ঢাকা, ২১ মে, ২০২৫
সর্বশেষ:

এযাবৎ শান্তিতে নোবেল পেয়েছে যেসব সংস্থা-জোট

বিশ্ব সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:৫৪, ৬ অক্টোবর ২০১৭   আপডেট: ১৯:৩৮, ১৯ অক্টোবর ২০১৭

শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেয়া হচ্ছে ১৯০১ সাল থেকে। এ বছর শান্তিতে নোবেল পেয়েছে একটি জোট। ১৯৯১ সাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত মোট ২৩টি সংস্থা, জোট ও প্রতিষ্ঠান শান্তিতে নোবেল পেয়েছে। এর মধ্যে কোনো কোনো সংস্থা একাধিকবার শান্তির নোবেল পেয়েছে। জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন এবং ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেড ক্রস, এই সংস্থা দুটি দুইবার করে শান্তিতে নোবেল পেয়েছে। অর্থাৎ মোট ২৫ বার শান্তির নোবেল দেয়া হয়েছে সংস্থা, জোট বা প্রতিষ্ঠানকে। আর এখন পর্যন্ত মোট ৯৫জন ব্যক্তি শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

এবার শান্তিতে নোবেল পেয়েছে পরমাণু অস্ত্র বিলুপ্তকরণ জোট ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবলিশ নিউক্লিয়ার উইপনস (আইসিএএন)। তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করা বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) একটি জোট এটি। শুক্রবার (৬ অক্টোবর) নরওয়েজীয় নোবেল কমিটি এই জোটের নামে পুরস্কার ঘোষণা করে।

পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার বিশ্বে ভয়াবহ মানবিক বির্যয় ডেকে আনার বিষয়ে মানুষকে সতর্ক করা। সেইসঙ্গে এ ধরনের অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর উদ্যোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এই আইসিএএন। যে কারণে এবার নোবেল পেল জোটটি।

এর আগে ২০১৫ সালে শান্তিতে নোবেল পায় তিউনিশিয়ান ন্যাশনাল ডায়লগ কোয়ার্টেট। এটি দেশটির চারটি সংগঠনের একটি জোট। তিউনিসিয়ায় ২০১১ সালের বিপ্লবের পর সেখানে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্রের ধারা সুসংহত করতে অবদান রাখার জন্য এই জোট পুরস্কার পায়।

২০১৩ সালে এ পুরস্কার পায় রাসায়নিক অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণ সংস্থা (ওপিসিডব্লিউ)। এটি একটি আন্তঃসরকারি সংস্থা। এটির সদর দফতর নেদারল্যান্ডের হেগ শহরে। রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারে নিরুৎসাহিতকরণ ও বিস্তার রোধে প্রাণান্তকর চেষ্টায় সম্পৃক্ত থাকায় সংস্থাটিকে শান্তির নোবেল দেয়া হয়।

আর ২০১২ সালে এই পুরস্কার লাভ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ছয় দশকেরও অধিককাল ধরে ইউরোপে শান্তি ও স্থিতিশীলতা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখার প্রেক্ষাপটে ইইউ এই পুরস্কার পায়।

২০০৭ সালে পায় জাতিসংঘের ইন্টারগভার্নমেন্টাল প্যানেল ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি)। মনুষ্যসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি ও জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বিভিন্ন উদ্যোগে জড়িত থাকার জন্য এ পুরস্কার দেয়া হয়। এই সংস্থার সঙ্গে একজন ব্যক্তিও এ পুরস্কার পান। তিনি হলেন অ্যালবার্ট আর্নল্ড গোর (জুনিয়র)। যিনি ১৯৯৩ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম উপ-রাষ্ট্রপতি ছিলেন।

২০০৬ সালে বাংলাদেশের গ্রামীণ ব্যাংক শান্তিতে নোবেল পায়। সেইসেঙ্গে ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনুস যৌথভাবে এ পুরস্কার পান।

২০০৫ সালে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা এবং মিশরের মোহাম্মদ এল বারাদি যৌথভাবে এ পুস্কার পান। ২০০১ সালে এ পুরস্কার যৌথভাবে পায় জাতিসংঘ এবং এ সংস্থার সপ্তম মহাসচিব কফি আনান।

