ঢাকা, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

‘স্বর্গের রয়েছে অনেক দরজা’

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:৫৩, ১৫ অক্টোবর ২০১৮  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

 

মসজিদ, মন্দির, গির্জা বা যেকোনো ধর্মীয় স্থাপনার কথা আমরা যখন চিন্তা করি, তখন আমাদের চোখে বিশেষ আকৃতির একটি স্থাপনার চিত্র ভেসে উঠে।

তবে আজকাল এই চিত্রের পরিবর্তন হচ্ছে। এই পরিবর্তনের অংশ হিসেবে মসজিদকেও একটি বিষয় হিসেবে নেওয়া হয়েছে। ‘প্যারাডাইস হ্যাজ মেনি গেটস’ (Paradise Has Many Gates তথা স্বর্গের রয়েছে অনেক দরজা) নামে এই শিল্পকর্মটিও সেই পরিবর্তনেরই একটি অংশ।

প্যারাডাইস হ্যাজ মেনি গেটস

সৌদি শিল্পী আজলান গরীম নির্মিত এই স্থাপত্যটি মূলত একটি স্ট্যান্ডার্ড আকৃতির ভাস্কর্যশিল্প। মসজিদের আকৃতিতে নির্মিত এই শিল্প নিদর্শনে সাধারণ মসজিদের মতোই দৈনিক পাঁচবার আজান দিয়ে নামাজ আদায় করা হয়। সাধারণ মসজিদের মতোই এর মেঝে মাদুর দিয়ে আবৃত হলেও এটি মোটেও সাধারণ মসজিদের মতো নয়। 

স্বচ্ছ (Transparent) এই মসজিদটি বিচিত্র ধরনের বিভিন্ন প্রকার উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। মসজিদটি তৈরিতে সাধারণ ইট-সিমেন্টের পরিবর্তে প্লেক্সিগ্লাস, অ্যালোমোনিয়াম, ইস্পাত (steel) এবং বৈদ্যুতিক বাতি ব্যবহার করা হয়েছে। নির্মাণ উপাদানের কারণে শরণার্থী ঠেকাতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের ব্যারিকেড বা গুয়ান্তানামোর মার্কিন কারাগারের সঙ্গে একে সাদৃশ্যপূর্ণ বলে মনে হয়।

প্যারাডাইস হ্যাজ মেনি গেটস

এর অভ্যন্তরে অবস্থানকারীদের মনেও এটি একপ্রকার বন্দীত্বের অনুভূতি সৃষ্টি করে। এটিই মূলত স্থাপত্যটি তৈরির মূল থিম। বেড়া শুধু মানুষকেই নয়, চিন্তাকেও যে বন্দী করে, এই ভাস্কর্য থেকে মূলত এই থিমটিই প্রকাশিত হয়েছে।

মসজিদের স্বচ্ছ দেওয়াল বহির্জগত ও অর্ন্তজগতের মধ্যকার বাধাকে গুড়িয়ে দেওয়ার সম্ভাব্যতাকে ফুটিয়ে তুলেছে। যেসকল লোক মসজিদের অভ্যন্তর সম্পর্কে অজ্ঞাত এবং কখনোই মসজিদে প্রবেশ না করার কারণে মসজিদের অভ্যন্তরীণ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে যাদের অজানা, তারা এর মাধ্যমে মসজিদের অভ্যন্তরীণ কর্মকাণ্ড ও আধ্যত্মিকতা সম্পর্কে জানতে পারবে।

প্যারাডাইস হ্যাজ মেনি গেটস

যদিও সউদি আরবে প্রথম স্থাপনের পর এটি তীব্র সমালোচনার শিকার হয়েছিল, তথাপি এটি পশ্চিমা বিশ্বে বিপুলভাবে সামদৃত হয়েছে। বর্তমানে এটি কানাডার ভাঙ্কুভারে ভাঙ্কুভার ভেনিয়ার পার্কে স্থাপিত হয়েছে, যেখানে এটি আগামী দুই বছর অবস্থান করবে। আজলান আশা করেন, তার শিল্পকর্মটি শুধুই প্রদর্শনের বস্তু হবেনা বরং এটি চিন্তার আদান-প্রদান, পারস্পরিক সংলাপ এবং আলোচনার কেন্দ্র হিসেবে পরিগণিত হবে।

প্যারাডাইস হ্যাজ মেনি গেটস

পেশাগত জীবনে স্কুলশিক্ষক এ শিল্পীর এটিই প্রথম শিল্পকর্ম নয়। এর পূর্বে ‘মাউন্ট অব মারসি’ (Mount Of Mercy) দীর্ঘ ছয় বছরের পরিশ্রম করে তিনি আরাফাতের পাহাড়ে আগমনকারী হাজিদের ১০ হাজারের বেশি আলোকচিত্র সংগ্রহ করেন।

নিউজওয়ান২৪/আরএডব্লিউ