ঢাকা, ১৯ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ:

হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালা ছিলেন এক এলিয়েন!

সাতরং ডেস্ক

প্রকাশিত: ০১:৪২, ১৮ জানুয়ারি ২০২০  

হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালা -প্রতীকী ছবি

হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালা -প্রতীকী ছবি

ছোটোবেলায় হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালার গল্প পড়েননি এমন কম মানুষই রয়েছেন। তবে কোনো এক কারণে নামটি অনেক জায়গায় ছিল হ্যামিলন, কিন্তু আসল নামটা হবে হ্যামেলিন। 

এটি কি নিছক গল্প, নাকি পেছনে রয়েছে অনেক ইতিহাস? এমন তো হতেই পারে হ্যামেলিনকে নিয়ে বলা ঘটনাগুলো অতিরঞ্জিত হলেও সত্য!

 চলুন তাহলে; এত ঘাটাঘাটি না করে জেনে নিই হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালার আসল রহস্যটা-

জার্মানির লোয়ার স্যাক্সনির হ্যামেলিন শহর, সময়টা ছিল ঠিক ১২৮৪ সাল। হ্যামেলিন শহর তখন ইদুঁরের প্রোকোপের স্বীকার। কোথা থেকে যেন হাজির হলো এক বাঁশীওয়ালা, তার গায়ে ছিল হরেক রঙের পোষাক। সে এক উপায় বাতলে দিল হ্যামেলিনের মেয়রের কাছে। মেয়র মলডিন বললেন ঠিক আছে, ইঁদুর তাড়িয়ে দাও, তার বদলে তোমাকে আমি এক হাজার স্বর্ন মুদ্রা দেব। আর সেই কথায় বাঁশিওয়ালাও রাজি হয়ে গেল। বাঁশিওয়ালা এবার ইঁদুর বাহিনীকে সায়াস্তা করতে বাঁশি বাজানো শুরু করল এবং বিশাল ইঁদুরের দল বাঁশির সুরে সব ইঁদুর গুলো এসে তলিয়ে গেল শহরের শেষে ওয়েসার নদীর জলে। কেবল একটি ইদুঁরই কিভাবে যেন বেঁচে গেল। বাঁশিওয়ালা ফিরে এল রাজার কাছে, এবং তার প্রাপ্য স্বর্ণ মুদ্রা চাইল। কিন্তু মেয়র তাকে স্বর্ণ মুদ্রা দিতে আস্বিকার করে, মাত্র পঞ্চাশটি স্বর্ণ মুদ্রা দেয়। সঙ্গে এও বলেন মেয়র বাঁশিওয়ালা তো নিজেই ইঁদুরগুলো শহরে নিয়ে এসেছিল, যাতে সেগুলোকে তাড়িয়ে টাকা রোজগার করতে পারে। এই কথায় বাঁশিওয়ালা ভীষণ রেগে মেগে চলে যায় এবং যাওয়ার আগে এও বলে যায় এর প্রতিশোধ ঠিক একদিন সে নেবে।

১২৮৪ সালে জুনের ২৬ তারিখে শহরে সেদিন ছুটি ছিল। রোমেজন ও পলের শহীদ স্বরনে জন এবং পল দিবস পালন করা হয় এই দিন। সবাই ছিল চার্চে, সময়টা সকাল সাতটা। হঠাৎ ফিরে এল বাঁশিওয়ালা। কিন্তু এবার আর রঙচঙে পোশাক নয়, এবার একরঙা সবুজ শিকারির বেশে। বাজাতে শুরু করল সে তার মায়াবি বাঁশি, আর বাঁসির সুরে বেরিয়ে এল শহরের অগনিত শিশুরা। গুনে গুনে ১৩০ জন শিশু, মেয়রের মেয়েও ছিল সেখানে। 

বাঁশিওয়ালার বাঁশির সুরে সম্মহীত হয়ে শিশুরা পাহারের ওপাশের একটি গুহায় ঢুকে গেল আর বেরিয়ে এল না। গল্পে উল্লেখ ছিল তাদেরকে নাকি টাসেলভানিয়াতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো বেঁচে গেল তিনটি শিশু। এদের মধ্যে একজন ছিল অন্ধ, সে দেখতে পায়নি বাঁশিওয়ালা কে, আর একজন ছিল বধির, সে শুনতে পায়নি বাঁশিওয়ালার সুর। আর শেষ শিশুটি যেতে পারেনি তার কারণ সে জ্যাকেট নিতে ভুলে গিয়েছিল। এই তিন শিশুর মাধ্যমেই পরে চার্চের সবাই জানতে পেরেছিল আসল গল্পটা। অনেকেই মনে করেন এটি একটি নিছক গল্প। 

কিন্তু ১৩৮৪ সাল নাগাদ ওই চার্চে একটি ফলক লগানো হয়, যেখানে এই গল্পটি লেখা আছে, মৃত শিশুদের স্বরণের উদ্দেশ্যে। এমনকি গোটা পৃথীবী যেখানে যীশুখ্রিষ্ঠের মৃত্যুর বছর অনুযায়ী দিনপঞ্জির হিসেব রাখে, সেখানে হ্যামলিন শহরের ঐতিহাসিক ঘটনার লিপিব্ধ হয় এই ঘটনার রেফারেন্সে। তাদের দিনপঞ্জির হিসেব রাখে ওই ঘটনার একশ বছর পর অর্থাৎ ১৩৮৪ সাল থেকে। আধুনিক যুগে দাঁড়িয়ে অনেক ইতিহাসবিদ বলেন, আসলে বাঁশিওয়ালা ছিল, কোপেন পাহারের ওধারে থাকা এক এলিয়েন, যে তার মহাকাশ যানে করে বাচ্চাদের নিয়ে চলে গিয়েছিল অন্য গ্রহে। কারো মত আসলে ওই সময় হ্যামলিনে মহামারি হয়েছিল, সেটা ঢাকতেই গল্প ফেঁদেছিল হ্যামেলিনবাসী।

সূত্র: দ্য এক্সপ্লোরেচার ওয়েব.কম

নিউজওয়ান২৪.কম/এমজেড