১৯৯৯ সালে মেদস্যাঁ সঁ ফ্রন্তিয়া (এমএসএফ) শান্তিতে নোবেল পায়। এটি একটি ধর্মনিরপেক্ষ, বেসরকারি মানবিক সাহায্য সংস্থা। বিশ্বের বিভিন্ন যুদ্ধবিদ্ধস্ত এলাকায় এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থাটি।

১৯৯৭ সালে ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু ব্যান ল্যান্ডমাইনস শান্তিতে নোবেল পায়। সংস্থাটি ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সংস্থার সঙ্গে যুক্তরাষ্টের জোডি উইলিয়ামস যৌথভাবে ওই বছর পুরস্কারটি পান।

১৯৯৫ সালে শান্তির নোবেল পায় পাগওয়াশ কনফারেন্সেস ফর সাইন্স অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স। সংস্থাটি ১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সঙ্গে যৌথভাবে ব্রিটিশ-পোলিশ পদার্থবিজ্ঞানী জোসেফ রটব্লাটও এ পুরস্কার পান।

জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা শান্তিতে নোবেল পায় ১৯৮৮ সালে। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থা সংঘর্ষে ক্ষত-বিক্ষত দেশগুলোতে শান্তিপূর্ণ অবস্থা ফেরাতে মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।

ইন্টারন্যাশনাল ফিজিসিয়ানস ফর দি প্রিভেনশন অফ নিউক্লিয়ার ওয়ার। ১৯৯৫ সালে সংস্থাটি শান্তিতে নোবেল পায়। ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই সংস্থাটি।

জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন প্রথমবার ১৯৮১ সালে এ পুরস্কার পায়। ১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠিত এ সংস্থাটির দায়িত্ব হচ্ছে জাতিসংঘ বা কোনো দেশের সরকারের অনুরোধে স্বদেশহীন, বাস্তুহারা, বিতাড়িত, মাতৃভূমিচ্যূত শরণার্থীদের রক্ষা করা, তাদের অবস্থাকে সমর্থন যোগানো এবং নিজ দেশে ফেরা বা যথোপযুক্ত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।

১৯৭৭ সালে শান্তিতে নোবেল পায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এটি মানবাধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা। ১৯৬৯ সালে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এ পুরস্কার পায়।

কল্যাণমুখী ভূমিকার কারণে ১৯৬৫ সালে জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) শান্তিতে নোবেল পায়। ১৯৬৩ সালে ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেড ক্রস এবং লীগ অফ রেড ক্রস সোসাইটিজ যৌথভাবে শান্তির নোবেল পায়।

১৯৫৪ সালে জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন দ্বিতীয়বারের মতো এ পুরস্কার পায়। আর ১৯৪৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি সংস্থা যৌথভাবে এ পুরস্কার পায়। সংস্থা দুটি হলো- অ্যমেরিকান ফ্রেন্ডস সার্ভিস কমিটি এবং ফ্রেন্ডস সার্ভিস কাউন্সিল

১৯৪৪ সালে ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেড ক্রস (আইসিআরসি) দ্বিতীয়বারের মতো শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পায়। এটি একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান।

নান্সেন ইন্টারন্যাশনাল অফিস ফর রেফিউজিস ১৯৩৮ সালে এ পুরস্কার পায়। ১৯১৭ সালে প্রথমবারের মতো শান্তিতে নোবেল পায় ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অফ দ্য রেড ক্রস।

১৯১০ সালে আন্তর্জাতিক শান্তি ব্যুরো এই পুরস্কার পায়। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে পুরাতন আন্তর্জাতিক শান্তি সংঘ, যেটি ১৮৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।

ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল ল ১৯০৪ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করে। ১৮৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এটি আন্তর্জাতিক আইন সম্পর্কিত শিক্ষণ এবং উন্নয়নের জন্য একটি সংগঠন।

নিউজওয়ান২৪.কম

আরও পড়ুন
বিশ্ব সংবাদ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত