে শত অভাব-অনটনেও দুই শতাংশ জমি কিনেছেন নিজের বাড়ি তোলার জন্য। কিন্তু সেখানে বাড়িঘর বানানো হয়নি এখনও। তিল তিল করে জমাচ্ছিলেন বাড়ি বানানোর টাকা।

কিন্তু হঠাৎ দেখা দেওয়া মহামারী করোনার দুর্যোগে অসহায় মানুষের কষ্টের কথা চিন্তা করে নিজের বসতঘর নির্মাণের পরিকল্পনা স্থগিত করেন তিনি। এ বাবদ জমানো ২০ হাজার টাকা দান করে দেন প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে। আজ (সোমবার) দুপুরে দিকে মিঠাপুকুরের ইউএনও মামুন ভূঁইয়ার হাতে নিজের কষ্টে জমানো টাকাগুলো তুলে দেন চর্মকার রবি দাস। 

তিনি জানান, করোনাভাইরাস জনিত কারণে কার্যত লকডাউন সারাদেশে নিম্নআয়ের মানুষের দুর্ভোগ এখন চরমে। সরকারসহ অনেকেই দরিদ্র ও কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে ত্রাণ নিয়ে। এসব দেখে তারও ইচ্ছা জাগে মহৎ এই কর্মে শরীক হতে। তাই ঘরবানানোর জন্য জমানো টাকাটা দান করার সিদ্ধান্ত নেন।

রবি দাস বলেন, ‘দেশে অনেক সময় অনেক দুর্যোগ দেখেছি। আগে থেকেই ইচ্ছা ছিল দেশের দুর্যোগে মানুষের জন্য কিছু করার। করোনার মহামারি আমাকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়। জুতা সেলাই করে কিছু টাকা জমিয়েছি ঘর করার জন্য। কিন্তু করোনার দুর্যোগে না খেয়ে থাকা মানুষের কষ্ট দেখে ঘর করার ইচ্ছা শেষ হয়ে যায়। দীর্ঘদিনের জমানো ২০ হাজার টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা দিয়ে দিলাম। আশা করি এতে একটু হলেও দরিদ্র মানুষের উপকার হবে।’ 
নিউজওয়ান২৪.কম/আরকে

আরও পড়ুন
স্বদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত