ঢাকা, ২৪ মে, ২০২৫
সর্বশেষ:

পাকিস্তান: কাওয়াল সাবরি ও আহমদিয়া চিকিৎসককে গুলি করে হত্যা

বিশ্ব সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:০২, ২২ জুন ২০১৬   আপডেট: ০০:১৬, ২৩ জুন ২০১৬

মর্গে নেওয়া হচ্ছে পাকিস্তানের ‘সাংস্কৃতিক দূত’ আমজাদ সাবরির মরদেহ

মর্গে নেওয়া হচ্ছে পাকিস্তানের ‘সাংস্কৃতিক দূত’ আমজাদ সাবরির মরদেহ

বুধবার সন্ধ্যায় পাকিস্তানের বন্দর নগরি করাচিতে এক হোমিওপ্যাথি ডাক্তারকে তার ক্লিনিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। পঞ্চাশোর্ধ ওই চিকিৎসক আহমদিয়া জামাতের সদস্য বলে জানা গেছে। নগরির আবুল হাসান ইস্পাহানি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় পুলিশের এসএসপি রাও আনওয়ার জানিয়েছেন, ডা. চৌধুরী আব্দুল খালেক নামের ওই চিকিৎসককে তার নিজের ক্লিনিকে গুলি করে হত্যা কর হয়েছে। মাথায় একটিমাত্র গুলিতে তাকে হত্যা করা হয়।

ডা. চৌধুরীর ক্লিনিকটি স্থানীয় পুলিশ থানার নিকটবর্তী এবং গত একমাসে এটা একই এলাকার দ্বিতীয় ঘটনা। ঘটনার সময়ে এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। ধারণা করা হচ্ছে এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। গত মে মাসে করাচির মেট্রোভাইল-২ এলাকায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের অপর সদস্য দাউদ আহমাদকে (৫৫) গুলি করে হত্যা করে মোটরসাইকেলে করে আসা দুই আততায়ী।

এদিকে চিকিৎসক চৌধুরীকে হত্যার আগে একইদিন একই শহরের লিয়াকতবাদের ব্যস্ত এলাকায় প্রখ্যাত কাওয়ালি গায়ক আমজাদ সাবরিকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মুখোশধারী দুই জঙ্গি তার গাড়িতে গুলি চালালে মারাত্মক আহত হন উপমহাদেশের অন্যতম শীর্ষ এই কাওয়াল (কাওয়াল গায়ক)। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তিনি।

সুফি ঘরানার গায়ক সাবরির গাড়ি একটি সেতুর ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় আক্রান্ত হয়। এসময় সঙ্গে থাকা এক তার এক আত্মীয়ও গুলিবিদ্ধ হন। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

৪৬ বছর বয়সী সাবরির শরীরে পাঁচটি গুলিবিদ্ধ হয়। বুধবার রাত দশটায় সর্বশেষ খবরে ডন.কম জানায়, হামলার দায় স্বীকার করেছে টিটিপি’র (তেহরিক-্ই তালেবান পাকিস্তান) হাকিমুল্লাহ মেহসুদ গ্রুপ।

হামলার সময়ে গাড়ির চালকের আসনে থাকা সাবরির শরীরে তিনটি গুলিবিদ্ধ (দুটি মাথায় একটি পায়ে) হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। সাবরি হত্যার ঘটনাকে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা মুকাদ্দাস হায়দার ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং সন্ত্রাসী হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন।

কী কারণে

আমজাদ সাবরি ছিলেন খ্যাতিমান পাকিস্তানি কাওয়াল হাজী গোলাম ফরিদ সাবরির ছেলে। গত বছর তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার মামলা হয়। তিনি মহানবী মুহাম্মদের (সা.) পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গান তৈরি করেছিলেন। তবে ওই ঘটনার সঙ্গ হত্যাকাণ্ডের কোনো যোগসূত্র আছে কিনা সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।

আর একইদিন আহমদিয়া চিকিৎসক হত্যার সঙ্গে সাবরি হত্যার কোনো সম্পর্ক আছে কি না তাও জানা যায়নি। দুটি হত্যাকাণ্ড একই দিনে একই শহরে এবং একই কায়দায় (গুলি করে) ঘটানো হয়।

উল্লেখ্য, কাওয়াল আমজাদ সাবরি ও আহমদিয়া চিকিৎসক হত্যার ঘটনার মাত্র দুদিন আগে মুখোশধারী জঙ্গিরা প্রাদেশিক এক শীর্ষ বিচারকের ছেলেকে অপহরণ করে। বন্দি জঙ্গিদের মুক্তির জন্য প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করেতই এই অপহরণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

করাচিতে তিনবছরেরও বেশি সময় ধরে জঙ্গি দমনে সেনা অভিযান চলছে। তবে একদার চাকচিক্যময় এবং হালের সন্ত্রাসের চারণভূমি করাচিতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড তাতে স্তিমিত হয়নি।

নিউজওয়ান২৪.কম/আরএম

আরও পড়ুন
বিশ্ব সংবাদ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত