ঢাকা, ১৯ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ:

আজমেরীর ২ সহযোগীকে ৭ দিনের রিমান্ডে চায় পুলিশ

নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ২১:০৭, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

আজমেরি ওসমান (বাঁয়ে) ও পলিশের হাতে গ্রেপ্তার শাহাদ হোসেন ও মোখলেছুর রহমান      ছবি: সংগৃহীত

আজমেরি ওসমান (বাঁয়ে) ও পলিশের হাতে গ্রেপ্তার শাহাদ হোসেন ও মোখলেছুর রহমান ছবি: সংগৃহীত

চাঁদার জন্য ব্যবসায়ীকে মারধর ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর ও বন্দর) আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য একেএম নাসিম ওসমানের একমাত্র ছেলে আজমেরী ওসমানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। আদালতে তাদের বিরুদ্ধে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। 

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার দিনগত রাত সোয়া ১২টা থেকে পৌনে ১টা পর্যন্ত শহরের আল্লামা ইকবাল সড়কের দেওয়ায়ান মঞ্জিলের নিচতলার একটি অফিসে অভিযান চালায় পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের বয়ানে জানা গেছে, রাত সোয়া ১২টার দিকে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ যৌথ অভিযান চালায় দেওয়ান মঞ্জিলের নিচতলায়। অভিযানের শুরুতে ডিবি পুলিশের ৮টি মাইক্রো বাস আল্লামা ইকবাল রোডের উত্তর ও দক্ষিণে ব্যারিকেড দিয়ে বেরিকেড তৈরি করে। এর ফলে ওই সড়কে চলাচল বন্ধ হয়ে যায় সাধারণের। কিছুক্ষণ পর সদর থানার ওসি আসাদুজ্জামান ও ফতুল্লা থানার ওসি আসলামের নেতৃত্বে পেুলিশের আরও দুটি দল সেখানে উপস্থিত হয়। এরপর পুলিশ প্রথমে দেওয়ান মঞ্জিলের নিচতলায় আজমেরি ওসমানের অফিসে অভিযান চালায়। সেখান থেকে আজমেরির সহযোগী হিসেবে পরিচিত শাহাদৎ হোসেন ও মোখলেছুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর একই ভবনের পঞ্চম তলার বাসাবাড়িতে অভিযান চালানো হয়। একই সময়ে পুলিশের অপর একটি টিম পাশের কাদের ভবনেও অভিযান চালায়। সব শেষে আজমেরি ওসমানের পরিবারের সঙ্গে কথাবার্তা বলে গ্রেপ্তার দুই আসামিসহ চলে যায় পুলিশ।  

আজ (শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের আমলাপাড়া এলাকার মৃত আহসান উল্লাহর ছেলে বাচ্চু মিয়া নামের ব্যবসায়ী বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় চাঁদাবাজীর মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি আজমেরী ওসমান হচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের বর্তমান এমপি সেলিম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমানের ভাতিজা। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি প্রয়াত নাসিম ওসমান তার আসনের বর্তমান এমপি সেলিম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের বর্তমান এমপি শামীম ওসমানের সহোদর ভাই।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন, গ্রেপ্তার হওয়া ফতুল্লা ইসদাইর এলাকার ফকির চাঁনের ছেলে জেলা ছাত্রসমাজের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন (৩২), সোনারগাঁও উপজেলার নাজিরপুর এলাকার গোলজার হোসেনের ছেলে মোখলেছুর রহমান (৩৫) এবং পলাতক জুয়েল (৩০)।

বাচ্চু মিয়া মামলায় উল্লেখ করেছেন, ‘গতকাল রাত আটটায় ‘০১৭৩৯০৮৯৪৯২’ নম্বর থেকে আমার মোবাইল নম্বরে ফোন করে বলে, চাচা আমাকে চিনতে পারছেন। আমি আজমেরী ওসমান বলছি। আমার একটা লোক আপনার কাছে যাবে। তাকে আপনি ৬৫ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে আদর্শ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার থেকে মিষ্টি খাইয়ে দিবেন’

বাচ্চু মিয়া অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, ‘কিছুক্ষণ পর মোখলেছ নামে একজন লোক আমার সঙ্গে কালিমন্দিরের সামনে দেখা করে। আমি তাকে মিষ্টি খাওয়ানোর জন্য কালিমন্দিরের পাশে আদর্শ মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে ডাকলে সে মিষ্টি খাবে না বলে, পরবর্তীতে গ্রামীণ হোটেলে নিয়ে হালিম খাওয়ানোর জন্য বললেও হালিম খাবে না বলে দোকান থেকে বের হয়ে যায়। আমি দোকান থেকে বের হলে মোখলেছ আমাকে বলে যে, আপনাকে হাজী সাহেব ডেকেছে। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে মোকলেছসহ আরও অজ্ঞাত ৭ থেকে ৮ জন আমার কোমরের বেল্ট ধরে টানতে টানতে কালিরবাজার মাংসপট্টির আফসু মহাজনের হোটেলের সামনে নিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে মাথা, কপালসহ শরীরে বিভিন্ন জায়গায় জখম করে।’
বাচ্চু আরও উল্লেখ করেন, ‘দাবিকৃত ৬৫ হাজার টাকা না পেয়ে আজমেরীর নির্দেশে সকল আসামিরা আমাকে নারায়ণগঞ্জে বসবাস করতে দিবে না বলেও ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়।’
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা ওসি আসাদুজ্জামান বলেন, ‘গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামিকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আজমেরী ওসমান ও জুয়েলকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
নিউজওয়ান২৪.কম/আরকে

আরও পড়ুন
স্বদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত