ঢাকা, ১৯ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ:

আমাদের সুস্বাস্থ্য ও পচা সাবান

স্বাস্থ্য ডেস্ক

প্রকাশিত: ০১:৫৯, ১৩ জুলাই ২০১৬   আপডেট: ১১:৩২, ২৩ জুলাই ২০১৬

বলা হয়ে থাকে- "চলতি ট্যাপের পরিষ্কার পানিতে ৩০ সেকেন্ড হাত ধরে রাখলেই হাত ৯৬% জীবানুমুক্ত হয়ে যায়। আর সাবান দিয়ে ধুলে তা প্রায় ৯৯% পর্যন্ত পরিষ্কার হয়"। সাবান দিয়ে হাত ধুইলে যেসব জীবানু পরিষ্কার হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য- স্ট্যাফাইলোকক্কাস, হেপাটাইটিস, ফাংগাস, হার্পিস, রাইনোভাইরাস, টাইফয়েড উল্লেখযোগ্য।

আমরা জানি, সাবান হলো স্টিয়ারিক এসিডের একটি লবন মাত্র। এর সাথে বিভিন্ন সুগন্ধী ও কেমিকেল মিশিয়ে ব্যবহারের উপযোগী করা হয়। সাবানের ময়লা পরিষ্কারের মেকানিজম হলো– Detergent effect। সারফেস টেনসন কমিয়ে দেয়া। অনেকেই ভাবেন সাবান বুঝি জীবাণু মেরে ফেলে। আসলে সেটা আংশিক সত্য।

সাবানের অ্যান্টিসেপটিক ইফেক্ট খুব কম। এটা মূলত সারফেস টেনশন কমিয়ে চামড়ায় লেগে থাকা কে আলগা করে দেয়। পানি সেটা ধুয়ে নিয়ে যায়।

WHO এর মতে – "সাবান দিয়ে কম পক্ষে “২০ সেকেন্ড” হাত ধৌত করতে হবে"। কিন্তু আমাদের দেশে ছাগলকে মন্দির দেখানোর মত করে সাবান ব্যবসা করছে করছে। ১০ প্রকার জীবানু ধ্বংস করে এবং ১০ সেকেন্ডে পরিষ্কার হয় এই মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে সাবান বিক্রি করছে। এটা আমাদের দেশে ‘স্বাস্থ্য সচেতন’ মানুষের নজর কাড়ে অনায়াসেই। আর বিজ্ঞাপনে ডাক্তার সাজিয়ে মিথ্যা বলাকে মানুষ অন্ধের মত বিশ্বাস করে।

CDC এর গাইডলাইনে স্পষ্ট উল্লেখ আছে– যে কোনো প্রকার সাবানেই জীবাণু ধৌত করার উপাদান সমান ভাবে বিদ্যমান। এবং তা সমান ভাবে কার্যকরী। সেই সেন্সে জীবাণুনাশক সাবানগুলোর মধ্যে অতিরিক্ত এমন কিছু নাই, যা এর বিশেষত্ব এনে দিবে। তার উপর ১০ সেকেন্ডে কাজ করার কথা WHO এর গাইডলাইনের বিরোধী।

সাবানকে এন্টিসেপ্টিক সাবান বলা হয়– যখন এর মধ্যে “ট্রাইক্লোজান” যোগ করা হয়। কারণ, তার জীবাণু ধ্বংসকারী গুণ আছে। কিন্তু আমাদের দেশের কোনো সাবানেই সেই জিনিটা নাই। আর যদিও তা থাকে অতিরিক্ত ট্রাইক্লোজান ক্যান্সারের কারণ।

তাইলে লাইফবয়, স্যাভলন, ডেটল, কসকো সাবান আর আলমের এক নাম্বার পচা সাবানের মধ্যে পার্থক্য কি রইলো। তবে আলমের পচা সাবানের প্রশংসা করতেই হয়- যেখানে দুনিয়া বিজ্ঞাপনে ভাল বলতে বলতে ফেনা তুলে ফেলতেছে, সেখানে তারা বলতেছে পচা সাবান। কেমন লুলাইয়িত ব্যাপার!

হাত ধোঁয়ার জন্য উত্তম উপায় হলো– এলকোহল বেজড হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা। সেটা তে মোটামুটি সব ধরনের অরগানিজম মারা যায়। যেখানে সাবান পাওয়া না পাওয়া যায়, সেখানে ছাই অথবা বালু দিয়ে হাত ধোয়ার জন্য বলা হয়েছে । এটাও WHO এর গাইডলাইনের শেষ কথা।

পুনশ্চ: হাত ধোঁয়া স্বাস্থ্য সচেতনতার লক্ষণ। কিন্তু বার বার হাত ধুয়ে চামড়া ক্ষয় করে ফেলা কিন্তু মানসিক রোগের লক্ষণ। যাকে আমরা OCD ডিজেজ বা শুচিবায়ু বলে থাকি। (সংগ্রহীত)

নিউজওয়ান২৪.কম/এসকে

লাইফস্টাইল বিভাগের সর্বাধিক পঠিত