ঢাকা, ২৪ মে, ২০২৫
সর্বশেষ:

কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার প্রতিশোধ! ডালাসে গুলি করে ৫ পুলিশ খুন

বিশ্ব সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:১৩, ৮ জুলাই ২০১৬   আপডেট: ২২:০৮, ৯ জুলাই ২০১৬

শ্বেতাঙ্গ পুলিশের গুলিতে কৃষ্ণাঙ্গ নিহতের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে চলমান বিক্ষোভে পাঁচ পুলিশ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে গুলি করে। এবং এই গুলি করাটা কোনো উত্তেজিত মুহূর্তের আকস্মিক ঘটনা নয়- সম্পূর্ণ ঠাণ্ডা মাথায় প্রতিশোধপরায়ণ স্নাইপার টার্গেট করে হত্যা করেছে ওই পুলিশদের।

এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও অন্তত সাত পুলিশ সদস্য যাদের দুজনের জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯টায় ঘটা এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ডালাস পুলিশ প্রধান ডেভিড ব্রাউন জানিয়েছেন, হত্যাকারীদের খুঁজে বের করতে ব্যাপক অভিযান শুরু হয়েছে।

রয়টার্সসহ অন্যান্য সংবাদ মাধ্যম জানায়, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯টায় ডালাস শহরে কৃষ্ণাঙ্গদের বিক্ষোভ শুরুর পর অজ্ঞাত স্থান থেকে সেখানে মোতায়েন পুলিশ সদস্যদের ওপর গুলি চালায় স্নাইপার রাইফেলধারীরা। এসময় মিছিলকারীদের মধ্যে ছুটোছুটি-আতঙ্ক শুরু হয়ে যায়।

অন্তত দুইজন স্নাইপার উঁচু কোনো অবস্থান থেকে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের টার্গেট করে গুলি করে বলে মনে করা হচ্ছে।

এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, অপর এক অস্ত্রধারী যে কি না একটি গ্যারেছে লুকিয়ে আছে- তাকে ধরার জন্য ওই স্থান ঘিরে রেখেছে পুলিশ।

পেছনের ঘটনা
গত বুধবার মিনিয়াপোলিস এলাকায় পুলিশের গুলিতে ফিলান্ডো ক্যাস্টিল (৩২) নামে এক কৃষ্ণাঙ্গ গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে মারা যায়। এর প্রতিবাদে ছড়িয়ে পড়ে কৃষ্ণাঙ্গ বিক্ষোভ।

ক্যাস্টিলকে পুলিশ গুলি করার সময় সঙ্গে ছিলেন তার বাগদত্তা। তিনি ফেসবুকে এ ঘটনার বয়ানসহ একটি ভিডিও পোস্ট করেন। এতে তিনি দাবি করেন, ‘উপযুক্ত কারণ ছাড়াই’ পুলিশ তার বন্ধুকে গুলি করেছে। ১০ মিনিটের ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়।

এরপর শুরু হয় ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভ। কারণ, চলতি বছরই যুক্তরাষ্ট্রে এরকম আরও কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে যাতে একশ্রেণির সশস্ত্র পুলিশের জিঘাংসার শিকার হতে হয়েছে কৃষ্ণাঙ্গদের।

ক্যাস্টিলের শোকাহত মা ভালেরি ক্যাস্টিল সিএনএনকে জানান, জীবনে একবারের জন্যও ভাবেননি তার ছেলেকে এমন লোকজন হত্যা করতে পারে যাদের দায়িত্ব আসলে সুরক্ষা করা ও সেবা দেওয়া।

ঘটনার বয়ানে ক্যাস্টিলের বাগদত্তা আরও জানান, তাদের গাড়ির পেছন দিকের একটি লাইট ভাঙা ছিল। এ কারণে পুলিশ তাদের গাড়ি থামায়। পুলিশের সওয়ালের জবাবে চালকের আসনে বসা ক্যাস্টিল লাইসেন্স করা একটি অস্ত্র সঙ্গে থাকার কথা স্বীকার করেন।

কথাবার্তার একপর্যায়ে পকেট থেকে আইডি ও ওয়ালেট বের করতে যান ক্যাস্টিল। এসময় উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তা তাকে গুলি করেন।

নিহতের ক্রন্দনরত বাগদত্তাকে তখন কাঁদতে কাঁদতে পুলিশকে বলছিলেন, দয়া করে বলবেন না যে সে মারা গেছে... আপনি তাকে চারবার গুলি করেছেন, স্যার। এটা তার প্রাপ্য ছিল না। সে ভাল মানুষ ছিল।

সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফার্গুসন, মিসৌরি, বাল্টিমোর ও নিউ ইয়র্কে শেতাঙ্গ পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গদের মৃত্যুর ঘটনা ব্যাপক দেশটির কৃষ্ণাঙ্গ সামজে হতাশা আর ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।

ওয়াশিংটন পোস্টের তথ্যে জানা যায়, সদ্য নিহত ক্যাস্টিল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে চলতি বছর পুলিশের গুলিতে ৫০৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ১২৩ জন হচ্ছে কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান। বছরের বাকি ছয় মাস কিন্তু এখনও বাকি!

নিউজওয়ান২৪.কম/আরকে

 

আরও পড়ুন
বিশ্ব সংবাদ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত