ঢাকা, ২৮ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ:

তেজস্ক্রিয় পানি শোধন করে সাগরে ছাড়ছে জাপান, প্রতিবেশীদের উদ্বেগ

প্রকাশিত: ১২:৪১, ১৪ জানুয়ারি ২০২৩  

ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের একাংশ                      -ফাইল ফটো

ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের একাংশ -ফাইল ফটো

ভূমিকম্প ও সুনামিতে ধ্বংস হয়ে যাওয়া জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় পানি শোধন করে সমুদ্রে নিষ্কাশন করা হচ্ছে। এ সূত্রে দেশটি চলতি বছর প্রায় ১০ লাখ টন তেজস্ক্রিয় পানি সাগরে ছাড়বে বলে জানা গেছে। 

বিষয়টি নিয়ে জাপানের প্রতিবেশী দেশগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

এদিকে ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনা কর্তৃপক্ষ বলছে, পানি শোধনের পর তাতে তেজস্ক্রিয় কণার মাত্রা জাতীয় মানদণ্ড অনুযায়ী ঠিক আছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থাও (আইএইএ) শোধিত এই পানি সাগরে ছাড়া নিরাপদ উল্লেখ করে প্রস্তাবটি অনুমোদন করেছে। 

বিবিসি জানায়, ফুকুশিমার দূষিত সমস্ত পানি শোধন করে সাগরে ছাড়তে প্রায় চার দশক সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শুক্রবার জাপানের মন্ত্রী হিরোকাজু মাতসুনো বলেন, ‘আমরা এবছরের বসন্ত কিংবা গ্রীষ্মেই পানি সমুদ্রে ফেলব বলে আশা করছি। তবে তার আগে আইএইএ থেকে চূড়ান্ত একটি রিপোর্ট আসার অপেক্ষায় থাকবে সরকার।’

তবে প্রতিবেশী দেশগুলোসহ স্থানীয় জেলে সম্প্রদায় তেজস্ক্রিয় পানি সাগরে ছাড়ার বিরোধিতা করে আসছে। জেলেদের আশঙ্কা, পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের পানির সূত্রে ওই অঞ্চলের সামুদ্রিক খাবারের ওপর আস্থা হারাবে মানুষজন।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ১১ মার্চ ভয়াবহ ভূমিকম্প থেকে সৃষ্ট সুনামির বিশাল জলোচ্ছ্বাস ফুকুশিমায় অবস্থিত পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটির চারটি পারমাণবিক চুল্লিকে প্লাবিত করে। এতে কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

ফুকুশিমা বিপর্যয়কে তুলনা করা হয় ইউক্রেইনের চেরনোবিল পারমাণবিক দুর্ঘটনার সঙ্গে। দুটি বিপর্যয়েই পরিবেশ-প্রকৃতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জীবন বিপন্ন হওয়ায় আশেপাশের এলাকা থেকে লাখো মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয় তখন।

প্রসঙ্গ, ফুকুশিমার তেজস্ক্রিয়তাদুষ্ট পানি সাগরে ছাড়ার বিষয়টি ২০২১ সালে প্রথম অনুমোদন করে জাপান সরকার। ওই সময় টোকিও বলেছিল, তেজস্ক্রিয় ১০ লাখ টন পানি পর্যায়ক্রমে শোধন করে সাগরে ফেলা হবে।

জানা গেছে, পারমাণবিক চুল্লি ঠান্ডা রাখতে ব্যবহৃত তেজস্ক্রিয় পানি প্রতিদিনই ফিল্টার হয়ে ট্যাংকে সঞ্চিত হচ্ছে। সাগরে ফেলার আগে এই পানিতে থাকা তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ বেশিরভাগই দূর করা হয়েছে। তবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির পরিচালনা কোম্পানি টেপকো জানিয়েছে, ওই পানিতে থাকা ট্রিটিয়ামের মাত্রা এখনও জাতীয় নিরাপত্তা মানদণ্ডের ওপরে আছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, তেজস্ক্রিয় পানি থেকে ট্রিটিয়াম আলাদা করা খুব কঠিন এক কাজ। অবশ্য এর মাত্রা বেশি থাকলেই কেবল তা মানুষের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। ফলে সাগরে পানি ছাড়ার আগে এই ট্রিটিয়ামকে পাতলা করে বিপজ্জনক মাত্রার নিচে নামানো জরুরি। জাপান সরকার এই প্রক্রিয়াটি সাধনের পরই ওই পানি সমুদ্রে ফেলার কথা বলছে।

নিউজওয়ান২৪/একে

বিশ্ব সংবাদ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত